রবিবার, ০৭ জানুয়ারি ২০১৮

মু. জসিম উদ্দিন সরকার

পরিচ্ছন্ন থাকতে চাই শুধু সদিচ্ছা

ইসলাম একটি পরিচ্ছন্ন পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র এবং তিনি পবিত্রতা পছন্দ করেন। পবিত্র মনের অধিকারী ব্যক্তি পাপ ও মন্দকাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারে। পবিত্রতা মানুষের মন ও দেহে পরিতৃপ্তি সৃষ্টি করে,ভালো ও কল্যাণকর কাজের প্রতি অনুপ্রাণিত করে। আর সুস্থ ও সুন্দর থাকার জন্য পরিচ্ছন্নতার বিকল্প নেই। একজন পরিচ্ছন্ন ব্যক্তি সত্য ও সুন্দরের অধিকারী হয় ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে। Beauty is truth, truth beauty সত্যই সুন্দর, সুন্দরই সত্য। সত্য- সুন্দর বলেই মানুষ সত্যবাদিতাকে পছন্দ করে মিথ্যাকে অপসৃত করে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে পরিচ্ছন্নতার প্রশংসা করেছেন এবং সত্যবাদীদেরকে আল্লাহর রহমত এবং ক্ষমা লাভকারীদের অন্তর্ভুক্ত বলে ঘোষণা করেছেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন الطُّهُورُ شَطْرُ الْإِيمَانِ অর্থাৎ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অর্ধেক। মুসলিম :২২৩ 

পরিচ্ছন্নতা কি এবং পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব :  
শারীরিক সুস্থতা এবং মন মননের বিকাশ লাভের জন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। উইলিয়াম এবং ক্যাথরিন বুথের প্রতিষ্ঠিত ধর্মীয় দল সালভেশন আর্মি, এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মেনে নিয়েছিল। সুসমাচারের প্রথায় স্বাস্থ্য এবং ওষুধ (ইংরেজি) নামক বই অনুসারে তাদের প্রথমদিকের একটা শ্লোগান ছিল: “সোপ, স্যুপ আ্যন্ড সালভেশন।” এরপর লুই পাস্তুর এবং অন্যেরা যখন দেখিয়েছিলেন যে, অসুস্থতা এবং ব্যাকটেরিয়া ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তখন তা শুধু জনগণের স্বাস্থ্য রক্ষার আরও ভাল ভাল কৌশল এবং বৈজ্ঞানিক নীতি প্রয়োগ করার জন্য প্রেরণা দিয়েছিল। তাৎক্ষণিক যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছিল তার মধ্যে ছিল, আদালতে প্রত্যেক সাক্ষীকে বাইবেল চুমো না দিতে দেওয়া এবং স্কুল ও রেল স্টেশনগুলোতে একই কাপে খাওয়ার অভ্যাস দূর করা। খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, যখন উদ্যোগী ব্যবসায়ীরা রোজকার ব্যবহারের সাবানকে প্রসাধনীতে রূপ দিয়েছিল। এটা লোকেদের ওপর এতটাই ছাপ ফেলেছিল যে এর ফলাফল দেখে একজন লেখক একে “পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি প্রেম” বলে উল্লেখ করেছেন।

এই প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেনঃ আল্লাহ বলেন
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلاةِ فاغْسِلُواْ وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُواْ بِرُؤُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَينِ وَإِن كُنتُمْ جُنُبًا فَاطَّهَّرُواْ وَإِن كُنتُم مَّرْضَى أَوْ عَلَى سَفَرٍ أَوْ جَاء أَحَدٌ مَّنكُم مِّنَ الْغَائِطِ أَوْ لاَمَسْتُمُ النِّسَاء فَلَمْ تَجِدُواْ مَاء فَتَيَمَّمُواْ صَعِيدًا طَيِّبًا فَامْسَحُواْ بِوُجُوهِكُمْ وَأَيْدِيكُم مِّنْهُ مَا يُرِيدُ اللّهُ لِيَجْعَلَ عَلَيْكُم مِّنْ حَرَجٍ وَلَـكِن يُرِيدُ لِيُطَهَّرَكُمْ وَلِيُتِمَّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ

‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন নামাজ আদায়ের জন্য প্রস্তুতি নাও, তখন তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাতগুলো কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও আর মাথা মাসেহ করো এবং পাগুলো টাকনু পর্যন্ত ধুয়ে ফেলো। আল্লাহ তোমাদের ওপর কোনো সংকীর্ণতা সৃষ্টি করতে চান না বরং তিনি তোমাদের পবিত্র করতে ও তোমাদের ওপর স্বীয় নিয়ামত পূর্ণ করতে চান যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো।’(সূরা মায়েদা: ৬)

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কেবল নিজের কাছে। অনেক সময় মন মননের কথা আর খেয়াল থাকে না। এজন্য পরিবারের বড়রা যেমন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে তেমনি ছাত্রজীবনে ছাত্রদের পাশাপাশি শিশুদেরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার দৃশ্যমান তৎপরতা থাকা প্রয়োজন। একজন মানুষের আত্মিক ও বাহ্যিক পবিত্রতার কারনে দেহের ময়লা ও মনের ময়লা উভয় দূর হয়ে থাকে। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন যে অজু করে এবং সুন্দর করে অজু করে, তার গুনাহগুলো শরীর থেকে বের হয়ে যায়। এমনকি তার নখের নিচ থেকেও গুনাহ বের হয়ে যায়।’ (বুখারি ও মুসলিম)

প্রতিনিয়ত সুস্থ ও ভাল থাকার জন্য কিছু অভ্যাস গড়ে তুলুন : 
১) মেসওয়াক বা ব্রাশ: দাঁত ও মুখের যত্নে মিসওয়াকের গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত হিসেবে গণ্য করা হয়েছে
মিসওয়াক ব্যবহারকে। যেমন আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন لَوْلاَ أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي أَوْ عَلَى النَّاسِ لَأَمَرْتُهُمْ بِالسِّوَاكِ مَعَ كُلِّ صَلاَةٍ
‘যদি না আমার উম্মত অথবা (তিনি বলেছেন) মানুষের জন্য কঠিন হত তবে আমি তাদেরকে প্রত্যেক সালাতের সঙ্গে মিসওয়াকের নির্দেশ (ওয়াজিব ঘোষণা) দিতাম। (বুখারী : ৮৮৭;মুসলিম : ২৫২)
সমাজ জীবনে চলাফেরা করার সময় কথা বলা প্রয়োজন হয়। অনেক সময় বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় আর মেসওয়াক তার উত্তম সমাধান। দাঁত ও মুখের যত্নে মিসওয়াকের গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

২) গোসল: পরিচ্ছন্নতা ইসলামে যেভাবে বিস্তৃত অন্য কোনো ধর্মে এমনটি কল্পনাও করা যায় না। ব্যক্তির পরিচ্ছন্নতা, গৃহের পরিচ্ছন্নতা ও পরিপার্শের পরিচ্ছন্নতা- কোনোটাই বাদ যায় নি। ব্যক্তির পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় অন্তত জুমাবারে গোসলের গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এমনকি হাদীসে এ ক্ষেত্রে ‘ওয়াজিব’ শব্দও উল্লিখিত হয়েছে। যেমন : আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন
্غُسْلُ يَوْمِ الجُمُعَةِ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ
‘জুমার দিন (শুক্রবার) গোসল করা প্রতিটি সাবালক ব্যক্তির জন্য ওয়াজিব।’ বুখারী : ৪৭৯
আরেক হাদীসে এসেছে, আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, حَقٌّ لِلَّهِ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ أَنْ يَغْتَسِلَ فِي كُلِّ سَبْعَةِ أَيَّامٍ، يَغْسِلُ رَأْسَهُ وَجَسَدَهُ
‘আল্লাহর জন্য প্রতিটি মুসলিমের অবশ্য কর্তব্য হলো (অন্তত) প্রতি সাত দিনের মাথায় তার মাথা ও শরীর ধৌত করা।’ [বুখারী : ৮৯৭; মুসলিম : ৮৪৯]
কারও ওপর গোসল ফরয না হলেও যেহেতু শরীরে ঘাম ও ধূলা-বালি প্রভৃতি আবর্জনা লাগে তাই তাকে অন্তত সাতদিনে একবার গোসলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে তার শরীরের দুর্গন্ধে কেউ কষ্ট না পায়। এজন্য শরীরের কোনো কোনো অঙ্গ পরিচ্ছন্ন রাখতে গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।

