বুধবার, ০৪ মে ২০১৬

প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে দেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করেছে সরকার

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান বলেছেন, সমৃদ্ধ সোনার বাংলার বদলে দেশ এখন লাশের বাংলায় পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় ভাবে দেশের নিরপরাধ ছাত্রজনতাকে খুন করা হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে দেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করেছে সরকার।

তিনি আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবিরের মাসিক সেক্রেটারীয়েট বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মোবারক হোসেনের পরিচালনায় বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল ইয়াছিন আরাফাত সহ সেক্রেটারীয়েট সদস্য বৃন্দ।

শিবির সভাপতি বলেন, সরকারের পরিকল্পিত অপশাসন, অবিচার ও হত্যাযজ্ঞে দেশের প্রতিটি শ্রেণী পেশার মানুষ আজ ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে দিন যাপন করছে। অবৈধ সরকারের সন্ত্রাসী ও পুলিশ বাহিনীর যৌথ কিলিং মিশনের শিকার হয়ে ইতিমধ্যেই নিরাপরাধ মেধাবী ছাত্রসহ অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। শহর বন্দর গ্রাম প্রতিটি জনপদে সুপরিকল্পিত ভাবে নির্বিচারে ছাত্রজনতাকে হত্যা করে চলেছে। সম্প্রতি ঝিনাইদহে বর্বও হত্যাযজ্ঞ সংগঠিত করেছে অবৈধ সরকার। সেখানে অল্প সময়ের ব্যবধানে মাদ্রাসা শিক্ষক আবু হুরায়রা, শিবির নেতা হাফেজ জসিম উদ্দিন, আবু যর গিফারী, শামিম হোসেন ও সোহানুর রহমানকে আটকের পর গুম করে হত্যা করেছে পুলিশ। বিগত সময়গুলোতে ঝিনাইদহে পুলিশ পরিচয়ে ২৭ জনকে অপহরণ করার পর ২৪ জনের লাশ পাওয়া গেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিকল্পিত ভাবে কিলিং মিশন পরিচালনার মাধ্যমে অসংখ্য ছাত্র ও জনতাকে খুন করেছে সরকার। দেশের খাল বিল ডোবা নালা এখন নিরাপরাধ মানুষের লাশের বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে। কারো নূন্যতম নিরাপত্তা নেই।দেশের প্রতিটি মানুষ তাদের নিজের ও সন্তানদের জীবন নিয়ে শঙ্কিত।

তিনি বলেন, সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে তার বাসার সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। একই কায়দায় রাজধানীতে হত্যা করা হয় জুলহাস ও তনয়কে। প্রকাশ্যে এইসব হত্যাকন্ডের ঘটনা ঘটলেও প্রকৃত অপরাধী কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার প্রেক্ষিতে বিদেশী গণমাধ্যম গুলো ঢাকার পরিস্থিতি ”যুদ্ধাবস্থার চাইতেও ভয়াবহ” উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি টাঙ্গাইলে হিন্দু এক দর্জিকে কুপিয়ে হত্যাকরা হয়। কিন্তু সর্ব ক্ষেত্রেই প্রকৃত খুনীরা থাকছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। অপরদিকে সরকার নিজেদের ব্যর্থতাকে আড়াল করতে বিরোধী দলের নেতা কর্মীদেরকে গ্রেপ্তার করছে। যার মাধ্যদিয়ে প্রকৃত খুনীদেরকে আড়াল করে হত্যাকান্ডকে আরো উৎসাহিত করা হচ্ছে বলে আমরা মনে করি।

তিনি আরো বলেন, শুধু সন্ত্রাসী ও পুলিশ দিয়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের খুন করেই সরকারের প্রতিহিংসা মেটেনি। বিচারিক হত্যাকান্ডেও এই সরকার মানব সভ্যতার ইতিহাসে নিকৃষ্ট নজির স্থাপন করেছে। আদর্শিক ভাবে পরাজিত করতে না পেরে আইন আদালতকে ইচ্ছামত ব্যবহার করে হত্যা করা হয়েছে দেশের ইসলামী আন্দোলনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে। এখন বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের শীর্ষ নেতা, সাবেক সফল মন্ত্রী, বাংলার ইসলাম প্রিয় ছাত্রজনতার প্রিয় মুখ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে একই কায়দায় হত্যার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমরা বলব, অবৈধ সরকার সৃষ্ট অপশাসনের সময়ই শেষ সময় নয়। সিমাহীন জুলুম নির্যাতনই শেষ অধ্যায় নয়। অবশ্যই সময়ের পরিবর্তন ঘটবে। কিন্তু জাতি সৈরাচারী বাকশালীদের ভূলে যাবেনা। বরং প্রতিটি জুলুম নির্যাতনের হিসাব কড়ায় গন্ডায় আদায় করবে। অবৈধ সরকার তাদের পাপের প্রায়শ্চিত করতে করতেই ইতিহাসের নিকৃষ্ট জায়গায় স্থান করে নিবে।

সংশ্লিষ্ট