মঙ্গলবার, ১৫ মে ২০১৮

জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তর ও ইসরাইল কর্তৃক নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যার নিন্দা ও প্রতিবাদ

আমেরিকা কর্তৃক মুসলমানদের অতি পবিত্র স্থান জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে দূতাবাস স্থানান্তর ও ফিলিস্তিনিদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইল কর্তৃক গুলি চালিয়ে প্রায় ৪১ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা এবং প্রায় ১৯০০ জনকে আহত করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত ও সেক্রেটারি জেনারেল মোবারক হোসাইন বলেন, মুসলমানদের অতি পবিত্র স্থান জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সারা বিশ্বের শান্তি প্রিয় মানুষকে ক্ষুদ্ধ করেছিল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। মি. ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তকে জাতিসংঘ, ওআইসি, ইউরোপিয় ইউনিয়ন, আরবলীগ, ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানিসহ সকল দেশ ও সংস্থা প্রত্যাখ্যান করে এ অন্যায় সিদ্ধান্ত বাতিলের আহবান জানিয়েছিল। ফিলিস্তিনিরা জীবন দিয়ে তার প্রতিবাদ করেছে। এর পরও জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তরের এ অবিবেচক কান্ডে গোটা মুসলিম উম্মাহ সাথে আমরাও বিক্ষুব্ধ, মর্মাহত ও বিস্মিত। তার এ অন্যায় সিদ্ধান্ত উস্কানিমূলক, যা মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তির দাবানল ছড়িয়ে দিয়েছে। ইতিমধ্যে ফিলিস্তিনবাসী এ সিদ্ধান্তকে ঘৃণার সাথে প্রত্যাখ্যান করে রাজপথে নেমে এসেছে। অন্যদিকে নিরীহ নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি মুসলমানদের উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ইতিমধ্যে ৪১ ফিলিস্তিতিনিকে হত্যা ও প্রায় ১৯০০ জনকে আহত করেছে ইসরাইলি সন্ত্রাসী বাহীনি। জেরুজালেম শুধু কোন স্থানের নাম নয় বরং সারা বিশ্বের মুসলমানদের প্রথম কেবলা ও প্রাণের স্পন্দন পবিত্র মাসজিদুল আকসা সেখানে অবস্থিত। ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক ভাবে এই পবিত্র স্থান মুসলমানদের বলে স্বীকৃত।

অন্যদিকে ইসরাইল একটি অবৈধ ও সন্ত্রাসী রাষ্ট্র তা বিশ্ব স্বীকৃত। যেই ইসরাইলি রাষ্ট্রের বৈধতাই নেই সেখানে সেই দেশের রাজধানী এমন একটি স্থানকে ঘোষণা করে দূতাবাস স্থানান্তর চরম দায়িত্বহীনতা, অবিবেচক ও উস্কানিমূলক কাজ। তার এই সিদ্ধান্ত বিশ্ববাসী মেনে নেবেনা। অন্যদিকে আমেরিকার মত সাম্রাজ্যবাদী শক্তির নীতিহীন মদদদের কারণে অবৈধ সন্ত্রাসী ইসরাইল বার বার ফিলিস্তিনি মুসলমানদের উপর গণহত্যা চালাচ্ছে। দুঃখজনক ভাবে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা এ বর্বরতা বন্ধ করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করছে না। মুসলিম নেতৃবৃন্দও ফিলিস্তিন ও পবিত্র প্রথম কিবলা রক্ষায় কার্যকর ভুমিকা পালন করছে না। যা ইসরাইলের বর্বরতাকে আরও উস্কে দিয়েছে। এটি মানবতার জন্য চরম লজ্জাজনক বিষয়। ইসরাইল নির্বিচারে মুসলমনাদের হত্যা করে ফিলিস্তিনিদের ধ্বংস করার চেষ্টা করছে, যা কখনো সফল হবে না। মসজিদের পবিত্রতা রক্ষায় ইহুদীবাদিদের গুলিতে শাহাদাৎ বরণকারীদের পবিত্র রক্ত বৃথা যাবে না। এই বর্বরতা অবৈধ ইসরাইলের পতনকে তরান্বিত করবে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বহু আগে থেকেই আরব বিশ্বকে অস্থিতিশীল করার অশুভ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে চলেছে মার্কিন সরকার ও ইসরাইল। তারা ইসলাম ও মুসলমানদের ধ্বংস করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। যা এ হত্যাকান্ডের মাধ্যমে আবারো প্রমাণ হয়েছে। তাদের এ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো মুসলিম উম্মাহর পবিত্র দায়িত্ব। আমরা অবিলম্বে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তার এই ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকান্ড বাতিল করার জন্য আহবান জানাচ্ছি। একই সাথে এই উস্কানিমূলক সিদ্ধান্ত বাতিল ও সন্ত্রাসী ইসরাইলের লাগাম টেনে ধরতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বকে সুদৃঢ় অবস্থান গ্রহণের আহবান জানাচ্ছি।