মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই ২০১৭

ক্যাম্পাস গুলো সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, সরকার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্য ছাত্রলীগকে দায়িত্ব দিয়েছে। আর ছাত্রলীগের অব্যাহত সন্ত্রাসে ক্যাম্পাস গুলো সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।

আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবিরের কার্যকরী পরিষদের দ্বিতীয় সাধারন অধিবেশনে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সেক্রেটারি জেনারেল মোবারক হোসেনের পরিচালনায় অধিবেশনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জামায়েতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। এসময় কার্যকরী পরিষদের সকল সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

শিবির সভাপতি বলেন, ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ সরকার এখন দেশ শাসনের নামে শোষণ চালাচ্ছে। জনগণের উপর জুলুম নির্যাতনের ষ্টিমরোলার চালিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্র আজ নির্বাসিত। মত প্রকাশের স্বাধীনতা ভুলুন্ঠিত। প্রহসনের মাধ্যমে শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে হত্যা করছে এই জুলুমবাজ সরকার। হত্যা,খুন গুমের শিকার হচ্ছে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ। দেশ যেন এক মৃত্যুপুরী। নিরাপরাধ ছাত্র-জনতাকে ধরে নিয়ে ক্রসফায়ারের নামে হত্যা অথবা পঙ্গু করে দেয়া হচ্ছে। বিরোধীদলের প্রভাবাধীন এলাকাগুলোতে চালানো হচ্ছে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। বিশেষ করে গত বছর ঝিনাইদহে একের পর এক মেধাবী ছাত্রদের ধরে ধরে ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করা হয়েছে। সারাদেশে চলছে অন্যায় গণগ্রেফতার। অসহায় মানুষের আর্তচিৎকারে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠছে। মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত। কথিত জঙ্গিবাদের নামে সারাদেশে যখন তুলকালাম অবস্থা, তখনই দেখা যাচ্ছে এই জঙ্গিরা আওয়ামীলীগের পৃষ্টপোষকতায়ই বেড়ে উঠেছে। হত্যা সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সারাদেশের মানুষ যখন ঐক্যবদ্ধ, তখনই সরকার নোংরা রাজনীতিতে মেতে উঠেছে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে ভারতকে ট্রানজিট দিয়েছে। সকলের বিরোধীতার মুখে সুন্দরবনে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে চুড়ান্ত ব্যবস্থা ও প্রতিরক্ষা চুক্তি করা হয়েছে। দেশে বিনিয়োগ প্রায় শূণ্যের কোঠায়। কর্মসংস্থান নেই। বিদেশ থেকে বাংলাদেশীদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। মূলত: গণতন্ত্রহীন বাংলাদেশ চরম অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে চলছে।

তিনি আরো বলেন, ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ধারাবাহিক নৃশংসতায় ক্যাম্পাস গুলো বার বার রক্তাক্ত হচ্ছে। সরকার, পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মদদে তারা জ্ঞান অর্জনের স্থানকে অবৈধ অস্ত্রের মিনি ক্যান্টনমেন্টে পরিণত করেছে। ক্যাম্পাস এখন আতঙ্কের নামে পরিণত হয়েছে। অপরদিকে সরকারের ভুল নীতি ও অযোগ্যত্যার কারণে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যাবস্থা আজ প্রায় ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে।

তিনি বলেন, সরকার শুধু সন্ত্রাসকেই মদদ দিচ্ছে না বরং ছাত্রশিবিরের গঠনমূলক কর্মকান্ডেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। কিন্তু সরকার ছাত্রশিবিরের উপর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়ে সফল হবে না। ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ধৈর্য, সাহসীকতা, আদর্শীক অবস্থান ও গঠনমূলক কর্মকান্ডের কাছে সরকার বার বার পরাজিত হবে, ইনশাআল্লাহ। আমরা সরকারের প্রতি আহবান রেখে বলতে চাই, অবিলম্বে গুম, খুন, ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে। ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের সন্ত্রাস বন্ধ ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দ্রুত একটি অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচন দিতে হবে। প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের জন্য অবিলম্বে ত্রাণসহ সার্বিক সহায়তার ব্যবস্থা করতে হবে। সর্বোপরি, জুলুম নির্যাতন বন্ধ করে দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।

সংশ্লিষ্ট