মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৬

বিজাতীয় সংস্কৃতির সয়লাব রুখতে মননশীল প্রকাশনার বিকল্প নেই

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান বলেছেন, দেশে সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এর অন্যতম কারণ অপসংস্কৃতির আগ্রাসন, অশালীন ও কুরুচীপূর্ণ প্রকাশনার প্রসার। বিজাতীয় অপসংস্কৃতির সয়লাব রুখতে মননশীল প্রকাশনার বিকল্প নেই।

তিনি আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির প্রকাশিত ২০১৭ সালের নতুন প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক নুরুল আমীনের সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল ইয়াছিন আরাফাত। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মোবারক হোসেন, অর্থ সম্পাদক রাকিব মাহমুদ, সাহিত্য সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম, মানবাধিকার সম্পাদক শাহ মুহাম্মদ মাহফুজুল হক ও দাওয়াহ কার্যক্রম সম্পাদক আনিছুর রহমান বিশ্বাস প্রমুখ।

শিবির সভাপতি বলেন, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অপসংস্কৃতির প্রসার ঘটিয়ে দেশীয় ও ইসলামী মূল্যবোধের সংস্কৃতি ধ্বংসের সুগভীর ষড়যন্ত্র চলছে। অপসংস্কৃতির প্রভাবে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি বিলীন হতে চলেছে। এভাবে চলতে থাকলে অল্প সময়ের ব্যবধানে জাতি তার সাংস্কৃতিক স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলবে। আগামী প্রজন্ম গড়ে উঠবে বিজাতীয় সংস্কৃতির মধ্যে। ইতিমধ্যেই দেশের তরুণ প্রজন্ম সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের শিকার। যার প্রতিফলন ঘটছে সমাজে নানা ধরণের লজ্জাজনক ঘটনার মাধ্যমে। এ আগ্রাসন দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি স্বরপ। সব কিছু জেনেও সরকার যখন এ বিষয়ে অস্বাভাবিক নিরবতা পালন করছে তখন জাতিকে ধরে নিতে হবে যে, স্বয়ং সরকার এবং আন্তর্জাতিক অশুভ চক্র মিলে আগামী প্রজন্মকে নৈতিক ভাবে ধ্বংস করে দেয়ার নীল নকশা বাস্তবায়ন করে চলেছে। কিন্তু, জাতিসত্তা বিলিনের এই চক্রান্ত দেশপ্রেমিক ছাত্রজনতা মেনে নিতে পারেনা।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রশিবির তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মেধা ও মননশীলতা দিয়ে জাতি গঠনের কাজ করে যাচ্ছে। যদিও এ পথে বাধার প্রাচীর সৃষ্টি করা হয়েছে তবুও সকল প্রতিকুলতা পেরিয়ে ছাত্রশিবির তার লক্ষ্যপানে এগিয়ে চলছে। ছাত্রশিবির জ্ঞান, মেধা, পরিশ্রম ও ঈমানী দৃঢ়তা দিয়ে দেশের জনগনের মাঝে এক আস্থার বন্ধন সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। ইতিমধ্যে ছাত্রশিবির দেশে ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে একটি গুণগত পরিবর্তনের সূচনা করতে সক্ষম হয়েছে। দেশের ছাত্রসমাজের সামনে তুলে ধরেছে আদর্শহীনতার বিপরীতে ইসলামের সুমহান আদর্শকে। আমরা বিশ্বাস করি যারা আমাদের সাথে বৈরী আচরণ করছেন, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন, আজকের এই আয়োজন তাদেরকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে, কোন ইসলাম বিরোধী শক্তির চক্রান্ত আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবেনা ইনশাল্লাহ। আমরা জানি এ আদর্শিক পথ মসৃন নয়, তবুও এই প্রতিকুলতা মোকাবেলা করেই ছাত্রসমাজকে সাথে নিয়ে ছাত্রশিবির তার কাঙ্ক্ষিত মঞ্জিলের দিকে এগিয়ে যাবে।

তিনি ছাত্রশিবিরের প্রকাশনা বিভাগকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, জাতির স্বকীয়তা অক্ষুন্ন রাখতে দেশীয় ও ইসলামী মূল্যবোধের সংস্কৃতির চর্চা, প্রচার ও প্রকাশে ছাত্রশিবির দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে সংস্কৃতির প্রসারে ছাত্রশিবির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ছাত্রশিবির সাধ্য অনুযায়ী তথ্য, মননশীলতা, দেশী ও ইসলামী মূলবোধকে তুলে ধরে প্রতিবছরই আকর্ষনীয় প্রকাশনা জাতিকে উপহার দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। ২০১৭ সালের এই প্রকাশনা এক দিকে যেমন দেশী ও ইসলামী মূল্যবোধের সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে সহায়তা করবে তেমনি এর তথ্য ভান্ডার ছাত্রসমাজের জ্ঞানের পরিধিকে আরো সমৃদ্ধ করবে।

উল্লেখ্য, প্রতিবছরই নতুন বছরে জন্য আকর্ষনীয় প্রকাশনার আয়োজন করে ছাত্রশিবির। প্রকাশনার মধ্যে রয়েছে এক পাতা ও তিন পাতার ক্যালেন্ডার, টেবিল ক্যালেন্ডার, ছোট ও বড় ডায়েরী, ইসলাম ও সচেতনতামূলক বানী সম্বলিত ষ্টিকার ইত্যাদি।

সংশ্লিষ্ট