শনিবার, ১৬ জুলাই ২০১৬

ঝিনাইদহে ৫ শিবির নেতা কর্মীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির না করায় উদ্বেগ প্রকাশ ও তাদের সন্ধান দাবী করে শিবিরের বিবৃতি প্রদান

ঝিনাইদহ থেকে পরিকল্পিতভাবে ৫ শিবির নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ তাদের সন্ধান না দেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ এবং অনতিবিলম্বে তার সন্ধান দাবী করে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান ও সেক্রেটারী জেনারেল ইয়াছিন আরাফাত বলেন, ঝিনাইদহে পুলিশ কর্তৃক গুম ও সংখ্যালঘু খুনের প্রকৃত রহস্য যখন জাতির সামনে প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে তখন পরিকল্পিতভাবে নিরীহ ছাত্রশিবির নেতাকর্মীদের নির্মমভাবে হত্যার দায় এড়াতে আবারো দায়িত্বহীন ও অমানবিকতার আশ্রয় নিয়েছে পুলিশ। গত ৫ জুলাই ঝিনাইদহের নিজ বাসা থেকে শিবির নেতা মিলন হোসেন ও শাহিনুর রহমানকে, ১০ জুলাই সাবেক শিবির নেতা রজব আলীকে, ৪ জুলাই আজম হুদাকে এবং ৩ জুলাই শিবির নেতা সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে বার বার চেষ্টা ও অনুরোধ করার পরও এখন পর্যন্ত তাদের গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার বা আদালতে হাজির করেনি পুলিশ। আমরা বিশ্বস্ত সুত্রে জানতে পেরেছি জঙ্গি নিবরাসের সাথে সম্পৃক্ততা আবিস্কার করার ষড়যন্ত্রে জড়াতে তাদের বেআইনিভাবে গুম করে রেখেছে পুলিশ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, পুলিশ বেআইনি কর্মকান্ড দ্বারা নিজেদের অপরাধ আড়াল করতে নিরপরাধ ছাত্রদের বলির পাঠা বানাতে চাইছে। কিন্তু দেশবাসী তা মেনে নেবেনা। কেননা ঝিনাইদহে একাধিক সংখ্যালঘুকে হত্যার সাথে জঙ্গি নিবরাসের সম্পৃক্ততার বিষয়টি গণমাধ্যমের কল্যাণে দেশবাসী ইতিমধ্যেই অবগত হয়েছে। ফলে এই হত্যাকান্ড নিয়ে পুলিশের মিথ্যাচার ও নির্বিচারে নিরপরাধ শিবির কর্মীদের হত্যার বিষয়টিও জনগণ বুঝে ফেলেছে। তাই দায় এড়াতে ঝিনাইদহে নতুন ষড়যন্ত্রের জাল বুনতে চাইছে পুলিশ। আইনের পোষাকে পুলিশের এই বেআইনি অপচেষ্টা কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। পুলিশের এই আচরণ সরাসরি আইনের লঙ্ঘন। পুলিশের এমন নীতিহীন আচরণে আমাদের মনে নানা আশঙ্কার জন্ম দিয়েছে। এটা পরিস্কার যে নতুন কোন নাটকের জন্ম দিতেই তাদেরকে গুম করে রেখেছে পুলিশ। কেননা এর আগেও এভাবে গ্রেপ্তারের পর আটক রেখে নানা নাটক সাজানো হয়েছে। তাছাড়া ঝিনাইদহতেই অনেক ছাত্র-শিক্ষককে বেআইনিভাবে গ্রেপ্তারের পর অস্বীকার করে রাতের আধাঁরে নির্মমভাবে হত্যা করেছে পুলিশ। যা আমাদের উদ্বেগকে বাড়িয়ে দিয়েছে। গ্রেপ্তারের এত দিন পরও পুলিশের এই অমানবিক আচরণে গ্রেপ্তারকৃত ছাত্রদের পরিবারের সাথে সাথে আমরাও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

আমরা মনে করি, কোন অশুভ ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতেই ঝিনাইদহের মেধাবী ছাত্রদের টার্গেট করেছে সরকার ও পুলিশ। সেই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে ইতিমধ্যেই টার্গেট কিলিংয়ের মধ্যদিয়ে আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয়েছে। একেরপর এক মেধাবী ছাত্রদের টার্গেট করে হত্যা করেছে পুলিশ। আর কোন নিরপরাধ ছাত্রদের নিয়ে কোন প্রকার নাটক বা তাদের সামান্যতম ক্ষতি ছাত্রশিবির মেনে নিবে না। অবিলম্বে আমরা গ্রেপ্তারকৃত শিবির নেতাদের অবস্থান নিশ্চিত ও তাদের আদালতে হাজিরের মাধ্যমে আইনি প্রক্রিয়া অনুস্মরণ করার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি। সেই সাথে ভবিষ্যতে এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনা যেন না ঘটে তার উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।

সংশ্লিষ্ট