বৃহস্পতিবার, ০৬ এপ্রিল ২০১৭

মুহাম্মদ আবদুল জব্বার

অবরুদ্ধ বাংলাদেশ : মুক্তির জন্য প্রয়োজন সম্মিলিত প্রয়াস

মহাজোট সরকার ডিজিটাল কায়দায় ক্ষমতায় আসার পর ডিজিটাল স্টাইলে দেশ পরিচালনা করে দেশকে অকার্যকর ও তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। স্বৈরাচারী কায়দায় সকল প্রতিষ্ঠানকে দলীয় কার্যালয়ে পরিণিত করেছে। বিরোধী দল ও মতের অনুসারীদের ওপর জুলুম নির্যাতনের মাত্রাতিরিক্ততা অ্যাইয়ামে জাহেলিয়াতকেও হার মানিয়েছে। সকল সফলতা সরকারের আর সকল ব্যর্থতার জন্য বিগত সরকার ও বিরোধী দলের ওপর চাপিয়ে দেয়ার হীন মানসিকতা আওয়ামী মহাজোটের রীতিমত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্রনীতির ব্যর্থতা দেশ-বিদেশে জাতিকে পরিণত করেছে নীচ জাতিতে। স্বাধীনতার চেতনার কথা সমস্বরে উচ্চারণ করলেও স্বাধীনতা খর্বের সকল কর্মকান্ডই দেদার পরিচালনা করে চলছেন কর্তাব্যক্তিরা। দেশের উন্নতি ও অগ্রগতির মানদন্ডের সকল সেক্টর স্থবির। সবাই যে যার আখের গোছাতে অস্থির ব্যস্ত।

১৯৭১ সালে এ দেশ পাকিস্তানের কাছে অবরুদ্ধ ছিল। স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের পর বাকশালের যাঁতাকলে, ১৯৯১ সাল পর্যন্ত স্বৈরশাসনের কবলে আর ১/১১তে তত্ত্বাবধায়কের নামে পুনরায় স্বৈরশাসনের আবির্ভাব। দেশের সচেতন জনগণ তাদের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করে এ সকল অপশক্তির হাত থেকে নিজেদের মুক্তি নিশ্চিত করে। ২০০৮ সালে ৯০ দিনের মধ্যে জন প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা থাকলেও এক অশুভ শক্তির ইশারায় দেশ হাঁটা শুরু করেছিল অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে। রাষ্ট্রপতি আওয়ামী লীগের লগি-বৈঠার কাছে জরুরি অবস্থা ঘোষণা দিতে বাধ্য হন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নির্বাচন দেয়ার কথা থাকলেও তা না করে ফখরুদ্দীন ও মইন উদ্দিনের সরকার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের বিচার শুরু করে। একে একে সবাইকে কারান্তরীণ করা হয়। মইন উদ্দিন ও ফখরুদ্দীন ক্লোজ ডোরে তাদের অপকর্ম থেকে রেহাই পাওয়ার নয়া কৌশল খুঁজতে শুরু করেন। আওয়ামী লীগ উপরে উপরে ফখরুদ্দীন ও মইন উদ্দিনের বিচারের প্রবক্তা হলেও ক্ষমতার জন্য কম্প্রমাইজ করেছেন ভালভাবে। যার কারণে অনেক অজনপ্রিয় নেতাও জননন্দিত নেতা হিসেবে মহীরুহে আত্মপ্রকাশ ঘটিয়েছেন।

দেশের মানুষ অগণতান্ত্রিক সরকারের যাঁতাকলে পদপৃষ্ঠ হয়ে যখন দিশেহারা ঠিক তখন একটি গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে দেশ নিরাপদ মনে করেছিল দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষ। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বুকভরা প্রত্যাশা নিয়ে দেশের মানুষ অপেক্ষায় ছিলেন এবার সম্ভবত দেশ গড়ার পালা, অধিকার নিশ্চিত হওয়ার পালা। কিন্তু সব যে গুড়েবালি! গণতন্ত্রের লেবাস ধারণ করে আওয়ামী সরকার সকল স্বপ্নসাধ ধূলিসাৎ করে দেশকে এখন ফেইলস্টেটে পরিণত করেছে। অস্থিরতা ও অরাজকতায় দেশ বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। সম্ভ্রমরক্ষা ও নিরাপত্তার অভাবে কাতরাছে সকল বনি আদম। আওয়ামী সরকারের গত চার বছর ছিল দেশের জনগণের জন্য দুঃসহ যাতনার, যার খণ্ড চিত্র কারো অজানা নয় ।