৩) চুলের যত্ন: দেহের অন্যতম সৌন্দর্য হচ্ছে চুল আর এই চুল মহান আল্লাহ তায়ালার অন্যতম নিয়ামত।
চুলের পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
أَتَانَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَائِرًا فِي مَنْزِلِنَا، فَرَأَى رَجُلًا شَعِثًا، فَقَالَ: ্أَمَا كَانَ يَجِدُ هَذَا مَا يُسَكِّنُ بِهِ رَأْسَهُ ، وَرَأَى رَجُلًا عَلَيْهِ ثِيَابٌ وَسِخَةٌ، فَقَالَ: ্أَمَا كَانَ يَجِدُ هَذَا مَا يَغْسِلُ بِهِ ثِيَابَهُ
একদিন আমাদের বাসায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেড়াতে এলেন। এখানে এসে তিনি এক এলোকেশী ব্যক্তিকে দেখতে পেলেন। তার সম্পর্কে তিনি বললেন, এ ব্যক্তি কি এমন কিছু জোটাতে পারে নি যা দিয়ে সে তার মাথার চুল বিন্যস্ত করবে’। আরেকজনকে তিনি দেখলেন ময়লা বস্ত্র পরিহিত। তার উদ্দেশে বললেন, এ ব্যক্তি কি এমন কিছু জোগাড় করতে পারে নি যা দিয়ে সে তার কাপড় পরিষ্কার করবে। [মুসনাদ আহমাদ : ১৪৮৫০ বাইহাকী : ৫৮১৩]

চুল কাটা লাগবে তবে চুল কাটার নামে অসামাজিক না হয় সেদিকে খেয়ালও রাখা লাগবে । রাসুল সা. আনাস (রা) এর মাথায় হাত বুলিয়ে বরকতের দোয়া করেন এবং বলেন: এ দুটিকে মুণ্ডন করবে অথবা ছেঁটে দেবে, কারণ এইভাবে চুল রাখা ইহুদিদের রীতি ।
আর এর পূর্ণতা হিসেবে উল্লেখ করা যায় ‘সুনানে ফিতরাত’ তথা প্রকৃতির সুন্নত খ্যাত বিষয়গুলো। এসব থেকে স্পষ্টই ধারণা মেলে যে, মানুষের পরিচ্ছতা ও সৌন্দর্য এবং সুস্থতা ও কমনীয়তার নেয়ামত রক্ষায় শরীয়তে কতটা গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাদ যায় নি নখ কাটা, গোঁফ ছোট করা ইত্যাদি। 

৪) সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস: প্রতিবার শৌচকাজ শেষে, খাবার তৈরি ও পরিবেশনের আগে, খাদ্য গ্রহণের আগে, অসুস্থ ব্যক্তির সেবা করার পরে, শিশুদের মলমূত্র পরিষ্কার করার পরে, প্রতিবার বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পরে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।

৫) খাদ্য প্রস্তত, রক্ষণাবেক্ষন ও পরিবেশন: এই কাজের জন্য সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে খাদ্য তৈরি করা, খাদ্য রক্ষণাবেক্ষনে যত্নবান হওয়া এবং খাবার সবসময় ঢেকে রাখা খুবই জরুরি। খাওয়ার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া না করা মনে রাখবেন মাছ মাংস ও দামি খাবারের চাইতে খাবার পরিবেশন এবং পরিস্কার পরিপাটি খাবারের রুচি বাড়িয়ে দেয়।
يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا ۖ إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ
হে রাসূল সা., আপনারা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন খাবার খান এবং সৎকাজ করুন! মুমিনুন-৫১

৬) পোশাক: লজ্জা স্থান বা দেহের গোপন অংশসমূহ আবৃত করাই পোশাকের মূল উদ্দেশ্য। ইসলামী পরিভাষায় আবৃতব্য গুপ্তাঙ্গকে ‘আওরাত’ বা ‘সতর’ বলা হয়। পুরুষের জন্য নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত 'আওরাত' বলে গণ্য। দেহের এ অংশটুকু স্ত্রী ছাড়া অন্য মানুষের দৃষ্টি থেকে আবৃত করে রাখা ফরয।

