বুধবার, ১৬ মে ২০১৮

ফিলিস্তিনিদের অধিকার রক্ষায় মুসলিম বিশ্বকে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, ফিলিস্তিনের সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ ফিলিস্তিনের সংকট দূর করতে আন্তরিক নয় তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। এ অবস্থায় মুসলিম বিশ্বের সুদৃঢ় ঐক্য ছাড়া ফিলিস্তিনিদের মুক্তি সম্ভব নয়। তাই ফিলিস্তিনিদের অধিকার রক্ষায় মুসলিম বিশ্বকে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।

তিনি স্থানীয় এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির বরিশাল অঞ্চল পশ্চিমের সদস্য শিক্ষা শিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান সম্পাদক নাজমুস শাহাদাতের পরিচালনায় ও পটুয়াখালী শহর সভাপতি জায়েদ বিন ইউসুফের ব্যবস্থাপনায় শিক্ষা শিবিরে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম। এসময় পটুয়াখালী জেলা সভাপতি কবির হোসাইন, বরগুনা জেলা সভাপতি হাফেজ ইলিয়াস হোসেন, পিরোজপুর জেলা সভাপতি আল আমিন শেখ, ঝালকাঠি জেলা সভাপতি এনামুল হকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শিবির সভাপতি বলেন, ১৯৪৮ সালে অবৈধ ইসরাইল জন্মের পর থেকেই ভয়াবহ সংকটে পড়ে আছে ফিলিস্তিনের জনগণ। ইসরাইল প্রতিনিয়ত তাদের উপর নির্যাতন নিপীড়ণ ও আগ্রাসন চালিয়ে আসছে। ফিলিস্তিনিদের তাদের ভিটামাটি থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। নতুন বসতি স্থাপনের নামে ফিলিস্তিনিদের নিজেদের বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। অবরোধ করে গাজা উপত্যকাকে উন্মুক্ত কারাগারে পরিণত হয়েছে। বহুবার ফিলিস্তিনের নিরীহ জনগণের উপর বর্বর গণহত্যা চালিয়েছে ইসরাইল। অন্যায় ভাবে কারারুদ্ধ করে রেখেছে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে। মুসলমানদের প্রথম কেবলা বায়তুল মোকাদ্দাসের চত্তরকে বহুবার মুসলমানের রক্তে রঞ্জিত করেছে এ হায়েনারা। বরাবরই বায়তুল মোকাদ্দাসে নামায আদায় করতে বাধা দিচ্ছে। আজান বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। যুগের পর যুগ এত জুলুম নির্যাতন সহ্য করেও ফিলিস্তিনিরা বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে কোন ন্যায় বিচার পায়নি। বরং আশ্বাস দিয়ে বছরের পর বছর তাদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। আমেরিকাসহ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি গুলো বরাবরই অবৈধ ইসরাইলের আগ্রাসন ও গণহত্যার পক্ষে সাফাই গেয়েছে। জাতিসংঘের মত সংস্থা গুলো দায়সারা বক্তব্য দিয়ে দায় এড়িয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় ফিলিস্তিনের সংকট উত্তরণে মুসলিম বিশ্বকে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।

তিনি বলেন, রাসূল সা. বলেছে, ‘মুসলিম জাতি এক ব্যক্তির ন্যায়। এক দেহের কোনো অঙ্গ ব্যথিত হলে সারা শরীর বা অঙ্গই সে ব্যথা উপলব্ধি করে’। এ অবস্থায় ইহুদীবাদী ইসরাইলের বর্বরতার শিকার প্রথম কেবলার প্রহরী ফিলিস্তিনি নারী, শিশু, বৃদ্ধ এতিমদের বুকফাটা আর্তনাদের যখন আকাশ বাতাস ভারী হচ্ছে তখন মুসলিম বিশ্ব আর নিষ্ক্রিয় থাকতে পারে না। ইসরাইলের হাত থেকে ফিলিস্তিনিদের মুক্তি ও মসজিদুল আকসার সম্মান রক্ষা শুধুমাত্র নিপীড়িত ফিলিস্তিনিদেরই দায়িত্ব নয়, এ দায়িত্ব গোটা মুসলিম উম্মাহর। মুসলিম বিশ্বে নানা বিষয় নিয়ে মতবেদ থাকতে পারে। কিন্তু রাসূল সা. সহ বহু নবী পয়গম্বরের স্মৃতি বিজড়িত প্রথম কেবলা বায়তুল মোকাদ্দাস সকল মুসলমানের। এ ক্ষেত্রে রাসূল সা. উম্মত আপোষ করতে পারেনা। আর কারো দিকে তাকিয়ে না থেকে অবিলম্বে ওআইসি’সহ মুসলিম নেতৃবৃন্দকে সুদৃঢ় ও কার্যকর কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, মুসলমানদের অধিকার রক্ষায় মুসলমানদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে।