সোমবার, ২৮ মে ২০১৮

দূর্নীতি ও মাদককে সমাজ থেকে বিদায় জানাতে মেধাবীদের বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, মেধাবীদের চমৎকার ফলাফলের সাথে বঞ্চিত মানুষের বহু প্রত্যাশা জড়িত। আমাদের সম্ভাবনার শেষ নেই অভাব শুধু নৈতিকতা সম্পন্ন যোগ্য নাগরিক ও নেতৃত্বের। কিন্তু দূর্নীতি যেমন জনগণকে বঞ্চিত করছে তেমনি অসংখ্য সম্ভাবনা ও মেধা মাদকের ছোবলে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এখন সময় এসেছে রুখে দেয়ার। এক্ষেত্রে দূর্নীতি ও মাদককে সমাজ থেকে বিদায় জানাতে মেধাবীদের বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে।

তিনি আজ সকাল ১০টায় ছাত্রশিবির কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার উদ্যোগে নাঙ্গলকোটের স্থানীয় এক মিলনায়তনে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ ৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা জেলা দক্ষিণ সভাপতি জোবায়ের ফয়সাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লা মহানগর সেক্রেটারি শাহাদাত ইবনে সালেহ, বান্দরবান জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি হারুনুর রশিদ, পেরিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সহিদ উল্লাহ মিয়াজী, নাঙ্গলকোট উপজেলা উত্তর জামায়াতের আমীর এস,এম মহিউদ্দীন, নাঙ্গলকোট দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি জামাল উদ্দিন, উত্তর জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ইউসুফ আলী প্রমূহ।

শিবির সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের একটি অযুত সম্ভাবনার দেশ। কিন্তু সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে আমাদের বিদ্যমান সম্পদ যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না। বরং জনগণের সম্পদ গুটি কয়েক দূর্নীতিবাজরা ভোগ দখল করছে। বঞ্চিত হচ্ছে আপামর জনগণ। এই অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি স্বাধীনতার পর থেকেই চলে আসছে। অথচ আমাদের রয়েছে পর্যাপ্ত মেধা সম্পদ, আছে জন ও প্রাকৃতিক সম্পদ। শুধু মাত্র মেধার সাথে নৈতিকতার সংমিশ্রণের অভাবে জাতি কাঙ্খিত নাগরীক ও নেতৃত্ব পাচ্ছেনা। ফলে যুগের পর যুগ আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। এ অবস্থায় মেধাবীদের এই সাফল্যে আমরা আনন্দিত ও আশান্বিত। কারণ একটি ছাত্র সংগঠন হিসেবে আমরা স্বপ্ন দেখি একটি ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত সুন্দর দেশ গড়ার। আর তা কোন কথার ফুলঝুড়ি হবে না। সমৃদ্ধ দেশ গড়তে প্রয়োজন নৈতিকতা সম্পন্ন যোগ্য নাগরিক। ছাত্রশিবির জাতিকে এমন নাগরিক উপহার দেয়ার জন্যই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সম্ভাবনার এ দেশকে সমৃদ্ধ ও দূর্নীমুক্ত করতে মেধাকে সর্বোচ্চ কাজে লাগাতে হবে। আর মেধাকে কাজে লাগাতে মেধাবীদেরকে কোরআনের আলোকে গড়ে উঠতে হবে। অন্যথায় এ মেধা জাতি বঞ্চনার কারণ হবে। মেধাবীরা মেধা থাকার পরও দুনিয়াতে অভিশপ্ত ও পরকালে চরম ভাবে ব্যর্থ হবে। মেধাবীরা যদি নৈতিকতা ও মেধার সমন্বয় ঘটিয়ে এগিয়ে যায় তাহলে দেশের এ দুরবস্থা কাটিয়ে উঠতে বেশি সময় লাগবে না।

তিনি আরো বলেন, জাতির প্রত্যাশা পূরণে মেধাবীদের বুদ্ধিমত্তার সাথে পথ চলতে হবে। আগামী দিন গুলোতে নানা পথের হাতছানি আসবে। ছাত্রদেরকে দৃষ্টি রাখতে হবে কারা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, মাদক, অশ্লীলতা ও ক্যারিয়ার ধ্বংসের পথে আহবান করছে। সকল অশুভ শক্তির হাতছানি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে কোরআনকে ঢাল স্বরুপ গ্রহণ করতে হবে। চলমান মাহে রমজান কোরআনের আলোকে ব্যক্তি গঠনের সবচেয়ে উত্তম সময়। মেধাবীদের উচিৎ মাহে রমজানকে নিজেকে গঠনে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো। ছাত্রশিবির দেশের ছাত্রসমাজকে সাথে নিয়ে মেধা ও নৈতিকতার সমন্বয় ঘটিয়ে দেশ পরিচালনার উপযোগী এক দল মানুষ গড়তে চায়। ছাত্রশিবির বিশ্বাস করে একজন মুসলমানকে দুনিয়া ও আখিরাত উভয় ক্ষেত্রেই সফল হতে হবে। তাই কোরআনের আলোকে মেধাবী ও নৈতিকতা সম্পন্ন নাগরিকের অভাব পূরণ করতেই ছাত্রশিবির তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ছাত্রশিবির এ প্রচেষ্টার মাধ্যমে জাতিকে অনেক মেধাবী ও নৈতিকতা সম্পন্ন নাগরিক উপহার দিতে সক্ষম হয়েছে। জাতির প্রত্যাশা পুরণে আমাদেরকে আরও বহু পথ পাড়ি দিতে হবে। আর তার জন্য আজকের মেধাবীদেরকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

তিনি স্থানীয় মেধাবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, কুমিল্লা জেলার মধ্যে লাঙ্গলকোট একটি অবহেলিত অঞ্চল। এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যন্নয়ন ও স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব আজকের মেধাবীদেরই। তাই প্রত্যাশা পূরণে মেধা ও নৈতিকতা সম্পন্ন জীবন গঠন করে নাঙ্গকোটের মানুষের কল্যাণ ও সমাজ উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।