ইবনু আমর (রা) বলেন রাসুল সা. বলেছেন, নাভির নিচ থেকে হাঁটু পর্যন্ত আবৃতব্য গুপ্তাঙ্গ।” হাদীসটির সনদ মোটামুটি গ্রহণযোগ্য বা হাসান।
‘আউরাত’ বা ‘আবৃতব্য করা “ফরমাল” পোশাক দিয়েই হয় খুব দামী পোশাক পরে সেজেগুজে থাকলেই স্মার্টনেস আসবে তা নয়, তবে একদম অপরিষ্কার থাকলেও তো চলবে না। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি থাকার চেষ্টা করুন। আপনার শরীরের দুর্গন্ধে যদি অন্য কারো সমস্যা হয় তবে তা তো আপনাকে স্মার্ট হিসেবে তুলে ধরবে না
আল্লাহ তায়ালা বলেন, وَالرُّجْزَفَاهْجُرْ وَثِيَابَكَ فَطَهِّرْ ‘তোমার পোশাক-পরিচ্ছদ পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন রাখো এবং অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকো।’ (সূরা মুদ্দাসসির: ৪-৫)।

৭) পড়ার টেবিল পরিচ্ছন্ন রাখা: একজন ছাত্র তার রেজাল্ট ভাল করার মত করে নিয়মিত পড়ার টেবিল পরিষ্কার রাখা, বইগুলো গুছিয়ে রাখা ও নিজের ল্যাপটপটি মুছে রাখাতে পড়ার প্রতি মনোযোগ বাড়বে এতে কোনই সন্দেহ নেই। ছাত্রজীবনে এই কাজগুলো আপনি কঠিন মনে করলেও মনকে সর্বদা প্রফুল্ল রাখার জন্য এই সুন্দর অভ্যাস চালু করা জরুরী

৮) মেস ও বাসা বাড়ির পরিচ্ছন্নতা: হোক সেটা ভাড়া অথবা নিজের, সুস্থ ও সুন্দর হাসির জন্য আপনার চারপাশ পরিষ্কারের কোনো বিকল্প নেই। আপনার আমার সবার বাসাতেই ময়লা হয়। নিয়মিত পরিষ্কার করে অনেকেই সেই ময়লাগুলো নিয়ে যেখানে সেখানে ফেলে দেই। একটু কষ্ট করে ডাস্টবিনে ময়লা ফেললে কিন্তু আপনার আশেপাশের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন থাকে। ছাত্র জীবন মধুর জীবন। এখানে নেই কোনো সাংসারিক জটিলতা নেই কোনো ভাবনার অবকাশ। জীবনে সেই সাথে বেড়ে ওঠার দূরন্ত বাসনাই এ জীবনের প্রধান বৈশিষ্ঠ। জীবন এখানে দীপ্তকণ্ঠে গেয়ে ওঠে_মোরা ঝঞ্চার মতো উদ্যম, মোরা ঝর্ণার মতো চঞ্চল। আনন্দ উচ্ছ্বাসে কাটিয়ে দেয়া যায় জীবনে রঙ্গিন মুহূর্ত। এজন্যই ছাত্রজীবনকে বলা হয় গোল্ডেন প্রিয়ড অব লাইফ, জীবনের সোনা। ছাত্র জীবনে যে কোনো জীবনের চেয়ে বেশি কাজ করা যায়। তারপরেও অলসতা যেন ছাত্রদের পিছু ছাড়েনা অধিকাংশ সময় আমাদের মেস গুলি দেখে মনে হয় এ যেন কোন যুদ্ধ বিধ্বস্ত এলাকার একটি খণ্ডচিত্র। অথচ বিছানা, রান্না ঘর, সিলিং ফ্যান, মশারি, টয়লেট সবগুলি আমরাই ব্যবহার করে থাকি। শুধু সামগ্রিকভাবে একটু সদিচ্ছাই পারে পরিচ্ছন্ন রাখতে।

৯) কীট-পতঙ্গ: কীট-পতঙ্গের আক্রমণ থেকে সাবধান থাকা, জীবাণুমুক্ত নিরাপদ পানি পান ও ব্যবহার করা প্রভৃতি ব্যবস্থা সাধারণ সমস্যার প্রতিকার হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। স্বাস্থ্য সম্বন্ধে মানুষের অজ্ঞতা ও অবহেলার জন্যই প্রধানত সংক্রামক ব্যাধি বিস্তার লাভ করে। এ কারণে আমাদের দেশে প্রতিবছর বহু লোকের মৃত্যু হয়। ঝকঝকে করে পবিত্র কুরআনের দিকে চাইলে আমরা দেখি, কুবাবাসীর প্রশংসা করেছেন আল্লাহ তা‘আলা অধিক পবিত্র হবার মানসিকতার জন্য।

