যুব সমাজের ভয়াবহ অবক্ষয় রোধে নৈতিক শিক্ষার বিকল্প নেই
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, দেশে যুব সমাজের অবক্ষয় ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করেছে। ফলে একের পর এক বিভৎস ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে হচ্ছে জাতিকে। এই অবক্ষয়ের মূল কারণ অনৈতিকার প্রসার। সুতরাং যুব সমাজের ভয়াবহ অবক্ষয় রোধে নৈতিক শিক্ষার বিকল্প নেই।
তিনি আজ কুমিল্লার এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির কুমিল্লা জেলা দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ ৫ প্রাপ্তদের জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
শিবির সভাপতি বলেন, এদেশে যোগ্যতা সম্পন্ন নাগরিকের অভাব নেই। রাষ্ট্র পরিচালনার প্রতিটি ক্ষেত্রেই যোগ্যতা সম্পন্ন লোকের অবস্থান আছে। কিন্তু একই সাথে রাষ্ট্রের প্রতিটি ধাপেই দূর্নীতির কালো থাবা গ্রাস করে আছে। শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড হলেও বিতর্কিত ও ত্রুটিপূর্ন শিক্ষা ব্যবস্থার ফলে বার বার শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সুকৌশলে শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ইসলামী শিক্ষাকে সংকোচিত করা হয়েছে। শিক্ষায় ধর্মীয় বিষয় গুলোকে পরিহার করা হয়েছে। যা অনৈতিক ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গঠনের একটি ধাপ রচনা করেছে। শিক্ষাব্যবস্থার ভয়ঙ্কর ত্রুটির প্রতিফলও ভোগ করছে জাতি। প্রায় প্রতিদিনই দেশে এমন সব লোমহর্ষক ঘটনা ঘটছে যা মানুষের অন্তরকে কাঁপিয়ে দিচ্ছে। বাংলাদেশে আজ শিশু থেকে বৃদ্ধা পর্যন্ত ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। নেশাগ্রস্থ সন্তান মায়ের গলায় ছুরি চালিয়ে দিচ্ছে। জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। ছোট কিশোরেরা পর্যন্ত ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। অল্প বয়সেই ভয়ঙ্কর খুনি রুপে নিজেদের প্রকাশ করছে। সমাজের নামী দামী ঘরের সন্তানরা নারীদের পন্যের মত ব্যবহার করছে। যার নিকৃষ্ট প্রমাণ সম্প্রতি রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের ঘটনা। যেখানে পিতা নিজেই বুক ফুলিয়ে সন্তানের অপকর্মের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। এ এক ভয়ঙ্কর চিত্র। এসব অসভ্যতার মূল কারণ ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রে অনৈতিকতার প্রসার। আর অনৈতিকতার প্রসার হয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থায় আদর্শের অনুপস্থিতির কারণে। নৈতিকতাহীন মেধা বা যোগ্য ব্যক্তি জীবনে অনৈতিক উন্নতি সাধন করতে পারলেও জাতির জন্য কল্যাণ কিছু করতে পারে না। বরং তারা জনগণের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়।
তিনি বলেন, আজকের মেধাবীদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠার পথ সহজ হবে না তা নিশ্চিত। কিন্তু আমরা মনে করি যারা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছে তারা এসব অনৈতিকতার বেড়াজাল ছিন্ন করারও ক্ষমতা রাখে। শুধু প্রয়োজন নৈতিকার পথে এগিয়ে চলার দৃঢ় সিদ্ধান্ত ও সে অনুযায়ী নিজেকে পরিচালনা করা। ছাত্রশিবির শত প্রতিকূলতার মাঝেও মাদক, অশ্লীলতা ও সন্ত্রাসমুক্ত একদল নৈতিকতা সম্পন্ন যোগ্য নাগরিক তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। আর তা সম্ভব হয়েছে কুরআনের আলোকে ছাত্রদের জীবন পরিচালনার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার কারণে। আমাদের এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। অভিশাপ নয় বরং জাতির সম্পদ ও কাঙ্খিত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে মেধাবীদের পাশে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে ছাত্রশিবির এগিয়ে চলেছে। আমরা আশা করি আজকের মেধাবীরা ছাত্রশিবিরের এই পথ চলায় শামিল হয়ে জাতির প্রত্যাশা পূরণে এগিয়ে আসবে।
সংশ্লিষ্ট
- ক্ষমতার পালাবদল, কোন পথে স্বদেশ? -মুহাম্মদ আবদুল জাব্বার
- রাসূল সা. কর্তৃক নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা ও পাশ্চাত্যের নারীবাদ - শামসুন্নাহার নিজামী
- শহীদ মালেক থেকে শহীদ সাঈদী : মহাকালের মহানায়কদের এক অভিন্ন যাত্রা!
- বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২৩
- "আহলান সাহলান মাহে রমাদান"
- রাসূল সা. এর দ্বীন প্রসারের পদ্ধতি - রাশেদুল ইসলাম
- মেধাবীদের মেধা অপচয় ঝুঁকিপূর্ণ প্রজন্মের অশনিসঙ্কেত - রাশেদুল ইসলাম
- সালাত মানবিক সংস্কৃতির আলোকিত অধ্যায় - ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ
- হালাল উপার্জন ও আল্লাহর স্মরণ - হাফেজ মুহাম্মাদ রাশেদুল ইসলাম
- ইসলামী আন্দোলন ও রাজনীতি- রেদওয়ান রাওয়াহা