মাওলানা এনায়েত কবির

প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “আমি নবীয়ে করিম (সা)-কে একদা জিজ্ঞাসা করলাম যে, আল্লাহ তায়ালার কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমলসমূহ কী কী?

উত্তর প্রদানে তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালার কাছে বান্দার সবচেয়ে প্রিয় আমলের অন্যতম
১. সময়মতো সালাত আদায় করা। ইবনে মাসউদ (রা) বলেন, আমি অনুরূপ আর একটি আল্লাহর প্রিয় নেক আমল জানতে চাইলাম নবীজি (সা) বললেন
২. মাতা-পিতার সাথে সদাচরণ করা। সাহাবী বলেন, আমি আরো একটি প্রিয় আমল বলার জন্য অনুরোধ করলাম, তিনি বলেন
৩. আল্লাহর পথে সংগ্রাম করা।”
(সহীহ বুখারী ও মুসলিম)

আমরা জানি যে নবীয়ে করিম (সা)-এর পবিত্র জবান থেকে উচ্চারিত প্রতিটি কথা, তার জীবনের প্রতিটি কর্ম ও আমল এবং কোন কাজে তার পবিত্র মতামত ও সমর্থনকে- হাদিস ও সুন্নাহর মধ্যে শামিল করা হয়েছে।

এ হাদিসও রাসূল (সা)-এর এক প্রকার ওহি। যে ওহিকে ‘গাইরে মাতুলু’বলা হয়। নবুয়তের হায়াতে রাসূল (সা) যা বলেছেন ও করেছেন সব ওহি দিয়ে নিয়ন্ত্রিত ছিল।

যেমন কুরআন শরীফে সূরা নজমে বলা হয়েছে وَمَا يَنْطِقُ عَنْ الْهَوَى، إِنْ هُوَ إِلاَّ وَحْيٌ يُوحَى

অর্থাৎ “তিনি নিজ থেকে কোন শব্দ উচ্চারণ করেননি তা ছাড়া যা তার ওপর ওহি করা হয়নি।” (সূরা নজম : ৩-৪)

সনদ

হাদিসের সনদ আলোচনা হাদিস বিশুদ্ধতার বিচার করার অন্যতম মানদন্ড। হাদিস গ্রন্থ বিশুদ্ধ হওয়া পর্যন্ত বর্ণনা পরম্পরায় যাঁরা রয়েছেন তাঁরা সকলেই সনদ আলোচনার অন্তর্ভুক্ত। এ কঠিন কাজটি সাহাবীদের পরপরই শুরু হলেও ‘হিজরি দ্বিতীয় থেকে হিজরি চতুর্থ শতাব্দী পর্যন্ত এ সময়কে হাদিস সংকলনের গুরুত্বপূর্ণ সময় হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। বলা যায় এটাই হাদিসের সনদ বিচার বিশ্লেষণ ও সংকলনের স্বর্ণযুগ।

এ সময়ে যারা এ অসাধারণ কষ্টসাধ্য বিষয়টিকে সম্পাদন করার জন্য নিজেদের হায়াত তিল তিল করে ব্যয় করেছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম ইমাম আহমদ, ইমাম মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল বুখারী, ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী, ইমাম আহমদ ইবনে শুয়াইব নাসাঈ, ইমাম মুহাম্মদ ইবনে ইয়াযিদ ইবনে মাযাহ প্রমূখ। 

বিশুদ্ধতার দৃষ্টিতে প্রথম স্তরে যে সমস্ত হাদিসের গ্রন্থ রয়েছে তাদের মধ্যে বিশ্ববিখ্যাত হাদিসগ্রন্থের অন্যতম ১. মুয়াত্তা ইমাম মালিক ২. সহীহ বুখারী ৩. সহীহ মুসলিম এ তিনটি গ্রন্থ সনদের বিশুদ্ধতায় তুলনাহীন।

আলোচ্য হাদিসটি ইমাম বুখারী ও মুসলিম দু’জনে তাঁদের প্রসিদ্ধ গ্রন্থে চয়ন করেছেন বিধায় বিশুদ্ধতার মানদণ্ডে প্রথমশ্রেণীর পর্যায়ে।

হাদিসের রাবী

প্রথম রাবী হচ্ছেন সাহিবুল হাদিস। আলোচিত হাদিসের ক্ষেত্রে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) হলেন সাহিবুল হাদিস। সাহাবীদের মধ্যে বিশিষ্ট পাঁচজন আবদুল্লাহ্ (রা) মধ্যে ইবনে মাসউদ অন্যতম। তিনি প্রথম যুগের ইসলাম গ্রহণকারী সাহাবীদের অন্যতম। তিনি আবিসিনিয়ায় ও পরে মদীনায় হিজরতকারীদের একজন। মদীনায় তিনি হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা)-এর সাথে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হন। রাসূলে আকরাম (সা)-এর সাথে তিনি বহু যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন ও বীরত্ব প্রদর্শন করেন। দীর্ঘদিন তিনি কুফার কাজী ছিলেন ও সে জনপদের ইসলামী জ্ঞানের প্রাণপুরুষ হিসেবে বিবেচিত ছিলেন।