১০) টয়লেট পরিচ্ছন্ন: একটি প্রবাদ আছে যার বাড়ির টয়লেট ও রান্না ঘর পরিস্কার মনে রেখ সে পরিচ্ছন্ন মানুষ। যে কোন বাসা বাড়ির মানুষের রোগমুক্ত ও স্বাস্থ্য সুন্দর রাখার জন্য টয়লেট পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। টয়লেট ব্যাবস্থাপনায় বাংলাদেশ অন্য দেশের তুলনায় এগিয়ে থাকলেও বাক্তিগত পর্যায়ে আমরা অনেক পিছিয়ে ।

'পৃথিবীর টয়লেটের অবস্থা' শিরোনামে ওয়াটার এইডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নেপালে প্রকাশ্যে মলমূত্র ত্যাগ করা ২০০০ সাল থেকে এ অবধি প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে ধারণা করা হয়। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, পৃথিবীতে এখনো প্রতি তিনজনের মধ্যে একজনের একটি ভালো টয়লেটে যাওয়ার সুযোগ নেই।

ভারতে ৩৫ কোটি নারীর জন্য কোনো নিরাপদ টয়লেট নেই। ইথিওপিয়ায় এ সংখ্যা ৪ কোটি ৬০ লাখ। সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক ভাল হলেও নিজের বাড়িতে টয়লেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছুটা সতর্ক থাকলেও পাবলিক টয়লেট, মেস, অফিস, শপিংমলে ব্যবহারের সময় আমরা অনেক কিছুই খেয়াল রাখিনা। যে শৌচালয় আমরা ব্যবহার করছি তা পরিষ্কার রাখা আমাদের সকলের দায়িত্ব।

জেনে নিন টয়লেট ব্যবহারের কিছু নিয়ম
· টয়লেটে ঢুকে দরজা ভাল করে লক করুন। কেউ বুঝতে না পরে ভুল করে দরজা খুলে ফেললে দুজনেই অপ্রস্তুত হয়ে পড়বেন।
· যদি টয়লেটের ভিতরে কেউ থাকে তাহলে বার বার নক করে বা দরজায় ধাক্কা দিয়ে তাঁকে বিরক্ত করবেন না ।
· খেয়াল রাখুন ব্যবহারের পর কমোড ভেজা না থাকে। অযথা জল ফেলে টয়লেটের মেঝে ভেজাবেন না
· অনেকেরই টয়লেট ব্যবহারের পর পা ধোওয়ার অভ্যাস থাকে। কিন্তু এই সব অভ্যাস শুধু বাড়ির জন্য। পাবলিক টয়লেটে এ সব করতে গিয়ে অযথা জল ঢেলে টয়লেটের মেঝে ভেজাবেন না।
· টয়লেট ব্যবহারের পর অবশ্যই অ্যান্টিসেপটিক দিয়ে হাত ধুয়ে নিন। স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে পারেন
· টিস্যু বা স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের পর কমোড বা ওয়াশ বেসিনে ফেলবেন না। এতে কমোড বা ওয়াশ বেসিনের মুখ আটকে গিয়ে জল জমে টয়লেট নোংরা হবে।
· আপনার বাড়ির টয়লেট নয় বলে জল খরচ আপনার মাথাব্যথা নয় এমনটা ভাববেন না। ওয়াশ বেসিন ব্যবহারের পর কল অবশ্যই বন্ধ করুন। অন্য কেউ কল খুলে রেখে জল নষ্ট করলে আপনিও সমস্যায় পড়তে পারেন।
· টয়েলেটে বসে ধূমপান করার অভ্যাস থাকে অনেকের। এর ফলে যেমন টয়লেট নোংরা হয়, তেমনই গন্ধে অন্যদের দম বন্ধ লাগতে পারে। আবার বদ্ধ জায়গায় বসে ধূমপানের ফলে ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনাও।
এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে আমি নিজেই যেন নাপাকের কারন না হয়। কারণ হাদীসে এসেছে অধিকাংশ মানুষের কবরের আজাব হয়ে থাকে নাপাক বস্তু এবং প্রস্রাবের ফোঁটার কারণে
রাসুলে কারিম সা. বলেন
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ، ﻗَﺎﻝَ : ﻣَﺮَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺑِﻘَﺒْﺮَﻳْﻦِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ” ﺇِﻧَّﻬُﻤَﺎ ﻟَﻴُﻌَﺬَّﺑَﺎﻥ،ِ ﻭَﻣَﺎ ﻳُﻌَﺬَّﺑَﺎﻥِ ﻓِﻲ ﻛَﺒِﻴﺮٍ، ﺃَﻣَّﺎ ﺃَﺣَﺪُﻫُﻤَﺎ : ﻓَﻜَﺎﻥَ ﻟَﺎ ﻳَﺴْﺘَﻨْﺰِﻩُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺒَﻮْﻝِ – ﻗَﺎﻝَ ﻭَﻛِﻴﻊٌ : ﻣِﻦْ ﺑَﻮْﻟِﻪِ – ﻭَﺃَﻣَّﺎ ﺍﻟْﺂﺧَﺮُ : ﻓَﻜَﺎﻥَ ﻳَﻤْﺸِﻲ ﺑِﺎﻟﻨَّﻤِﻴﻤَﺔِ