ব্যক্তিকলহে হত্যা, রাজনৈতিক হত্যা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে খুন-গুম আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে। দেশের মানুষ এমন পরিস্থিতির জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না। চরম উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিনাতিপাত করছে দেশের জনগণ। মনের মণিকোঠায় প্রশ্ন রয়েই গেল সারা দুনিয়া মানবতাবোধ, শান্তি নিরাপত্তা বন্ধনে অটুট হচ্ছে আর আমরা কেন উল্টো পথে হাঁটছি? সেন্টার ফর মিডিয়া অ্যান্ড ট্রেনিং (এমআরটির) জরিপ মতে ৪ বছরে খুন হয়েছে ১৬ হাজার ৫৮৯ জন, রাজনৈতিক হত্যাকা- ৭৯০ জন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে ৪৪৯ জন ও গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন ৫৮৮ জন। বর্তমান সরকারের ৪ বছরের খুনের দৈনিক গড় ১১ জনেরও বেশি। দলীয় পদ, ক্ষমতার ভাগবাটোয়ারা করতে গিয়ে ক্ষমতাসীনদের অন্তঃকোন্দল সংঘর্ষ বেধেছে জায়গায় জায়গায়। শুধু আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর অন্তঃকোন্দলে নিহত হয়েছেন ১৫৩ জন। এ সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে রাজনৈতিক বিরোধী শিবিরকে দমনের জন্য অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠে সবচেয়ে বেশি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে সরকারের চার বছরে মৃত্যু হয়েছে ৪৫৯ অর্থাৎ প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ১০ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই কথিত ক্রসফায়ার বা এনকাউন্টারে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। এ ছাড়া শেয়ারবাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ও অনিবন্ধিত শিক্ষকদের যৌক্তিক আন্দোলনে বাধা, টিয়ারগ্যাস, জলকামান, রাবার বুলেট ও মরিচগুঁড়া বা পিপার স্প্রে দিয়ে দমানোর ন্যক্কারজনক প্রচেষ্টা ছিল নজিরবিহীন। ইতোমধ্যে পুলিশের পিপার স্প্রে-তে দু’জন শিক্ষক মারা গেছেন। বিরোধী দল দমনে সর্বশেষ পুলিশের গুলিতে নিহত হয় শিবিরকর্মী মুজাহিদ। ২০১২ সালের শেষের দিকে থেকে বিরোধী দলকে দমানোর জন্য ও সভা-সমাবেশ বানচালের জন্য সাউন্ড গ্রেনেড ও গ্যাস গ্রেনেড ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ করা গেছে, যা পরিবেশ ও জনস্ব্যাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলে পত্রিকায় বিশেষজ্ঞমহল উদ্বেগ প্রকাশ করলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পুলিশ তা মানতে নারাজ।

রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি এ সরকারের আমলে গুমের ঘটনা ছিল উল্লেখ করার মতো। কারো লাশ পাওয়া গেছে আর কারো লাশ মেলেনি। বিএনপি নেতা চৌধুরী আলম, এম ইলিয়াস আলী, শিবিরনেতা মোকাদ্দেস ও ওয়ালিউল্লাহকে গুম করার ঘটনায় মানবাধিকার সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করে। নাম না জানা অনেক গুম ব্যক্তির প্রিয়জন, সন্তান, মা-বাবা আর কতদিন অপেক্ষা করবেন? তাদের অপেক্ষার পালা শেষ হবে কি?

