শুক্রবার, ০৫ আগস্ট ২০১৬

সরকারের জুলুম নির্যাতনে মানুষ অতিষ্ট হয়ে উঠেছে

ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান বলেছেন, সরকার ৫ জানুয়ারি তামাশার নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে জাতির ঘাড়ে জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসেছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদ লালনের কারণে দেশবাসী অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। পুলিশ প্রকৃত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার না করে রাজধানীসহ সারাদেশে সাধারণ ছাত্রদের গ্রেফতার করছে। ছাত্রাবাসগুলোতে হানা দিয়ে তাদের শিক্ষা জীবন বিপন্ন করে তুলছে। সরকার শুধু বিরোধী মতের মানুষই নয়, সাধারন মানুষকে গ্রেফতার হয়রানীর মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীল পরিরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। মূলত, অবৈধ সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরণে দেশের মানুষ আজ জিম্মি হয়ে পড়েছে।

তিনি আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবিরের কার্যকরি পরিষদের দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সেক্রেটারী জেনারেল ইয়াছিন আরাফাতের পরিচালনায় অধিবেশনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল ইসলাম বুলবুল, সেলিম উদ্দিন ও আবদুল জব্বার। এসময় কার্যকরী পরিষদের সকল সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ আজ জাতীয় দুর্যোগের রূপ ধারণ করেছে। দেশের কোন নাগরিক এখন স্বস্তিতে নেই। সেখানে প্রধানমন্ত্রী ও সরকারী দল গোটা জাতির ঐক্যের দাবি এবং প্রত্যাশাকে উপেক্ষা করে কার্যতঃ জাতিকে ভয়াবহ অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। জঙ্গি দমনের নামে নাটকীয়তা সৃষ্টি করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে অব্যাহতভাবে হত্যা করা হচ্ছে। অনেকেই গুম হয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেকের ওপর সীমাহীন অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে বিভিন্ন ঘটনার দায় স্বীকার করার জন্য মিথ্যা জবানবন্দী আদায় করা হচ্ছে। এ সমস্ত কার্যক্রম প্রকারান্তরে জঙ্গি এবং সন্ত্রাসীদেরকেই আড়াল করার শামিল। সরকার জনগণের স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের অধিকারও কেড়ে নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন ছাত্রাবাস ও মেসে প্রতি রাতেই চলছে পুলিশের বিশেষ অভিযানের নামে সাধারন ছাত্রদের হয়রানী। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বুটের শব্দে ঘুম ভাঙছে ছাত্রাবাস ও মেসের বাসিন্দাদের। গভীর রাতের এ অভিযানে সকলের মনে ছড়িয়ে পড়েছে এক ধরনের আতঙ্ক। কোনো কোনো এলাকায় পুলিশের পক্ষ থেকেও মেস উঠিয়ে দেয়ার জন্য মালিকদের হুমকি দিচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন রাজধানীর বিভিন্ন মেসে বসবাসরত প্রায় ১০ লাখ বাসিন্দা। সাধারন শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন বিপন্ন করে তুলছে।

তিনি বলেন, সরকার শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের নামে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধর্মহীন করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। মাদরাসা শিক্ষা থেকে কুরআন হাদীস পাঠ সীমিত করে দেয়া হচ্ছে। সন্ত্রাস জঙ্গীবাদের জন্য ঢালাও ভাবে দায়ী করা হচ্ছে। তিনি বলেন, নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। তাহলেই সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের অভিশাপ থেকে জাতি মুক্তি পাবে।
তিনি বন্যার্তদের প্রসঙ্গে বলেন, উজানে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে প্রধান কয়েকটি নদীতে অব্যাহতভাবে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারন করেছে। বন্যাদুর্গত মানুষ খাদ্য, আশ্রয়, চিকিৎসা ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে হাহাকার করছে। সরকারী সাহায্য নেই। তিনি বলেন, বন্যাদুর্গত লোকদের জন্য জরুরী ভিত্তিতে খাদ্য, বস্ত্র, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ ও অসুস্থদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানো প্রয়োজন। প্রতিটি নেতাকর্মীকে যার যার অবস্থান থেকে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে।

সংশ্লিষ্ট