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূল সাঃ দু’টি কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম হচ্ছিলেন। বললেন, এ দু’টি কবরে আযাব হচ্ছে। কোন বড় কারণে আজাব হচ্ছে না। একজনের কবরে আজাব হচ্ছে সে পেশাব থেকে ভাল করে ইস্তিঞ্জা করতো না। আরেকজন চোগোলখুরী করতো। মুসনাদে আহমাদ,হাদীস নং-১৯৮০, বুখারী,হাদীস নং-১৩৬

আপনার গাড়িটির প্রতি খেয়াল রাখুন: জীবনে চলার পথে যানবাহনের গুরুত্ব অপরিসীম। যানবাহনগুলো যান্ত্রিক হাওয়ার কারনে নিয়মিত পরিচর্যা করা লাগে। একটি মোটর বাইকের নিয়মিত ইঞ্জিলের কন্ডিশন, তেল,‌ ব্রেক ,টায়ার, ১ হাজার কিঃমিঃ পরপর মবিল পরিবর্তন হচ্ছে কিনা তা দেখভাল করা উচিত । কারন একটি দুর্ঘটনা সারাজিবনের কান্না। বিশেষ করে ছাত্রজীবনে পাহাড় সমান ঝুঁকি নিতে ইচ্ছে করে গাড়ি চালানোর সময় স্পিডের খেয়াল থাকে না। উদাসীনতা চলে আসে। গাড়ি চালানোর প্রতি ঝোঁক থাকলেও যত্ন নেবার ক্ষেত্রে উদাসীনতা লক্ষ করা যায়। একটি হেলমেট অনেক বড় দুর্ঘটনা রোধে সহায়তা করে। আপনার গাড়িটি মাসে অন্তত একবার সার্ভিসিং করা জরুরী।

আসুন আলসেমি দূর করি:  
চিন্তা করুনতো আগেরকার মানুষের কথা যখন তারা জঙ্গলে বসবাস করত, তারা জানত না পরের খাবারটা ঠিক কখন পাবেন বা ঠিক কখন কোন জন্তু জানোয়ার তার উপর হামলা করবে, তাই তারা অলসতাকে কাজে লাগিয়ে শক্তি সঞ্চয় করে রাখতেন, যাতে পরে দরকারের সময় তাদের প্রয়োজন পড়ে। অনেকেই মনে করে অলসতা জিনিসটা তাদের থেকেই চলে এসেছে। 

আমাদের মস্তিষ্কে Dopamine নামক এক ধরনের হরমোন নিসৃত হয়, যা আমাদের যেকোনো কাজ করার জন্য ইচ্ছা শক্তিকে ভীষণভাবে নিয়ন্ত্রণ করে এই Dopamine হরমোনকে মস্তিষ্কের reward circuitry ও বলা হয় ফেসবুকে থাকতে বা খেলতে আমাদের কি অলসতা অনুভব করি? না ঘন্টার পর ঘন্টা একনাগারে খেলে চলি কিন্তু বই পড়ার ব্যাপারে, তখন যেন ৫ মিনিটও ৫ ঘন্টার মত লাগে তো এটা কেন হয় ?