মামলা-মোকদ্দমা আর রিমান্ডে নির্যাতন ছিল এ সরকারের আমলে মামুলি বিষয়। সরকারের মতের বিপরীত বক্তব্য বা সমালোচনা করলেই মামলা আর গ্রেফতার। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী বিএনপি মহাসচিবের বিরুদ্ধে মামলা করেন সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগে! জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা: শফিকুর রহমানকে ককটেল সরঞ্জামাদি পাওয়ার মামলা দেওয়া হয়। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এহছানুল হক মিলনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয় মোবাইল ও ভেনিটিবেগ ছিনতাই মামলায়। যে দেশে প্রধান বিরোধী দলের মহাসচিব মাসের পর মাস জেলে থাকে, যে দেশে আইনের তোয়াক্কা না করে একটি প্রধান ধর্মীয় দলের শীর্ষ নেতাদেরকে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার জন্য বিচারের নামে অবিচার করা হয় সেখানে গণতন্ত্র আর আইনের শাসন বলতে কি থাকতে পারে? স্কাইপ সংলাপে বিচারের নামে অবিচারের সব তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা ন্যায়বিচারের স্বার্থে পুনরায় বিচার শুরুর জন্য আবেদন জানান। সরকারের পক্ষে প্রসিকিউটর ও আইনমন্ত্রী জানান, ফৌজদারি বিচারের ক্ষেত্রে যেখানে শেষ সেখান থেকে শুরু। ওনাদের যুক্তি হলো বিচার বিচারক পরিবর্তন ও বিচারক মারা গেলে যা হয় এখানেও তাই। আইনবিদরা মনে করেন যে এটি মারা যাওয়া বা বিচারক পরিবর্তন হওয়ার মতো কোন স্বাভাবিক বিষয় নয়, যেহেতু এর বিচারকার্য এগিয়েছে সম্পূর্ণ সংবিধান পরিপন্থীভাবে, যেখানে জজ সাহেব নাগরিকের অধিকার খর্ব করেছেন। আদালতের প্রবেশদ্বার থেকে সাক্ষী অপহরণের ঘটনার পর আদালতের কাছে আর কী আসা করা যেতে পারে।

হাজার হাজার মামলায় জর্জরিত বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকার ভাষ্যমতে কারাগার এখন অপরাধীদের বন্ধিশালা নয় বরং বিরোধী দলের নেতাকর্মী দমনশালায় পরিণত হয়েছে। দেশের ৬৮টি কারাগারে দিনদিন বন্দীসংখ্যা বাড়ছে। সারা দেশের কারাগারগুলোতে বন্দী ধারণক্ষমতা ২৯ হাজার ৪০০ জন হলেও কারাগারে বর্তমানে বন্দীসংখ্যা এর দ্বিগুণেরও বেশি। স্বররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে পত্রিকায় প্রকাশ-প্রয়োজনে কারাগার বাড়ানো হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে বন্দী শীর্ষে জামায়াত, এরপর বিএনপি। এদিকে সরকারের নির্যাতনের গণ্ডি বিরোধী দলের পুরুষদের ওপর সীমাবদ্ধ থাকেনি; নারীকর্মীদের ওপরও নির্লিপ্ত খড়গ হস্তক্ষেপ শুরু করেছে। মাত্র কয়েক দিন আগে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রীসংস্থার কিছু কর্মীকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই একটি বাসা থেকে আটক করা হয়েছে। এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকেও তারা রেহায় দেয়নি। দফায় দফায় জামিন আবেদন নাকচ করে দেন বিচারক মহোদয়রা। এমনকি আদালতে হাজির করার সময় এ সকল মহিলার জোর করে হিজাব খুলে নেয়া হয়! একটি মুসলিম দেশে সরকারের এ কেমন অমুসলিমসুলভ আচরণ? অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন কারণে-অকারণে বিরোধী দলের ও মতের বিরুদ্ধে মামলা-মোকাদ্দমা, জেল-জুলুম ও রিমান্ডের দৃষ্টান্ত আগামীতে যেকোনো ক্ষমতাসীন দল অপব্যবহারের জন্য সুযোগ করে নিতে পারে।

সরকার ক্ষমতা গ্রহণের ১০ মাস পরই ৬৩ জন সচিবের মধ্যে ১১ জনকেই ওএসডি করে। প্রশাসনের শীর্ষ পদে থাকা ১১ সচিবসহ প্রশাসন ক্যাডারের ৪০০ কর্মকর্তা দীর্ঘ দিন ওসডি হয়েছিলেন। বিভিন্ন পর্যায়ে পদোন্নতি পেয়েছেন ৬৮১ জন। সমসংখ্যক কর্মকর্তার যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতি বঞ্চিত হয়েছেন। এতে বেশ কিছুদিন প্রশাসনে স্থবিরতা বিরাজ করে। সর্বশেষ ৭ সেপ্টেম্বর একদিনে সরকারের ৫০৩ কর্মকর্তা ৩ স্তরে পদোন্নতি পেয়েছেন। সরকারের প্রশাসনযন্ত্রের প্রতিটি স্তরে যোগ্যতা দক্ষতার পরিবর্তে দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে শ’য়ে শ’য়ে দলীয় শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে মেধাশূন্য করে দেয়া হচ্ছে।

