শুক্রবার, ০৩ আগস্ট ২০১৮

অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবী মেনে নিন -শিবির সভাপতি

অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবী মেনে নেয়ার আহবান জানিয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, রাষ্ট্রীয় ভাবে যে সুযোগ ও অধিকার গুলো শিক্ষার্থীসহ সবার পাওয়ার কথা সে অধিকার আদায়ে রাজপথে নেমেছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। যা সরকারের জন্য লজ্জার বিষয়। শিক্ষার্থীরা রাজপথে বৃষ্টিতে ভিজে অবস্থান নিলেও সরকার শিক্ষার্থীদের দাবী পূর্ণাঙ্গ ভাবে না মেনে সময় ক্ষেপন করছে। একই সাথে নৌ মন্ত্রীও বহাল তবিয়েতেই আছে। অবিলম্বে নৌ মন্ত্রীর পদত্যাগ ও শিক্ষার্থীদের দাবী মেনে নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিরসন করুন। 

তিনি আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবিরের মাসিক সেক্রেটারিয়েট বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সেক্রেটারি জেনারেল মোবারক হোসাইনের পরিচালনায় বৈঠকে কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, দাওয়াহ সম্পাদক শাহ মাহফুজুল হক, সাহিত্য সম্পাদক সালাউদ্দিন আইয়ুবীসহ সেক্রেটারিয়েট সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শিবির সভাপতি বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রতিটি দাবী যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত। দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা, ফিটনেস বিহীন গাড়ী চলাচল বন্ধ করা, লাইসেন্স-বিহীন গাড়ীর অনুমোদন না দেয়াসহ দাবী গুলো শুধু শিক্ষার্থীদেরই নয় বরং এগুলো জনদাবী। কিন্তু সরকার শিক্ষার্থীদের ধোকা দেয়ার চেষ্টা করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সরকার শিক্ষার্থীদের সব দাবী মেনে নিয়েছে। সব দাবী মেনে নিলে নৌ মন্ত্রী এখনো বহাল তবিয়েতে আছেন কিভাবে? কিভাবে ছাত্রলীগ যুবলীগ পরিবহন শ্রমিকরা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে পার পেয়ে যাচ্ছে? কারওয়ান বাজারে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গাড়ী ভাংচুরের সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছে ছাত্রলীগ কর্মী। এমনকি আজও শুধু বাস নয় পুলিশের গাড়ীও লাইসেন্স বিহীন চলছে। সুতরাং দাবী মেনে নেয়ার ঘোষণা সরকারের ধোকাবাজী তাতে কোন সন্দেহ নেই। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের বুঝানোর জন্য সন্ত্রাসী ছাত্রলীগকে দায়িত্ব দিয়েছেন। যারা গত বুধবারও যাত্রাবাড়ীতে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে। যারা সামান্য কারণে একে অন্যের উপর হামলে পড়ে, বহু ছাত্রের রক্তে যাদের হাত রঞ্জিত, যারা প্রকাশ্যে শিক্ষার্থীদের শ্লীলতাহানী করেছে। এরা ছাত্রসমাজের প্রতিটি যৌক্তিক আন্দোলনে হামলা নির্যাতন করেছে। ছাত্রলীগের প্রতিটি হামলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নিরব ভূমিকা পালন করেছেন। এখন তাদেরকেই এ দায়িত্ব দেয়া শুধু হাস্যকর বিষয়ই নয় বরং একটি স্পষ্ট অশনিসংকেতও। প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগকে বুঝানোর না হামলা করার দায়িত্ব দিয়েছেন তা নিয়ে অভিভাবক এবং ছাত্রসমাজের মাঝে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের সাথে সর্বস্তরের ছাত্র জনতা একাত্বতা ঘোষণা করেছে। সকল শ্রেণী পেশার মানুষ রাজপথে নেমে এসে শিক্ষার্থীদের সাথে সম্পৃক্ততা প্রকাশ করেছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দাবী না মেনে সময় ক্ষেপন করলে তা কারো জন্যই ভাল হবে না। বিদ্রুপ ও দম্ভোক্তি করার পরও যদি নৌ মন্ত্রী মন্ত্রীত্বে বহাল থাকেন তাহলে সমস্যা আরো প্রকট হবে। আমরা সরকারের প্রতি আহবান রেখে বলতে চাই, যেখানে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মহান সংসদে দাঁড়িয়ে ছাত্রসমাজকে দেয়া ওয়াদা অবলীলায় ভঙ্গ করেছেন। সেখানে শিক্ষার্থীরা আপনাদের ধোকাবাজী বিশ্বাস করে না। অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের দাবীর বাস্তবায়ন করে তাদের ক্লাসে ফিরিয়ে নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারী ছাত্রলীগ, যুবলীগ, পুলিশ ও পরিবহন শ্রমিকদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। হামলায় আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। বাসচাপায় নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সর্বপরি শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।