বুধবার, ০৩ জানুয়ারি ২০১৮

অনশনে থাকা শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবী মেনে নেয়ার আহবান

গত আট দিন ধরে চলা সরকার কতৃক স্বীকৃতপ্রাপ্ত সব মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্তির দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবী মেনে নেয়ার আহবান জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত ও সেক্রেটারি জেনারেল মোবারক হোসাইন বলেন, শিক্ষকতা একটা মহান পেশা। একটি দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যে বিশ্বাস, মূল্যবোধ, দেশপ্রেম, দক্ষতা ও নৈতিকতা বোধ দিয়ে গড়ে তুলতে চায় সেই কাজটা সম্পন্ন করেন সম্মানিত শিক্ষকরা। কিন্তু পর্যাপ্ত সক্ষমতা ও সুযোগ থাকার পরও আমাদের মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকরাই আজ সবচেয়ে বেশী অবহেলিত। জাতি গড়ার কারিগর শিক্ষক সমাজ আজ খোলা আকাশের নিজে অবস্থান করছেন। ইতিমধ্যে অনশনে থাকা ৩০ জনেরও অধিক শিক্ষককে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। যা পুরো জাতির জন্য লজ্জার। দেশে ৭ হাজার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকার অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু ২০১০ সালের পর থেকে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই এমপিওভুক্ত হয়নি। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এক লাখের অধিক শিক্ষক-কর্মচারী ২০ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীকে পাঠদানের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। এই প্রতিষ্ঠান গুলোতে কর্মরত শিক্ষক কর্মচারীরা দীর্ঘ ১৫ থেকে ২০ বৎসর বিনা বেতনে শিক্ষাদান করছেন। বিনা বেতনে সরকারি বেতন-ভাতা না পেয়ে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অপ্রতুল বেতন ভাতার নামে তামাশা এক দিকে যেমন অমানবিক, তেমনি সম্মানিত শিক্ষকদের জন্য চরম অবমাননাকর। এভাবে চলতে থাকলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা হুমকির সম্মুখীন হবে। সুতরাং অবিলম্বে সম্মানিত শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির দাবী মেনে নিতে হবে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার মুখে মুখে শিক্ষার মান বৃদ্ধির কথা বললেও শিক্ষকদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। শিক্ষকদের অবহেলা করে শিক্ষার মান বৃদ্ধির কথা ধোঁকাবাজী ছাড়া কিছু নয়। উচ্চাবিলাশী বাজেট ঘোষনার পরও শিক্ষকদের প্রতি এই বৈষম্যের পিছনে কোন ষড়যন্ত্র আছে কি না তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। শিক্ষক সমাজের প্রতি এই বৈষম্য ও অবমাননা ছাত্রসমাজ সহ্য করবে না। আমরা সম্মানিত শিক্ষক সমাজের ন্যায্য দাবীর সাথে একাত্বতা প্রকাশ করছি। অবিলম্বে শিক্ষকদের দাবী অনুযায়ী সরকার নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে এমপিওভুক্তি করার ব্যাপারে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। অন্যথায় ন্যায্য দাবী আদায়ে ছাত্র-শিক্ষক এক কাতারে দাঁড়াবে।

নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে শিক্ষক সমাজের দাবী অনুযায়ী এমপিওভুক্তির দাবী মেনে নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রমকে স্বাভাবিক করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।

সংশ্লিষ্ট