বুধবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৫

বাংলাদেশের জঙ্গিবাদ আ.লীগেরই সৃষ্টি

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারী জেনারেল আতিকুর রহমান বলেন, গণতন্ত্র ও জনগণের মৌলিক অধিকারের হত্যা, সর্বক্ষেত্রে অপশাসন এবং সীমাহীন ব্যর্থতা ঢাকতে ও রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে জঙ্গিবাদের জিগির তুলছে আ.লীগ। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী বাংলাদেশের জঙ্গিবাদ আ.লীগেরই সৃষ্টি।

তিনি আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে ২৮শে অক্টোবর পল্টন ট্রাজেডি দিবস উপলক্ষে ছাত্রশিবির আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ইয়াছিন আরাফাতের পরিচালনায় মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক আহমেদ সালমান, প্লানিং এন্ড ডেভোলপমেন্ট সম্পাদক শাহিন আহমেদ খান, স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক মতিউর রহমান প্রমুখ।

সেক্রেটারী জেনারেল বলেন, দেশ-বিদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে অপপ্রচারের এমন কোন অপকৌশল নেই যা আ.লীগ গ্রহণ করেনি। সেই অপকৌশলেরই একটি অংশ এই জঙ্গিবাদের জিগির। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী দেশ-বিদেশে নানা বক্তব্য দিয়ে দেশকে জঙ্গিবাদের ঘাটি হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু দেশে জঙ্গিবাদের মূল হুতা আ.লীগই। ক্ষমতায় যেতে ও ক্ষমতায় টিকে থাকতে এমন কোন অপকর্ম নেই যা আওয়ামীলীগ করেনি। তারা নিজেদের প্রয়োজনেই জঙ্গিবাদের জন্ম দেয় এবং পৃষ্ঠপোষকতা করে। সম্প্রতি আওয়ামী ওলামা লীগের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের মধ্যে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের উপস্থিতির দাবী করে। তাছাড়া অনেক কেন্দ্রীয় নেতার সাথে জঙ্গিদের পারিবারিক সম্পর্কের কথা দেশবাসী ভূলেনি। বরাবরই আওয়ামীলীগ দেশে জঙ্গিবাদের দায়ভার জামায়াত-শিবিরের ঘাড়ে চাপিয়ে প্রকৃত দোষীদের আড়ালের চেষ্টা করে। কিন্তু, ইতিহাসের দায়ভার আওয়মীলীগকে অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে।

তিনি ২৮শে অক্টোবরে পল্টন ট্রাজেডির কথা উল্লেখ করে বলেন, সেদিন দেশের রাজনীতির ইতিহাসে নৃশংস, হৃদয় বিদারক, লোমহর্ষক ও মানব ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সূচনা করে আওয়ামীলীগ। সেদিন প্রকাশ্যে রাজপথে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করে আওয়ামীলীগ বর্বরতার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তা শুধু বাংলাদেশই নয় বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। পিটিয়ে হত্যা করে মৃত লাশের উপর নৃত্য করা কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে সম্ভব নয়। আওয়ামীলীগ এ ঘটনার মধ্যদিয়ে নিজেদের প্রকাশ্য জঙ্গি রূপ প্রদর্শন করেছে। শুধু তাই নয়, তারা বিচার থেকে বাচতে সরকারে এসে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সকল মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। খুনিদেরকে দেয়া হচ্ছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা। কিন্তু আমরা দৃঢ কন্ঠে বলতে চাই সময়ের ব্যবধানে খুনিদেরকে অবশ্যই বিচারের কাঁঠগড়ায় দাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, ২৮শে অক্টোবরের পরেও রাষ্ট্রীয় ও দলীয় শক্তি ব্যবহার করে নৃশংসতা চালিয়েছে তারা। উদ্দেশ্য একই, আর তা হলো আল্লাহর জমিন থেকে ইসলামী আন্দোলনকে নির্মূল করে দেয়া। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে প্রমাণিত যে, তাদের এই পরিকল্পনা বুমেরাং হয়েছে। বাংলাদেশের যেসব প্রান্তরে শহীদের খুন ঝরেছে, সেসব প্রান্তরেই আন্দোলন গতিশীল হয়েছে, গণভিত্তি রচিত হয়েছে। ভিন্ন দল-মত ও সাধারণ মানুষ ইসলামী আন্দোলনে দ্রুত শরীক হয়েছে। আ.লীগ যদি ভেবে থাকে খুনের দায় থেকে তারা মুক্ত হয়ে গেছে তাহলে তারা ভূল করছে। দেশ ও ইসলাম প্রিয় জনগণ খুনিদের একবিন্দু ছাড় দিতে রাজি নয়। সময়ের ব্যবধানে খুনিদের বিচারের কাঁঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে প্রতিফোঁটা রক্তের হিসাব কড়ায় গন্ডায় আদায় করা হবে ইনশাআল্লাহ। আমরা খুনিদের স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, খুন জুলুম নির্যাতন করে ন্যায় প্রতিষ্ঠার পথ থেকে আমাদের একবিন্দু পরিমাণ সরানো যাবে না। বরং শহীদেরা আমাদের প্রেরণার সুউচ্চ মিনার। ইসলামী সমাজ বিনির্মাণের মাধ্যমে শহীদদের স্বপ্ন পূরণে যে কোন ত্যাগ স্বীকারে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

সংশ্লিষ্ট