ইবনে মাসউদ (রা) ৮৪৮টি হাদিস বর্ণনা করেন এর মধ্যে ৬৪টি হাদিস ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম বিশুদ্ধ সনদে বর্ণনা করেন। শুধু ইমাম বুখারীর সহীহ বুখারীতে ইবনে মাসউদ (রা) থেকে ২১৫টি হাদিস গ্রহণ করেছেন।

তিনি হযরত উসমান (রা)-এর খিলাফতকালে ৩৩ হিজরি এর ৯ রমজান ইন্তেকাল করেন। তখন তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। হয়রত উসমান (রা) তাঁর জানাজার ইমামতি করেন ও জান্নাতুল বাকীর কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

হাদিসের ব্যাখ্যা

ইবনে মাসউদ (রা) নবীজি (সা)-কে বান্দার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রিয় নেক আমল সম্পর্কে জানতে চাইলে রাসূল (সা)-এর জবাবে ৩টি গুরুত্বপূর্ণ আমলে সালেহ সম্পর্কে অবহিত করেন। আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে পৃথিবীর জীবনে দেখে নিতে চায় কারা নেক আমল করে আর কারা বদ আমল করে পৃথিবীর জীবনকে বরবাদ করে। তাই পৃথিবী হচ্ছে নেক আমলের পুঁজি সংগ্রহের সময়।

কুরআনে পাকে আল্লাহতায়ালা বলেন : الَّذِي خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلاً

“যিনি হায়াত ও মৃত্যুর সৃষ্টির মধ্যবর্তী একটি জীবনে তোমাদের পরীক্ষা করবেন কে আমলের দৃষ্টিতে ভাল।” (সূরা মূলক : ২)

রাসূল (সা) যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ নেক আমল সম্পর্কে বলেছেন তার ব্যাখ্যাঃ

সময়মতো সালাত আদায় করা : الصَّلاَةُ لِوَقْتِهَا

’প্রথমত সালাত আদায় প্রসঙ্গে,

‘সালাত’ হচ্ছে ঈমান আনার পর আল্লাহতায়ালার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হুকুম। যে বিষয়ে আল্লাহতায়ালা কুরআনে কারীমে অর্ধশতবারের বেশি তাকিদ করেছেন। অথচ কুরআনে কোন বিষয়ে একবার নির্দেশ এলে তা ফরজ হয়ে যায়।

‘সালাত’ সে বিষয় যে বিষয়ে আল্লাহতায়ালা সকল নবীকে ও সকল ওহিতে নির্দেশ দিয়েছেন। সকল যুগে সকল উম্মতের জন্য সালাতের বিধান ছিল জরুরি, অতীব জরুরি। মুমিনদের জান্নাতে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ আমল- বিনয়ের সাথে সালাত আদায় করা।
قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ، الَّذِينَ هُمْ فِي صَلاتِهِمْ خَاشِعُونَ

“নিশ্চয়ই সে সব মুমিন সফল হবে যারা বিনয়ের সাথে সালাত আদায় করে।” (সূরা মুমিনুন : ১-২)

 

সমগ্র মানবজাতির মধ্যে আল্লাহর গজব এসেছিল তখন মানুষ যখন সালাত আদায় ছেড়ে দিয়েছিল। নবীগণের ইন্তেকালের পর উম্মতেরা যখন তাদের আদর্শ সালাত ত্যাগ করেছে তখন আল্লাহর গজব তাদেরকে ধংস করেছে। কুরআন বলছে  فَخَلَفَ مِنْ بَعْدِهِمْ خَلْفٌ أَضَاعُوا الصَّلاةَ وَاتَّبَعُوا الشَّهَوَاتِ فَسَوْفَ يَلْقَوْنَ غَيّاً

‘‘নবীদের পরে উম্মতের মধ্যে এমন অযোগ্য লোকেরা এলো যাদের জীবন থেকে সালাত বিদায় হয়ে গিয়েছিল তারা ছিল নিজেদের নফসের অনুসারী, তাই তারা বিপর্যয়ের সম্মুখীন হলো।’’ (সূরা মারইয়াম : ৫৯)

‘সালাতের’ বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে রাষ্ট্রনায়কদের ওপর আইন অবতীর্ণ হয়েছে-

الَّذِينَ إِنْ مَكَّنَّاهُمْ فِي الأَرْضِ أَقَامُوا الصَّلاةَ وَآتَوْا الزَّكَاةَ وَأَمَرُوا بِالْمَعْرُوفِ وَنَهَوْا عَنْ الْمُنْكَرِ وَلِلَّهِ عَاقِبَةُ الأُمُورِ

