শনিবার, ২২ অক্টোবর ২০১৬

ইসলামের সঠিক শিক্ষাই জঙ্গিবাদকে দমন করতে পারে

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান বলেন, জঙ্গিবাদ দমনের নামে একটি মহল ঘৃণ্য রাজনৈতিক খেলায় মেতে উঠেছে। এটা কুটকৌশল ছাড়া কিছু নয়। মূলত ইসলামের সঠিক শিক্ষাই জঙ্গিবাদকে দমন করতে পারে।

তিনি আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে সারাদেশে সদস্যদের ৪ দিনব্যাপি অনলাইনে মেধা যাচাই পরীক্ষার উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় দাওয়া কার্যক্রম সম্পাদক আনিসুর রহমান বিশ্বাসের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেক্রেটারি জেনারেল ইয়াছিন আরাফাত। নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মোবারক হোসেন, কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম, মানবাধিকার সম্পাদক শাহ মোঃ মাহফুজুল হক সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

শিবির সভাপতি বলেন, ছাত্রশিবিরের এ আয়োজন ছাত্র রাজনীতির জন্য একটি বড় বার্তা। একটি ছাত্র সংগঠন তথ্য প্রযুক্তিকে নিজ ও জাতির কল্যাণে কিভাবে ব্যবহার করতে পারে তার একটি উদাহরণ হচ্ছে আজকের এই আয়োজন। সরকার অনৈতিকভাবে বাধা না দিলে ছাত্রশিবির আরো বড় পরিসরে এ প্রোগ্রাম করে নবীনদের উদ্বুদ্ব করতে পারত। কিন্তু সরকারের নীতিহীন বাধার কারণে ছাত্রশিবির সেই সুযোগ পাচ্ছেনা। তবে ছাত্রশিবির বসে নেই। সীমিত সুযোগকে সর্বোচ্চ কাজে লাগিয়ে বিশ্ব দরবারে ছাত্রশিবিরের গঠনমূলক কার্যক্রম তুলে ধরছে। দেশের ছাত্র রাজনীতি যখন অস্ত্র ও সন্ত্রাস নির্ভর এবং লেজুড়বৃত্তিক হয়ে পড়েছে সেখানে ছাত্রশিবির একটি ব্যতিক্রম ধারার রাজনীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে।

ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ছাত্ররাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। যদিও এ পথে বাধার প্রাচীর সৃষ্টি করা হয়েছে তবুও সকল প্রতিকুলতা পেরিয়ে ছাত্রশিবির আজ দেশে একটি শক্তিতে পরিণত হয়েছে যা বাদ দিয়ে বাংলাদেশের উন্নতি অগ্রগতি চিন্তা করা যায়না। ছাত্রশিবির জ্ঞান, মেধা, পরিশ্রম ও ঈমানী দৃঢ়তা দিয়ে এ অবস্থান সৃষ্টি করেছে। আমরা বিশ্বাস করি যারা আমাদের সাথে বৈরী আচরণ করছেন, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন, আজকের এই আয়োজন তাদেরকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে, কোন ইসলাম বিরোধী শক্তির চক্রান্ত আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবেনা ইনশাল্লাহ। আমরা জানি এ আদর্শিক পথ মসৃন নয়, তবুও এই প্রতিকুলতা মোকাবেলা করেই ছাত্রসমাজকে সাথে নিয়ে ছাত্রশিবির তার কাঙ্খিত মঞ্জিলের দিকে এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, আজ সমৃদ্ধ বাংলাদেশের বুলি আওড়ানো হচ্ছে। কিন্তু কারা হবে এই সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার কারিগর তা কেউ বলছে না। যদি আগামী প্রজন্মকে নৈতিকতা সম্পন্ন করে গড়ে তুলা না যায় তাহলে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া কথার ফুলঝুড়িতেই আটকে থাকবে। ছাত্রশিবির সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার ভিশন নিয়ে এগিয়ে চলেছে। আমরা আংশিক পরিবর্তনের বিশ্বাস করিনা, বরং সমৃদ্ধ জাতি ও বাংলা গঠনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ পরিবর্তন করতে চাই।

তিনি আরও বলেন, যারা আজকে ছাত্রশিবিরের সাথে জঙ্গিবাদের সম্পর্ক জুড়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন আজকের এই আয়োজনের তাদের জন্য উত্তর রয়েছে। যদি ছাত্রশিবির জঙ্গিবাদে বিশ্বাস করত তাহলে এই প্রতিকুল পরিস্থিতিতে ছাত্রশিবির গঠনমূলক কর্মসূচির আয়োজন করতো না। সুতরাং যারা গঠনমূলক পথ চলায় বিশ্বাসী তারা কখনো বক্র পথে যেতে পারেনা। আমরা অবশ্যই পরিবর্তন চাই, তবে তা অবশ্যই নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় এবং মেধা, যোগ্যতা, ঈমানী দৃঢ়তা দিয়ে ছাত্রজনতার আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন এবং তাদের সেই ভাবে গঠনের মাধ্যমে হবে। কোন জঙ্গি বা উগ্র পন্থা দিয়ে নয়।

তিনি সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, লক্ষ্যে পৌছাতে আমাদের আমাদের জ্ঞান চর্চা বৃদ্ধি করতে হবে, কুরআন চর্চা করতে হবে। নিজেদের কাঙ্খিত নাগরীক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। কোন স্লোগান দিয়ে সমাজ পরিবর্তন সম্ভব নয়। শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য যোগ্যতা সম্পন্ন নেতৃত্ব তৈরী করতে হবে। জনশক্তি ও ছাত্রসমাজকে জ্ঞান ও নৈতিকতার ভিত্তিতে গঠন করার প্রচেষ্টা বৃদ্ধি করতে হবে।

উল্লেখ্য, ছাত্রশিবির প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও সারাদেশে সদস্যদের মেধা যাচাই পরীক্ষার আয়োজন করেছে। অনলাইনে ২০ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশের সদস্যরা একযোগে পরিক্ষায় অংশগ্রহন করবেন।

সংশ্লিষ্ট