বুধবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৭

ক্ষমতার মোহে অন্ধ সরকার একের পর এক সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করছে

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, জনগণের ভোটাধিকার হরণকারী জনসমর্থনহীন সরকার অবৈধ ক্ষমতা স্থায়ী করতে হীন কোন ষড়যন্ত্র নেই যা তারা করছে না। আর জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে সরকার নাটকের মঞ্চস্থ করে চলেছে। ক্ষমতার মোহে সরকার একের পর এক সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করছে।

তিনি আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির আয়োজিত সদস্য প্রার্থী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় অফিস সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের পরিচালনায় এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সালাউদ্দীন আইয়ুবী, শিক্ষা সম্পাদক রাজিফুল হাসান বাপ্পীসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

শিবির সভাপতি বলেন, ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সরকার রাষ্ট্র কাঠামো করায়ত্ব করার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে। অনেক গণমাধ্যম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। প্রভাব হাটিয়ে প্রেসক্লাবে নিজেদের বাছাইকরা ব্যক্তিদের বসানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে নিজেদের পছন্দের লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি মন্ত্রনালয়সহ বিভিন্ন স্থানে যোগ্য ও মেধাবীদের বাদ দিয়ে অযোগ্য দলীয় লোকদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। বিরোধী মতের লোক জনকে সরকারি চাকুরি দেয়ার ক্ষেত্রে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা চলছে। যারা ছিল তাদেরকেও হয় ছাটাই বা ওএসডি করছে। শুধু দলীয় লোকদের নিয়োগ দেয়ার কারণে দেশের লাখো মেধাবী ছাত্র কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। বাড়ছে বেকারত্ব। যা সমাজে অপরাধ প্রবণতা বাড়িয়ে দিচ্ছে। এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে এড়িয়ে গিয়ে সরকার এখন অনৈতিক ভাবে বিচার বিভাগের দিকে হাত বাড়িয়েছে। অনৈতিক স্বার্থ হাসিলে সহায়ক হবে না ভেবে নিজেদের পছন্দ করা প্রধান বিচারপতিকে জোড় করে ছুটি দিয়ে দেশের বাইরে পাঠিয়েছে। এ ব্যপারে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল প্রধান বিচারপতি অসুস্থতার কারণে ছুটি চেয়েছেন। অথচ প্রধান বিচারপতি অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পূর্বে সাংবাদিকের সামনে দেয়া বক্তব্যে বলেছেন, তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে তিনি গভীর ভাবে শংকিত। অন্যদিকে তিনি দেশ ছাড়ার পরই সরকার নিজেদের মিথ্যাচারকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ১১টি অভিযোগ এনেছে। ফলে জনগণের মনে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে যে, নানা অপরাধ, দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ব্যক্তিকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিদেশ যেতে দেয়া হল কেন? সরকার পরিকল্পিতভাবে প্রধান বিচারপতিকে কেন্দ্র করে যে অনৈতিক নাটক করেছে তা বিচার বিভাগের ইতিহাসে নজিরবিহীন ও জাতির জন্য চরম অবমাননাকর। এই ফ্যাসিবাদী আচরণ দেশ ও জাতিকে গভীর সংকটে ফেলে দিবে। দেশবাসীর কাছে পরিস্কার যে সরকার রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য বিচার বিভাগকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে জাতিকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

তিনি বলেন, সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসে গুটি কয়েক অনৈতিক ব্যক্তি পুরো জাতির অধিকার ও প্রত্যাশাকে ভূ-লুন্ঠিত করছে। দেশকে ফেলে দিচ্ছে গভীর অনিশ্চয়তায়। ছাত্রশিবির জাতিকে একটি সমৃদ্ধ সোনার বাংলা উপহার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হলে নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখতে হবে। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন ও পরিচালনায় নেতৃত্ব দেয়ার প্রস্তুুতি নিতে হবে। এজন্য প্রতিটি নেতাকর্মীকে সৎ, দক্ষ ও নৈতিকতাকে লক্ষ্য রেখে যোগ্যতা অর্জনের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

সংশ্লিষ্ট