কমিউনিটি হেলথ সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে যে সাড়ে ১৩ হাজার নিয়োগ দেয়া হবে; তারা সবাই হবেন আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত কর্মী। নিয়োগের ক্ষেত্রে একমাত্র যোগ্যতা হবে দলীয় পরিচয় অর্থাৎ আওয়ামী লীগ কর্মী কি না? গোপালগঞ্জে হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে এ্যানথ্রাক্স নিয়ে বিশেষ আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা মোদাচ্ছের আলী এই নিয়োগমালা ঘোষণা করেছেন। এই বিধি প্রয়োগ করা হলে, কমিউনিটি হেলথ সার্ভিসের পুরো ব্যবস্থা রাজনৈতিক এ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়ে অকার্যকর হয়ে পড়তে পারে।

২০০৯ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নব-আঙ্গিকে দানবরূপে আবির্ভূত হয়। গত চার বছরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের হাতে নিহত ছাত্রের সংখ্যা ৩৬ জন। এছাড়া ৯ ডিসেম্বর ২০১২ সালে ১৮ দলের ডাকে হরতাল চলাকালে ছাত্রশিবিরের কর্মী সন্দেহে নির্মমভাবে চাপাতির আঘাতে নিহত হয়েছেন টেইলরকর্মী বিশ্বজিৎ। সকল মিডিয়াগুলোতে ছাত্রলীগের একের পর এক অপকর্মের সচিত্র প্রতিবেদন প্রচার হতে থাকলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের অভিভাবকত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। তবে এর পরও কী প্রতিকার হলো। কী বীভৎসতা! চার বছরের সময় কালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রলীগ নিজেদের ও প্রতিপক্ষের সাথে সংঘর্ষ হয়েছে কমপক্ষে পাঁচশতবার। এর মধ্যে ছাত্রশিবিরের ৬ জন, ছাত্রদলের ১ জন, ছাত্রমৈত্রীর ১ জন নেতাকর্মী এবং অরাজনৈতিক তিনজন ছাত্র হত্যাসহ নিজদের অন্তঃকোন্দলে নিহত হয় অন্তত ৩৬ জন। দেশের সচেতন মহলের প্রশ্ন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফারুক হত্যাকা-ের পর সারা দেশে শিবিরের নির্দোষ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কথিত চিরুনি অভিযানে শত শত ছাত্র গ্রেফতার করা হয়েছে। অথচ ৩৬ ছাত্রের খুনিরা প্রকাশ্যে দিবালোকে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাহলে সরকারদলীয় খুনিরা কি আইনের ঊর্ধ্বে? মাত্র কয়েক দিন আগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভিসি পদত্যাগের আন্দোলন শুরু করলে ছাত্রলীগ আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর এসিড নিক্ষেপ করে। এতে দু’জন শিক্ষকসহ বেশ ক’জন ছাত্রছাত্রী মারাত্মকভাবে এসিডদ্বগ্ধ হন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিাষ্ঠানে শিক্ষকরা ছাত্রলীগ কর্তৃক আক্রান্ত হয়েছেন। ১৭ জানুয়ারি ২০১৩ ইবিতে ছাত্রলীগ-ছাত্রদল সংঘর্ষের সময় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সজিব পুলিশের হাত থেকে অস্ত্র কেড়ে নিয়ে হামলা করে যা সকল মিডিয়াতে প্রকাশিত হয়েছে। সরকারের নীতিনির্ধারকেরা বলছেন, ভর্তিবাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলদারিত্বসহ নানা অপকর্মের কারণে মহাজোট সরকারের সব অর্জন ম্লান হতে চলছে; ছাত্রলীগের আগ্রাসী কর্মকা-ে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও অসহায়।