আমরা যখন ফেসবুক করি বা খেলাধুলা করি তখন আমাদের ব্রেনের reward circuitry এক্টিভ হয়ে যায় কারন এগুলোতে প্রতি মূহুর্তে আমরা নতুন কিছু Experience করি কিছু সময় পর পরই আমরা নতুন কিছু reward পাই, যা আমাদের মস্তিষ্কে Dopamine হরমোনের নিঃসরণকে বাড়িয়ে দেয় যার ফলে আমরা ক্রমাগত একটা ভালো অনুভতি অনুভব করতে থাকি এবং ধীরে ধীরে সেটার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ি ঠিক এই কারনেই পরীক্ষার আগে পড়তে বসতে আমাদের কোনো অসুবিধায় হয় না কারণ, তখন আমাদের subconscious mind খুব ভালো ভাবেই জানে যে এখন পড়লে ভালো নাম্বার পাবো, আর না পড়লে ফেল, আর কোনো পথ নেই সেটা আলটিমেটলি আমাদের reward circuitry কেই এক্টিভ করে দেয়।

কিন্তু বাস্তবতা হল পরিছন্নতা কে সবাই পছন্দ করে আবার সবাই সব সময় পরিছন্ন রাখতে ও থাকতে পারেনা শুধুমাত্র কয়েক সেকেন্ড মিনিটের কাজ একটু হাতের ব্যবহার ও পরিচ্ছন্ন চিন্তা থেকেই আপনার চারপাশ ভাল এবং সুন্দর রাখা অসম্ভব নয়। হালের গরুও চোখ বুজিয়ে জাবর কাটে বাঁশির মেঠো সুর ভেসে আসে দূর থেকে কাজের মানুষ জারিত হয় আলসেমির আবেশে । আশরফুল মাখলুখাত হিসেবে প্রতিটি মানুষের উচিত আলসেমি দূর করে সুস্থ ও সুন্দর জীবন গড়ে তোলা।

বাইরের পাশাপাশি প্রয়োজন মনের পরিচ্ছন্নতা:  
قُلْ لَا يَسْتَوِي الْخَبِيثُ وَالطَّيِّبُ وَلَوْ أَعْجَبَكَ كَثْرَةُ الْخَبِيثِ ۚ فَاتَّقُوا اللَّهَ يَا أُولِي الْأَلْبَابِ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
বলো: অপবিত্র ও পবিত্র সমান নয়, যদিও অপবিত্রের প্রাচুর্য তোমাকে বিস্মিত করে। অতএব, হে বুদ্ধিমানগণ, আল্লাহকে ভয় কর-যাতে তোমরা মুক্তি পাও( মায়েদা-১০০)

আল্লাহ তায়ালা বাইরের চাইতে ভেতরের পরিচ্ছন্নতা বেশি ভালবাসেন এর সাথে কিছু অভ্যাস মানুষের মন কে পরিচ্ছন্ন করে তোলে নিজের একটি সুন্দর ও পৃথক ব্যক্তিত্ব তুলে ধরার চেষ্টা করুন। কারো অনুকরণ করে নয়, বরং সবাই যেনো আপনাকে অনুসরণ করতে চায় সেভাবেই নিজেকে গড়ে তোলার চেষ্টা করুন। আর এই জন্য, আপনি যেমন আছেন তেমন থাকারই চেষ্টা করুন। জোর করে কোনও কিছু নিজের ওপরে আরোপ করতে যাবেন না। আবার যখন পরিবার বা বন্ধুবান্ধবের সাথে আছেন তখন তাদের সাথেই সময় কাটান। এভাবে আপনি নিজের শতভাগ ব্যবহার করতে পারবেন। মানুষ হিসেবে যে সম্মানটা আপনি অন্যদের কাছ হতে আশা করেন ঠিক তেমনই অন্যদেরকে সম্মান দিতে শিখুন।

একজন ব্যক্তি রিকশা চালায় বলেই তাকে তুই করে বলতে হবে বা বাসার কাজের মানুষটি আপনার থেকে বয়সে বড় হলেও কাজের মানুষ হয়েছেন বিধায় তাঁকে অপমান করে কথা বলার অধিকার আপনি রাখেন না। যিনি নিজের চাইতে ছোট পদের মানুষদের সাথে ভালো আচরণ করতে পারেন না, তিনি কোনোদিনই একজন ভালোমানুষ হতে পারেন না।

