সোমবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পরিকল্পিতভাবে অসত্য বক্তব্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছেন

ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের অসত্য বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান ও সেক্রেটারী জেনারেল ইয়াছিন আরাফাত বলেন, কথায় কথায় ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আ.লীগ নেতাদের বাজে অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে শিবির নিষিদ্ধের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে এমন বক্তব্য দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যা প্রথম আলোসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। তার এ বক্তব্য সম্পূর্ণ দায়িত্বহীন ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক। মূলত জঙ্গিবাদের ধোয়া তুলে নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের কৌশল নিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এর আগেও তিনি ছাত্রশিবিরের সাথে জঙ্গি সংগঠনকে জড়িয়ে বানোয়াট বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা দৃঢ়তার সাথে এর প্রতিবাদ এবং নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করেছি। এর পরও ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে এই নোংড়া মিথ্যাচার গভীর ষড়যন্ত্রেরই অংশ। আমরা মনে করি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার দায়ীত্বের জায়গা থেকে নয় বরং দলীয় অবস্থান থেকে এই অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা মনে করিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশে জঙ্গিপনা শুরু হয়েছিল আ.লীগের আমলে এবং আ.লীগের শীর্ষ নেতাদের নিকটাত্বীয় ছিল শীর্ষ জঙ্গী নেতারা। এমনকি সম্প্রতি সরকারের তথাকথিত সাঁড়াশি অভিযানের সময়ও গত ১২ই জুন ৬৩ জেলায় একযোগে বোমাহামলার আসামী নড়াইল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি গাজী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার ব্যপারে নিশ্চিত করেন, নড়াইল সদর থানার ওসি সুভাস বিশ্বাস। ময়মনসিংহে জঙ্গি ছিনতাইয়ের মূল হোতা ছিল যুবলীগ নেতা। সম্প্রতি গুলশানে হামলাকারী অন্যতম জঙ্গি আ.লীগের কেন্দ্রীয় নেতার ছেলে। তাছাড়া জনগণ কর্তৃক ধৃত জঙ্গি ও গুরুত্বপূর্ণ স্বাক্ষীদের পরিকল্পিত ভাবে হত্যা সহ নানা কারণে প্রতি দিনই জঙ্গিদের সাথে আ.লীগের সম্পর্ক জনগণের সামনে ফাঁস হচ্ছে। সুতরাং ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্য শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেস্টা ছাড়া কিছু নয়।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, প্রতিনিয়ত ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের জঙ্গী তৎপরতা সাধারণ ছাত্রদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। জঙ্গীবাদের অভিযোগ তুলে নিষিদ্ধ করতে হলে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকেই আগে নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। তাহলে দেশবাসী স্বস্তির নি:শাস ফেলবে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসবে। অন্যায়ভাবে ছাত্রশিবিরকে নিয়ে কোন হটকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণের পদক্ষেপ নিলে তার দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ছাত্রশিবির এদেশে হঠাৎ করে গজিয়ে উঠা কোন সংগঠন নয়। ছাত্রশিবির জন্ম লগ্ন থেকেই নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় পথ চলছে। এ সংগঠন হাজারো মেধাবী ও সৎ নাগরীক উপহার দিয়েছে যারা দেশে উন্নয়ন অগ্রগতিতে ভূমিকা পালন করছে। জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ থেকে ছাত্রশিবির মুক্ত। বরং সামর্থ অনুযায়ী সব সময় জনকল্যানে কাজ করে ছাত্রশিবির। যার সাক্ষী এদেশের জনগণ। সুতরাং ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে স্বরাষ্টমন্ত্রীর বক্তব্যে ভারসাম্যহীন প্রলাপ ছাড়া কিছু নয়। এই দায়িত্বহীন বক্তব্যে তার অবস্থানকেও লজ্জায় ফেলে দিয়েছে। আমরা আশাকরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশ ও জাতির স্বার্থে তার এই অসত্য বক্তব্য প্রত্যাহার করবেন।