সাংবাদিকেরা জাতির বিবেক। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশ ও দশের তরে বাস্তব ও সত্য প্রকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। সত্য প্রকাশের এ অনন্য পেশা পালন করতে গিয়ে জীবন, পঙ্গুত্বসহ অমানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন অনেকে। সেন্টার ফর মিডিয়া রিসার্চ অ্যান্ড প্লানিং (এমআরপি) এ সংস্থার মতে গত ৪ বছরে ১৭ সাংবাদিক খুন হয়েছেন। এ সময় আক্রমণের শিকার হয়েছেন ৮৯৯ জন। এর মধ্যে ৫৮৬ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। ২২২ জন লাঞ্ছিত ও ২৬৯ জন হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ সময় পেশগত দায়িত্ব পালনকালে ৬২ জন সাংবাদিকের ওপর হামলা ও ৮ জনকে গ্রেফতার, ৩ জনকে অপহরণ ও ৬৫ জন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১২ রাজধানীতে নিজের বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তাসম্পাদক সাগর সরোয়ার ও তার স্ত্রী এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহরুন রুনি। এ সময়ে বেসরকারি চ্যানেল এটিএন বাংলার “সময়ের ভাবনা” টকশো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ আলোচিত নির্মম হত্যাকা-ের প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সাংবাদিক সমাজ দীর্ঘদিন আন্দোলন করে এলেও সরকার বাহাদুর প্রকৃত খুনিদের খুঁজে বের করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সময়ের নির্ভীক সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান আলোচিত যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম ও বেলজিয়াম প্রবাসী জিয়াউদ্দীনের স্কাইপ কথোপকথন ‘দৈনিক আমার দেশ’ পত্রিকায় ছাপালে সরকারের রোষানলে পড়ে দীর্ঘদিন পত্রিকা কার্যালয়ে অবরুদ্ধ ছিলেন। আমার দেশ পত্রিকায় স্কাইপ রিপোর্ট প্রকাশ করায় ওয়ালী উল্লাহ নোমান প্রাণ ভয়ে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। কিছুদিন আগেও বেসরকারি টেলিভিশনগুলোতে পরিচালিত টকশো বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। সাংবাদিক ও সুশীলসমাজের আশঙ্কা ১৯৭৫ সালের মতো সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করার পথে যাত্রা শুরু করেনিতো?

সীমান্ত এখম যেন মৃত্যুপুরী। ভারত বন্ধুত্বের প্রশ্নে কোনভাবেই উত্তীর্ণ নয়। অথচ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনে করে ভারতই বাংলাদেশের অন্যতম একমাত্র বন্ধু। বিএসএফ গত চার বছরে নির্বিচারে হত্যা করেছে ২৫০ জন বাংলাদেশীকে। সীমান্তে ২০১৩ সালে ১ জানুয়ারি ২ বাংলাদেশীকে খুনের মধ্য দিয়ে নতুন বছরে খুনের নেশায় মত্ত হয় বন্ধুরূপী শত্রুরা। সীমান্তবর্তী বাংলাদেশীরা জানেন না তাদের মৃত্যুর মিছিল হবে আরো কত দীর্ঘতর। নাম না জানা আরো কত ফেলানীকে ঝুলতে হবে, এ প্রশ্ন রয়েই গেল। লোক দেখানো সীমান্ত পতাকা বৈঠক আর ভারতের দুঃখ প্রকাশ বন্ধুত্বের ছলে আগ্রাসন ছাড়া কী হতে পারে? এ সকল হত্যাকা-ের তীব্র প্রতিবাদ ও প্রতিকারের পরিবর্তে দেশের বিদেশমন্ত্রীর সীমান্তবর্তী জনগণকে সতর্ক থাকার উপদেশ নতজানু পররাষ্ট্রনীতির বহিঃপ্রকাশ বৈ কি বলা চলে?