পোশাক যেমনি হোক, তা যেনো পরিপাটি আর পরিছন্ন হয় সেটাই খেয়াল রাখবেন। অপ্রয়োজনীয় ও ফালতু কথা বলবেন না এবং অন্যদেরকেও বলতে উৎসাহিত করবেন না। বেশি কথা বলাই স্মার্টনেস এর লক্ষন নয়, বরং পরিস্থিতি মোতাবেক প্রয়োজনীয় কিন্ত জোরদার কথা বলুন। অপ্রাসঙ্গিক কথা বা মন্তব্য জীবনের সবক্ষেত্রেই আপনার ব্যক্তিত্বকে খাটো করে। এমনকি লক্ষ্য করে দেখবেন যে একটি অপ্রাসঙ্গিক ফেসবুক কমেন্ট পর্যন্ত আপনাকে কতটা খেলো করে ফেলে অন্যের চোখে। এই অভ্যাস গুলোর মাধ্যমে একটি সময় আপনার মনকে অনেক বড় করা সম্ভব। সূরা আলে ইমরানের ৮ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন
رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ (8) رَبَّنَا إِنَّكَ جَامِعُ النَّاسِ لِيَوْمٍ لَا رَيْبَ فِيهِ إِنَّ اللَّهَ لَا يُخْلِفُ الْمِيعَادَ
"জ্ঞানী লোকেরা বলে,হে আমাদের পালনকর্তা! সরল পথ দেখানোর পর তুমি আমাদের অন্তরকে আর বাঁকা করে দিও না এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদেরকে অনুগ্রহ দান কর। তুমিই সব কিছুর দাতা।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা রক্ষার্থে আপনার ভূমিকা কী ?
মানুষের মনের সুস্থ্যতার জন্য অনেক ধরনের খাদ্য খাবার দরকার সেই খাবারগুলো হলো শিল্প, সংস্কৃতি, সাহিত্য ও ইসলামের সু শিক্ষা এইগুলোই মানুষের মনকে শুদ্ধ করে মানবিক করে তোলে। সেই শিল্প সাহিত্যের চর্চা বাঙ্গালীদের মধ্যে কতটা দেখা যায়? এখন কিছু লোক দেখানো মহড়া চলে আসুন মহড়া বাদ দিয়ে লেগে পড়ি কাজে কাউকে না কাউকে শুরু করা দরকার।

নিজের শোবার ঘর বা পড়ার টেবিল যতটা যত্ন করে গুছিয়ে রাখি, বাড়ির সামনের রাস্তাটি কি তার অর্ধেক গুরুত্বের সাথেও পরিচ্ছন্ন রাখি? খুব অবাক করা প্রশ্ন? আপনার শোবার ঘরের সাথে রাস্তার তুলনা? কথা বলতে চাচ্ছি আমাদের দেশের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে তবে এরকম চিন্তা ভাবনা নিয়ে চলতে থাকলে দূর দেশের বিদেশীরা এসে আমাদের দেশ পরিষ্কার করে চোখে আঙ্গুল দিয়ে বার বার বুঝিয়ে দিয়ে যাবে, কত সুন্দর আমাদের এই দেশ! আর আমরা হাত গুটিয়ে দেখবো অবাক হবো।

নিজের দেশকে পরিচ্ছন্ন রাখতে অভিযান নয়, প্রয়োজন আপনার আমার সচেতনতা দশের লাঠি একের বোঝা, জানেন তো? চলুন,নিজে সচেতন হয়ে কিভাবে দেশটাকে পরিচ্ছন্ন রাখা যায়,সেই সম্পর্কে জেনে নেই। ধূমপান করা থেকে বিরত থাকুন। জানালা দিয়ে বাইরে থুতু ফেলবেন না। অনেকে রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে ধূমপান করে থাকেন, এটা শুধুমাত্র আপনার পরিবেশের ক্ষতিই করেনা আশেপাশের মানুষদেরও ক্ষতি করে। নগরের পরিষ্কার পরিছন্নতা রক্ষার্থে প্রায় কয়েক হাজার কর্মী নিয়জিত আছে ডাস্টবিনের ময়লা নিয়ে যাওয়ার জন্য, সেখানে আপনিও পারেন নগরের পরিচ্ছন্নতার প্রতিক হতে, যেখানে ভারতে যাকে father of nation বলা হয় সেই গান্ধী হাতে ঝাড়ু নিয়ে ভারত পরিস্কার অভিযানে নামে আপনি আমি কেন নয়? পরিশেষে মহান আল্লাহতায়ালার বানি দিয়ে শেষ করতে চাচ্ছি
إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ ...

সংশ্লিষ্ট