শনিবার, ০৩ নভেম্বর ২০১৮

রাতের আধারে পুলিশ কর্তৃক চট্টগ্রামে শিবিরের বন্ধ অফিসে বোমা বিষ্ফোরণ ও নাটকের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি

এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত, সেক্রেটারি জেনারেল মোবারক হোসাইন, চট্টগ্রাম মহানগরী উত্তর সভাপতি আহমেদ সাদমান সালেহ ও সেক্রেটারি আ স ম রায়হান বলেন, অবৈধ সরকারের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা নগর পুলিশের উপকমিশনার মেহেদি হাসানের তত্ত্বাবধানে আবারো বোমা উদ্ধার নাটকের জন্ম দিয়েছে। আজ সন্ধায় নগরী উত্তর শিবির কার্যালয়ে নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মেহেদি হাসানের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়ে শিবির অফিসের আশপাশের সকল রাস্তা বন্ধ করে দেয়।

পরে কার্যালয়ে ভাংচুর ও তান্ডব চালিয়ে নিজেরাই ফাঁকা গুলি ছুঁেড়, বোমা ফাটিয়ে, বোমা বিস্ফোরণের মিথ্যা বানোয়াট নাটক সাজিয়েছে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিজেরা গুলি ছুড়ে বোমা ফাটিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের ডেকে এনে নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে। একটি বন্ধ অফিসকে কেন্দ্র করে বিপুল সংখ্যক পুলিশ এনে এই নাটক সাজানোর পেছনে বড় কোন ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে আমরা মনে করছি। পুলিশের এমন ঘৃন্য অপকর্মের নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। এর আগেও ঢাকায় বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যলয়ে বিএনপি’র শীর্ষ নেতাদের ঘিরে রেখে বোমা উদ্ধারের নাটক করেছিল তৎকালিন এডিসি ও বর্তমান নগর পুলিশের উপকমিশনার মেহেদি হাসান। তার এই অপকর্ম তখন সারাদেশে ব্যপক সমালোচিত হয়েছিল ও পুলিশের প্রতি মানুষের ঘৃনার বহি:প্রকাশ ঘটেছিল। তাছাড়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হলে তিনি তান্ডব চালিয়েছেন।

ছাত্রলীগের ক্যাডারের ভূমিকায় থেকে তিনি হল থেকে বৈধ ছাত্রদের বিতারিত করেছেন। তিনি জায়গা পরিবর্তন করলেও নীতিহীন ঘৃন্য অবস্থান পরিবর্তন করেননি। যার আরেকটি নিকৃষ্ট উদাহরণ শিবির অফিসকে কেন্দ্র করে এই বোমা বিষ্ফোরণের নাটক। মূলত অবৈধ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এ অফিসটি বন্ধ রয়েছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখেও পুলিশ এই বন্ধ অফিসে অভিযান চালিয়ে ভাংচুর করেছে। তখন সেখানে কিছুই পায়নি পুলিশ। পুলিশের হয়রানীর কারণে এ অফিসটি বহুদিন থেকেই বন্ধ রয়েছে। অফিসটিকে সব সময়ই পুলিশ তাদের নজরধারীর মধ্যে রাখে।

যে অফিসটি দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ এবং পুলিশি পাহারায় রয়েছে সেখানে কিভাবে বোমা বিষ্ফোরণ ঘটতে পারে নিয়ে এলাকাবাসী হতবাক ও ক্ষুদ্ধ। আসলে পুলিশ তাদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে এই বন্ধ অফিসকে বেছে নিয়েছে। ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে বেআইনি ভাবে গুম করে রাখা, অস্বীকার করা, অস্ত্র জুড়ে দিয়ে নাটক সাজানোর মত ঘৃন্য বিষয় গুলো জনগণের সামনে বহু আগেই উন্মোচন হয়েছে এবং এ জন্য জনগণের ধিক্কার কুড়িয়ে যাচ্ছে পুলিশ। এখন নতুন আঙ্গিকে পুরোনো নাটক নির্মাতা বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা মেহেদি হাসানকে দিয়ে চট্টগ্রামে শিবিরের অফিসে নাটক সাজানো হয়েছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, অফিস বন্ধ অবস্থায় রাতের আধাঁরে হীন উদ্দেশ্যেই নাটক সাজানোর জন্যই এই অভিযান পরিচালনা করেছে। অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী সরকারের আজ্ঞা পালন করতে গিয়ে পুলিশ দেশের স্বাভাবিক পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। দেশের আইনের প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল হয়ে ছাত্রশিবির নিয়মতান্ত্রিক ছাত্রকল্যাণ ও গঠনমূলক কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছে। এসব কর্মসূচি পালন করতে আইনি কোন নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও আওয়ামী স্বৈরাচারী সরকার তাদের দলীয় সন্ত্রাসী ও দেশের খেটে খাওয়া শ্রমিকের ঘাম ঝরা টাকায় লালিত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ছাত্রশিবিরের পেছনে লেলিয়ে দিয়েছে। যা অনাকাঙ্খিত ও অতি নীচু মানসিকতার পরিচায়ক।

নেতৃবৃন্দ বলেন একটি আদর্শিক ছাত্র সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই ছাত্রশিবির ছাত্রদের মেধার চর্চা লালনে প্রয়োজনীয় সহায়তা করে আসছে। কিন্তু সরকার ও পুলিশ বরাবরই ছাত্রশিবিরের গঠনমূলক কর্মকান্ডে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আসছে। আমরা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তল্লাশীর নামে এই জঘণ্য কর্মকান্ড বন্ধ করার জোর দাবী জানাচ্ছি। একই সাথে ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে বেআইনি কর্মকান্ড বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।