বুধবার, ০৯ আগস্ট ২০১৭

অপকর্ম আড়াল করতে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে উস্কানীমূলক বক্তব্য দিচ্ছে ছাত্রলীগ

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেন, একের পর এক অপকর্মে দেশবাসী যখন ছাত্রলীগকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে তখন নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে উস্কানীমূলক বক্তব্য দিচ্ছে ছাত্রলীগ।

তিনি আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবিরের শাখা দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সেক্রেটারি জেনারেল মোবারক হোসাইনের পরিচালনায় এসময় কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিরাজুল ইসলামসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শিবির সভাপতি বলেন, ছাত্রলীগ সভাপতি তার নেতাকর্মীদেরকে ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে আইন হাতে তুলে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তার এই উস্কানীতে ইতিমধ্যেই দেশের একাধিক জায়গায় নিরীহ ছাত্রদের রক্তে নিজেদের হাত রঞ্জিত করেছে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা। সিলেটেও দুই ছাত্রলীগ কর্মীর উপর হামলা হয়েছে তাদের অভ্যন্তরীন কোন্দলের কারণেই। সেখানে দীর্ঘদিন যাবত ছাত্রলীগের মধ্যে সিনিয়র-জুনিয়র নিয়ে কোন্দল ও মারামারি হয়ে আসছে। তাছাড়া হামলার ফুটেজ পুলিশকে দেয়ায় হাসপাতালে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলা ভাংচুরই চূড়ান্ত ভাবে প্রমাণ করে এ হামলায় ছাত্রলীগই জড়িত। অথচ একটি মিথ্যার উপর ভিত্তি করে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ যে উস্কানি দিয়েছেন তা চরম দায়িত্বহীনতার বহি:প্রকাশ। এমন বেআইনি নির্দেশ কোন নিয়মতান্ত্রিক ছাত্রসংগঠনের হতে পারে না বরং এটি জঙ্গিবাদী সংগঠনের কর্মকান্ডেরই বহি:প্রকাশ। এর মাধ্যমে ছাত্রলীগ তাদের অপকর্ম থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চাচ্ছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। বদরুল ও শাকিলের মত চাপাতিধারী পাষন্ড, জাহাঙ্গির নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের সেঞ্চুরীয়ান মানিক, এবং মায়ের পেটে থাকা শিশুকে গুলি করে ঝাঝড়া করে দেয়া, নিজ দলের নেতাকে প্রকাশ্য পুড়িয়ে অঙ্গার করে দেয়ার মত ঘটনা ছাত্রলীগই জাতিকে উপহার দিয়েছে। তাছাড়া খুন, ধর্ষণ, অস্ত্রাবাজী, টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী, মাদক সেবন ও ব্যবসা, অসভ্যতা এবং অভ্যন্তরীন কোন্দলই ছাত্রলীগের নিত্য দিনের ঘটনা। সুতরাং ছাত্রশিবিরের উপর দায় চাপিয়ে জাতির কাছে ছাত্রলীগ তার অপকর্ম আড়াল করতে পারবে না।

তিনি বলেন, ছাত্রলীগ সভাপতির আইন হাতে তুলে নেয়ার ঘোষণার মধ্যে দিয়ে এটি প্রমাণিত হয়েছে তারা আইন আদালতের তোয়াক্কা করে না, দেশের সংবিধান মানে না, এরাই জঙ্গিবাদী সংগঠন। যারা আইন হাতে নেয় তাদের দ্বারাই নৃশংস ঘটনা ঘটানো সম্ভব। মানে না বর্তমান সময়ের দাবী হচ্ছে ছাত্রলীগের অপকর্ম রুখে দাঁড়ানো। কেননা দেশে ঘটে যাওয়া প্রতিটি ধর্ষণ, খুন ও নৃশংস ঘটনার সাথে ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হচ্ছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, দেশবাসী সজাগ ও সচেতন।

ছাত্রশিবিরের উপর দায় চাপিয়ে ছাত্রলীগের বিকৃত রুপ আড়াল করার ষড়যন্ত্র সফল হবে না। আমরা শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পথ চলায় বিশ্বাস করি। প্রতিটি নৃশংসতা ও অপরাধের নিন্দা জানাই এবং সুষ্ঠ বিচার চাই। একই সাথে ঘোষণা করতে চাই, ছাত্রশিবিরকে ধ্বংস করার স্বপ্ন ছাত্রলীগের পূরণ হবে না। অন্যায় ভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর কোন আঘাত করা হলে তার উপযুক্ত জবাব দিতে ছাত্রশিবির প্রস্তুত আছে। কারো দায়িত্বহীন হুঙ্কারকে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা পরোয়া করে না। আমরা আশাকরি দেশের ছাত্রসমাজ ও জনগণ জঙ্গিবাদী সংগঠন ছাত্রলীগকে প্রত্যাখ্যান করবে এবং তাদের সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।

সংশ্লিষ্ট