শেখ হাসিনার মহাজোট সরকার দুর্নীতির বিরদ্ধে জিহাদ ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলেও শেষ পর্যন্ত দুর্নীতির ভয়াল জ্বরে অবস্থা ত্রাহী ত্রাহী। পদ্মা সেতু, ডেসটিনি, হলমার্ক গ্রুপের অর্থকেলেঙ্কারি ও শেয়ারবাজারের অর্থ লুণ্ঠন দেশের অগ্রগতির চাকাকে সাময়িকভাবে স্থবির করে দিয়েছে। যেখানে স্বয়ং সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী-আমলা ও দলের নেতাকর্মীরা জড়িত। অবশ্য হলমার্ক অর্থকেলেঙ্কারির পর অর্থমন্ত্রী মুহিত সাহেব বলেছিলেন, মাত্র ৪০০ কোটি টাকা এটা একটা ব্যাপার হলো! ৪১ বছরেও দক্ষিণবঙ্গের সাথে রাজধানীর যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে নিঃশেষ করতে হয় এ অঞ্চলের জনগণকে। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে এটিই ছিল বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ প্রকল্প। যেখানে অর্থের প্রয়োজন হয় প্রায় ২০৯ কোটি মার্কিন ডলার। ২০১০ সালের শুরুতে এ প্রকল্পটি অনুমোদন করে একনেক। কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু কর্তাব্যক্তিরা শুরুতেই লুটপাট শুরু করেন, যা দাতা সংস্থা মহলের দৃষ্টিগোচর হয়। সেতুর দরপত্র আহ্বান করে ২০০৯ সালে। বিশ্বব্যাংক এতে নারাজ হয়। ২০১০ সালে পুনরায় দরপত্রের আহবান করা হয়। বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য সংস্থার আশ্বাসে এগিয়ে চলে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ। হঠাৎ উইকিলিকস্ নামক সবজান্তায় বেরিয়ে আসে টাকা পাওয়ার আগেই এর বণ্টনপদ্ধতি। সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে স্বয়ং যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনসহ সেতু বিভাগের সচিব মোশাররফ হোসেন ভূইয়া ও সেতু প্রকল্পের পরিচালক রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। সাথে অর্থ উপদেষ্টা মশিউর রহমানেরও। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঘুরে দাঁড়ায় বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংক তদন্ত দাবি করে অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্ত করার পরিবর্তে সরকারের কর্তাব্যক্তিরা এ ব্যাপারে যাচ্ছেতাই মন্তব্য করে। অবশেষে কোন রাস্তা না পেয়ে ৫ জানুয়ারি ২০১২ যোগাযোগমন্ত্রীকে অপসারণ করে সরকার। সরকার অভিযোগের পূর্ণ তদন্ত না করে আবুল হোসেনকে দেশপ্রেমিক হিসেবে ঘোষণা করে। সে যাই হোক বাস্তবে এর নির্মাণকাজ আদৌ এ সরকার শুরু করতে পারবে কি নাÑ সকলের দৃষ্টি সেদিকে। আর যে দুই আবুলের কারণে এ ঐতিহাসিক কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে কি না, না দলীয় বিবেচনায় সব মাফ-সাফ হয়ে যাবে এ নিয়ে সন্ধিহান সারা জাতি।

পদ্মা সেতু দুর্নীতি চ্যাম্পিয়নশিপ কেলেঙ্কারি শেষ হতে না হতে ধরা পড়ে ডেসটিনি অর্থ কেলেঙ্কারি। আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে এ প্রতিষ্ঠানটি হাতিয়ে নেয় কোটি কোটি টাকা। অবৈধভাবে শত শত কোটি টাকা বাইরে পাচার করলেও সরকার ছিল সম্পূর্ণ অন্ধকারে। গত মার্চ মাসে ডেসটিনির আরেক সহযোগী প্রতিষ্ঠান ডেসটিনি কো-অপারেটিভ সোসাইটির ওপর একটি পরিদর্শন কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরিদর্শন থেকে বেরিয়ে আসে যে, ডেসটিনি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।

ডেসটিনির অর্থ কেলেঙ্কারির মাঝামাঝি জাতির কাছে অর্থলুণ্ঠনকারী আরেক দানব এসে হাজির হয় যার নাম হলমার্ক। সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর যোগসাজশে হলমার্ক এ বছরই সোনালী ব্যাংক থেকে কেড়ে নেয় প্রায় ২৫০০ কোটি টাকা । হলমার্ক গ্রুপের এসব অপকর্ম ঘটতে থাকে সরকারের কর্তাব্যক্তিদের ছত্রছায়ায়। হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনা মিডিয়ার মাধ্যমে সকলে জানতে পারে। অবশ্য এ সময় সরকারের তরফ থেকে মিডিয়ার সমালোচনা করে। কিন্তু অভিযোগের তীব্রতায় সরকার বাধ্য হয়ে হলমার্ক গ্রুপের এমডি তানভীর ও চেয়ারম্যান তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করে। কিছুদিন আগেও এ গ্রুপটি তাদের সফলতার জন্য সরকারের কাছ থেকে মেডেল গ্রহণ করেছিল। দুর্নীতির এসব দলিল দস্তাবেজ থাকার পরও এসব অর্থখেকো দানবেরা আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে যাবে না তো?