“আমি যখন তাদেরকে জমিনের রাজত্বে প্রতিষ্ঠিত করি তবে তারা সেখানে ১.সালাতের বিধান জারি করবে, ২. জাকাতের আইন চালু করবে, ৩. ন্যায় প্রতিষ্ঠা করবে আর ৪. অন্যায়কে উৎখাত করবে”। (সূরা হজ: ৪১)

এই আইন প্রতিষ্ঠা করা রাষ্ট্র পরিচালনাকারীদের ওপর খোদায়ী ফরমান। আর সালাতের বিধান এখানেও প্রথমে আলোচিত হয়ছে।

আর মুমিনদের ওপর শুধু সালাত প্রতিষ্ঠা ফরজ হয়নি বরং উহার সাথে সালাতের নিয়ম ও সময়কে নির্দিষ্ট করে বিধান অবতীর্ণ হয়েছে।

حَافِظُوا عَلَى الصَّلَوَاتِ وَالصَّلاةِ الْوُسْطَى وَقُومُوا لِلَّهِ قَانِتِينَ

“তোমরা সালাতসমূহের হিফাজত কর বিশেষ করে মধ্যবর্তী সালাত, আল্লাহর সামনে অনুগত গোলামের ন্যায় সালাতে দণ্ডায়মান হও।’’ (সূরা বাকারা : ২৩৮)

উপরের আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালা সালাত হিফাজত ফরজ করেছেন- অর্থাৎ সালাতের সমস্ত আরকান ও আহ্কাম সংরক্ষণ না হলে সালাত যথার্থভাবে সংরক্ষণ সম্ভব নয়। আবার যে সময়ের যে সালাত তাকে সে সময় আদায় না করলেও সালাত হিফাজত হবে না। তাই নির্দিষ্ট সময়ে সালাত আদায় করা ফরজ। কুরআন এ বিষয়ে আরো স্পষ্ট করে বলেছে-

إِنَّ الصَّلاةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ كِتَاباً مَوْقُوتاً

“নিশ্চয়ই সালাতকে নির্দিষ্ট সময়ের সাথে মুমিনদের ওপর ফরজ করা হয়েছে।” (সূরা নিসা : ১০৩) 

 

এ গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত সম্পর্কে প্রথম প্রশ্ন দিয়ে আল্লাহ্তায়ালা বান্দার সাথে কিয়ামতের মাঠে জীবন জিজ্ঞাসা শুরু করবেন।

যারা সালাতের বিষয়ে আল্লাহতায়ালাকে সন্তুষ্ট করতে পারবে তাদের জন্য পরবর্তী বিষয় সহজ হবে। এ হাদিসের মাধ্যমেও স্পষ্ট যে সমস্ত ইবাদাত এর মধ্যে সালাত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

ইচ্ছাকৃতভাবে এক ওয়াক্ত সালাত তরককারী বান্দার সাথে আল্লাহতায়ালা সম্পর্ক ছেদের ঘোষণা দিয়েছেন। নবীয়ে করীম (সা) হযরত মুয়াজ (রা)-কে নসিহত করার সময় এ ভয়াবহ হাদিস বর্ণনা করেন-

قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم لِمُعَاذٍ (رضـ) لاَ تَتْرُكَنَّ صَلوَةً مَكْتُوْبَةً مُتَعَمِّدً فَاِنَّ مَنْ تَرَكَ صَلوةً مَكْتُوْبَةً مُتَعَمِّدًا فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ ذِمَّةُ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ- (رواه احمد)

নবীয়ে আকরাম (সা) হযরত মুয়াজকে বলেন, “মুয়াজ সাবধান কখনও ফরজ নামাজ স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিবে না। যদি ইচ্ছাকৃত এক ওয়াক্ত নামাজ ছেড়ে দাও তবে তুমি বান্দাহ হিসেবে আল্লাহতায়ালার দায়িত্ব থেকে বের হয়ে যাবে।” (মুসনাদে আহমদ)

দ্বিতীয় যে গুরুত্বপূর্ণ ও পুণ্যময়ী আমল সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন তা-

“মাতাপিতার সাথে সদাচরণ করা”- قَالَ بِرُّ الوَالِدَيْن

সকল মানুষের সাথে সদাচরণ নেক আমলের অন্তর্ভুক্ত।

সকল সৃষ্টির মধ্যে একজন সন্তানের জন্য তার নিজ মা-বাবার সাথে ভালো ব্যবহার করা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও পুণ্যময়। যে বিষয়ে আল্লাহতায়ালা কুরআন শরীফে একাধিক স্থানে তাকিদের সাথে বর্ণনা করছেন পিতা-মাতার অধিকার প্রসঙ্গে। তার শরিয়তের পরিভাষায় মা-বাবার সাথে সদাচরণ ফরজের অন্তর্ভুক্ত যা অমান্য করলে গুনায়ে কবিরার পর্যায়ে পড়বে। কুরআন বলছে:

وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُوا إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَاناً إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاهُمَا فَلا تَقُلْ لَهُمَا أُفٍّ وَلا تَنْهَرْهُمَا وَقُلْ لَهُمَا قَوْلاً كَرِيماً [سورة الإسراء]

“আল্লাহর ফয়সালা এই যে তিনি ছাড়া আর কারো দাসত্ব করা যাবে না এবং তোমাদের পিতামাতার সাথে সদাচরণ করবে, তাদের দু’জন বা একজন যখন বার্ধক্যে পৌঁছে যায় তবে তোমাদের আচরণের কারণে তারা যেন উহ্ না বলে, তাদের সাথে ধমকের সুরে কথা বলবে না বরং তাদের সাথে সম্মানের সাথে কথা বলবে”। (বনী ইসরাইল:২৩)

 

আয়াতের আবেদন এতই তাৎপর্যপূর্ণ যে এর প্রতিটি শব্দের মধ্যে রয়েছে এক এক মহাসমুদ্রের বিস্তৃতি ও ব্যাপকতা।

সমগ্র জীবনের কঠিন ও উত্তপ্ত মুহূর্তেও মাতা-পিতার সাথে সদাচরণের সীমা লংঘন করার সামান্যতম অনুমতিও আল্লাহ ও রাসূলের পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি।

নবীয়ে পাক প্রিয় সাহাবী হযরত মুয়াজ বিন জাবাল (রা)-কে উপদেশ দিতে গিয়ে বলেন,

وَلاَ تَعقنَّ وَالِدَيْكَ وَاِنْ اَمَراكَ اَنْ تَخْرُجْ مِنْ اَهْلِكَ وَمَالِكَ- (رواه احمد)

“মুয়াজ সাবধান! তোমার পিতা-মাতার সাথে এমন কোন আচরণ করবে না যাতে তাদের হৃদয়ে আঘাত লাগে। তারা যদি তোমাকে ঘর থেকে বের করে দেয় অথবা সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে তারপরও প্রতিবাদী হওয়া যাবে না।” (মুসনাদে আহমদ)

পিতা-মাতাগণ যদি শিরক ও কুফুরীর ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করে উহা গ্রহণ করা যাবে না কিন্তু এর পরও ভদ্রতার সীমা অতিক্রম করার অনুমতি নেই। এ বিষয়ে কুরআনে পাক এর উক্তি প্রণিধানযোগ্য

وَإِنْ جَاهَدَاكَ عَلى أَنْ تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلا تُطِعْهُمَا وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفاً

“তোমার পিতা-মাতা যদি আমার সাথে শিরিকের ক্ষেত্রে তোমার ওপর চাপ সৃষ্টি করে যার ভয়াবহতা তুমি জান না সাবধান তা অনুসরণ করবে না তবে পৃথিবীর জীবনে তাদের সাথে এর পরও ভালো ব্যবহার করবে।” (সূরা লোকমান : ১৫)

একব্যক্তি রাসূলে খোদার (সা) দরবারে এসে জিজ্ঞাসা করলেন যে সন্তানের ওপর মা-বাবার কী অধিকার?

عَنْ اَبِيْ اُمامَة اَنَّ رَجُلاً قَالَ يا رَسُوْلَ اللهِ مَا حَقُّ الوَالِدَيْنِ عَلى وُلِدِهِمَا؟ قَالَ هُمَا جَنَّتُكَ وَنَارُكَ – (ابن ماجه)

হযরত আবু উমামা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা এক ব্যক্তি রাসূল (সা)-এর দরবারে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন মা-বাবার অধিকার কী সন্তানের ওপর? নবীয়ে পাক (সা) বলেন, “তারা তোমার জন্য জান্নাত অথবা জাহান্নাম।” (ইবনে মাজাহ)

মাতা-পিতার সন্তুষ্টিতে সন্তানের জন্য জান্নাত আর তাঁদের অসন্তুষ্টির মধ্যে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম। হাদিস শরীফে রয়েছে,

الرب في رضا الوالد ضار

“যে সন্তানের ওপর তার মাতা-পিতা রাজি রয়েছে তার ওপর আল্লাহতায়ালাও রাজি রয়েছে।”

وَقَالَ رَسُوْلَ اللهِ (صـ) اِنَّ اللهَ حَرَّمَ عَلَيْكُمْ عُقُوْقَ الأمَّهَاتِ

নবীয়ে কারিম (সা) বলেন, “আল্লাহতায়ালা মায়ের অবাধ্যতা সন্তানের জন্য হারাম করে দিয়েছেন।”

সংশ্লিষ্ট