শনিবার, ০৭ এপ্রিল ২০১৮

বিশ্ব নেতৃবৃন্দের নিরবতায় সাম্রাজ্যবাদীরা মুসলমানদের রক্ত ঝরাচ্ছে

বাংলাদেশে ইসলামি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, নির্যাতিত নিপীড়িত মুসলমানদের রক্তে বার বার জমিন সিক্ত হচ্ছে। আর বরাবরই বিশ্ব নেতৃত্ব অস্বাভাবিক দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দের নিরবতায় সাম্রাজ্যবাদীরা মুসলমানদের রক্ত ঝরাচ্ছে।

তিনি আজ এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির ময়মনসিংহ অঞ্চলের সদস্য শিক্ষা শিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় পাঠাগার সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের পরিচালনায় শিক্ষা শিবিরে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় গবেষনা সম্পাদক আব্দুল আল গালিব, ময়মনসিংহ মহানগরী সভাপতি গোলাম কিবরিয়া, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি রাকিব হাসান, ময়মনসিংহ জেলা দক্ষিণ সভাপতি দেলোয়ার হোসাইন, ময়মনসিংহ জেলা উত্তর সভাপতি ইকবাল হোসাইন, জামালপুর জেলা সভাপতি মুকাদ্দেস আলী, শেরপুর জেলা সভাপতি শফিউল ইসলাম, নেত্রকোনা জেলা সভাপতি কুতুব উদ্দিন।

শিবির সভাপতি বলেন, ইহুদিবাদী দখলদার ইসরাইলের নরপশুরা নির্বিচারে নিরপরাধ মুসলমানদের হত্যা করেই চলেছে। এমনকি হত্যার পক্ষে দাম্ভিকতার সাথে স্বীকারও করছে। সম্প্রতি ফিলিস্তিনের ভূমি দিবসের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে ১৭ ফিলিস্তিনিকে। আজ আবারো হামলা চালিয়ে গাজা সীমান্তে ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে আরো ৭ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। আহত হয়েছেন আরো সহস্রাধিক। মুসলমানদের প্রথম কেবলায় শত শত ইহুদি প্রবেশ করে মসজিদের পবিত্রতা নষ্ট করেছে। মুসলমানদের প্রাণ প্রিয় মসজিদুল আকসাকে দখলের ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছে উগ্র ইহুদিরা। যখন তখন প্রথম কেবলায় মুসলমানদের রক্ত ঝরাচ্ছে ইসরাইলের বর্বর বাহিনী। অন্যদিকে আফগানিস্তানে কুরআনে হাফেজদের পাগড়ী প্রদান অনুষ্ঠানে বিমান হামলা চালিয়ে ১০১ জন কুরআনে হাফেজ শিশুকে হত্যা করেছে আমেরিকা। একই ভাবে মুসলিম নিধন চলছে মায়ানমার, সিরিয়া, কাশ্মিরসহ পৃথিবির বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু বিশ্ব সভ্যতার জন্য লজ্জার বিষয় এখন পর্যন্ত মুসলমানদের রক্তপাত বন্ধে কার্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ফলে মুসলিম নিধনে সাম্রাজ্যবাদীরা আরো উৎসাহ পাচ্ছে।

তিনি বিশ্ববাসী ও মুসলিম উম্মাহর প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, মজলুমের আর্তনাদে এমন দায়িত্বহীনতা অব্যাহত রাখলে ইতিহাস আপনাদের ক্ষমা করবে না। এই অমানবিক নিরবতার জন্য ইতিহাস ধিক্কার জানাবে। আমরা ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সর্বাত্বক সমর্থন জানিয়ে বলতে চাই, জেরুজালেম বা ফিলিস্তিন শুধু কোন স্থানের নাম নয় বরং সারা বিশ্বের মুসলমানদের প্রথম কেবলা ও প্রাণের স্পন্দন পবিত্র মাসজিদুল আকসা সেখানে অবস্থিত। ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক ভাবে এই পবিত্র স্থান মুসলমানদের বলে স্বীকৃত। এ পবিত্র স্থান থেকে মুসলমানদের বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব নয়। অন্যদিকে ইসরাইল একটি অবৈধ ও সন্ত্রাসী রাষ্ট্র তা বিশ্ব স্বীকৃত। অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের ধারাবাহিক নৃসংশতায় নিরব থাকা মানে তাদের বর্বরতায় শামিল হওয়া। একই ভাবে আফগানিস্তান, মিয়ানমার,সিরিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে গণহত্যার স্বীকার মুসলমানদের পাশ কাটিয়ে যাওয়া বর্বরতার প্রতি সরাসরি উৎসাহ দেয়ার শামিল। মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যার পরও হাত গুটিয়ে বসে থাকা রাসূল সা. এর উম্মতের জন্য ঈমানের পরিপন্থি কাজ।এমন নিরবতা অব্যাহত থাকলে সময়ের ব্যবধানে সাম্রাজ্যাবাদীদের কালো থাবায় সবাই আক্রান্ত হবে। একই সাথে মহান রবের দরবারেও কঠোর জবাবদিহীতার মুখোমুখি হতে হবে।

তিনি আরো বলেন, পবিত্র ভূমি ফিলিস্তিন রক্ষায় ইহুদীবাদিদের গুলিতে শাহাদাৎ বরণকারীদের পবিত্র রক্ত বৃথা যাবে না। এই বর্বরতা অবৈধ ইসরাইলের পতনকে তরান্বিত করবে। একই সাথে পৃথিবির বিভিন্ন প্রান্তে ইসলামের জন্য জীবন দানকারীদের রক্তও সময়ের ব্যবধানে কথা বলবে ইনশাআল্লাহ। আমরা অবিলম্বে ইসরাইল ও সাম্রাজ্যবাদীদের বর্বরতা থেকে ফিলিস্তিনিসহ মজলুম মুসলমানদের রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে জাতিসংঘ, ওআইসি, আরবলীগ, মানবাধিকার সংস্থা ও বিশ্ববাসীর প্রতি আহবান জানাচ্ছি।