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। পদ্মা সেতু, ডেসটিনি ও হলমার্কের ঘা শুকাতে না শুকাতে রেল মন্ত্রণালয়ের থলের বেড়াল বেরিয়ে এলো। ৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবনের শেষ বেলায় মন্ত্রী হওয়ার সুযোগ মিলল বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের। পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারিতে আবুল হোসেনের সমালোচনায় মুখর ছিলেন এই মন্ত্রী। মন্ত্রী হয়েই বললেন রেলের কালো বিড়াল খুঁজে বের করবেন। কে জানত তিনি যে নিজেই কালো বিড়াল! মাত্র স্বল্প দিনের ব্যবধানে নিয়োগবাণিজ্যেও ৭০ লক্ষ ঘুষের টাকাসহ ধরা পড়েন বিজিবির হাতে। মন্ত্রীর এপিএস অপসারণ করেও শেষ রক্ষা হলো না, অবশেষে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন । সরকার অদৃশ্য ইশারায় এখন দফতরবিহীন মন্ত্রী হিসেবে পুনরায় নিয়োগ দিয়েছে। দুদক কর্তৃক দুর্নীতিমুক্ত (!) মন্ত্রী হিসেবে সনদও পেয়েছেন! কিছুদিন আগে এপিএসের গাড়িচালক আযম একটি বেসরকারি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার প্রদান করলে বিষয়টি পুনরায় আলোচনায় আসে। কে জানে এর সুরাহা কি হবে?

নতুন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক সবেমাত্র দায়িত্ব নিলেন। রেলের উত্তরাঞ্চলের ৯৮টি নতুন পদের জন্য রেলমন্ত্রী নিজেই ১৮২টি দরখাস্তে চাকরির সুপারিশ করেছেন। প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে জানা গেছে মন্ত্রীর দুই বিশ্বস্ত সহযোগী এসব নিয়োগবাণিজ্য দেখছেন। পত্রিকায় প্রকাশ মন্ত্রীর দলীয়করণ ও নিয়োগবাণিজ্যের স্বেচ্ছাচারিতায় খোদ আওয়ামীপন্থী রেলকর্মকর্তারাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

শেয়ারবাজার ট্র্যাজেডি ছিল বাংলাদেশের অর্থনীতির আকাশে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা। দেশের শীর্ষ নেত-নেত্রী পর্যায়ের ব্যক্তিরা এর সাথে জড়িত বলে অভিযোগ ওঠে। তবে আওয়ামী আমলে শেয়ারবাজারে যে দরপতন ঘটেছে তা রীতিমত বিনিয়োগকারীদের বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে। ৪০ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী ও তাদের পরিবারসহ ২ কোটি মানুষ আর্থিক কষ্টের সম্মুখীন হয়েছেন। প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা শেয়ারবাজার থেকে লুট করা হয়েছে। দুদুক জানায় শেয়ার কেলেঙ্কারিতে জড়িতরা ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১১ সালের ১৫ জুন পর্যন্ত ৪৩৬ কোটি টাকা পাচার করেছে। নিঃস্ব বিনিয়োগকারী বেশ ক’য়েক জন আত্মহুতি দিয়েছেন। রক্তচোষা অভিযুক্ত ব্যক্তিরা রাজপথে পাজেরো হাঁকিয়ে বীরদর্পে মুক্ত বাতাসে ঘুরে বেড়াবে! তাদের বিচার হবে তো?

বারবার তেল গ্যাসের দাম বৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, গণতান্ত্রিক কর্মসূচি, প্রতিবাদে উপর্যুপরি বাধা একটি গণতান্ত্রিক সরকারের জন্য শুভ হতে পারে না। সরকার নাগরিকদের গণতান্ত্রিক কর্মকা-ে বাধা অব্যাহত রাখলে সহিংসতা বাড়তে পারে; এমনকি গৃহযুদ্ধের আশঙ্কাও করছেন অনেকে। যে দেশে বেতনভাতা বৃদ্ধি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের দাবিতে মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকদের আন্দোলন করতে হয়; আর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে জীবন সংহার হতে হয় সে দেশের ভবিষ্যৎ কী হতে পারে?

তাই দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের স্বার্থে জেগে উঠতে হবে সকল সচেতন দেশপ্রেমিক নাগরিককে; রুখে দিতে হবে সকল অশুভ শক্তিকে। কাপুরুষের মতো হাজার বছর বাঁচার স্বপ্নে বিভোর না হয়ে বীরদর্পে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে সুন্দর নীলিমায় রূপান্তরিত করার দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে যেতে হবে। যেখানে থাকবে না কোন ভেদাভেদ, থাকবে না মজলুমের আহাজারি। এটিই হোক সকল নাগরিকের দৃষ্টিভঙ্গি।

লেখক : সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

সংশ্লিষ্ট