মঙ্গলবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

আবারো হলুদ সাংবাদিকতার নিকৃষ্ট নজির স্থাপন করেছে বাংলানিউজ

অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজে ‘ছাত্রশিবির কর্মীদের সশস্ত্র যোদ্ধা বানিয়ে ছিলেন মীর কাসেম’ এবং ‘চট্টগ্রামে আনসারউল্লাহর নেপথ্য শিবির নেতা শামীম মেহেদী’ শীর্ষক প্রতিবেদনে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট খবর প্রকাশের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. আতিকুর রহমান ও সেক্রেটারী জেনারেল ইয়াছিন আরাফাত বলেন, আবারো একপেশে, হলুদ সাংবাদিকতার নিকৃষ্ট নজির স্থাপন করেছে বাংলানিউজ। অবৈধ সরকারের বিচার বিভাগীয় হত্যাকান্ড থেকে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে পরিকল্পিত ভাবে শহীদ মীর কাসেম আলীকে জড়িয়ে সিন্ডিকেট নিউজ প্রকাশ করে যাচ্ছে। সম্পূর্ণ কাল্পনিক সূত্র এবং স্বীকৃত ও সশস্ত্র উগ্রপন্থী সংগঠনের নেতাদের মিথ্যা বক্তব্যে বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, মীর কাসেম আলী ছাত্রশিবির কর্মীদের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়েছেন, শিবির অস্ত্রের জোড়ে ক্যাম্পাস দখল করেছে ইত্যাদি। এই মিথ্যাচারের পক্ষে প্রতিবেদক কোন বিশ্বাসযোগ্য তথ্য প্রমাণ দিতে পারেনি বরং চাতুরতার সাথে কাল্পনিক সূত্রের আশ্রয় নিয়েছে। অন্যদিকে প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নূরুল আজিম রনির বক্তব্য নেয়া হয়েছে যে কিনা কয়েক দিন আগে আগ্নেয়াস্ত্র সহ পুলিশের কাছে হাতে নাতে ধরা পড়েছিল। তাছাড়া বক্তব্যে নেয়া হয়েছে উগ্রমতাদর্শে বিশ্বাসী ও অস্ত্র নির্ভর সংগঠন ছাত্রমৈত্রী ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতাদের। অথচ এমন গুরুতর অভিযোগের ব্যাপরে ছাত্রশিবিরের কোন নেতার বক্তব্যে নেয়ার প্রয়োজন মনে করেনি প্রতিবেদক। এতেই প্রমাণ হয় কোন বিশেষ এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে, কারো নির্দেশনায় পরিকল্পিত ভাবে প্রতিবেদনটি সাজানো হয়েছে। বাংলানিউজ দলীয় ও প্রতিহিংসা পরায়ন অবস্থান থেকে চোখ বন্ধ করে রাখলেও দেশবাসী জানে ছাত্রশিবিরই যুগে যুগে ছাত্রলীগ, ছাত্রমৈত্রী, ছাত্র ইউনিয়নের সশস্ত্র সন্ত্রাসের শিকার। এসব সংগঠনের সন্ত্রাসীরা বহু শিবির নেতাকর্মীকে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। এছাড়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক সজিবুল ইসলাম সজিবের অস্ত্র চালনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কথা নিশ্চয় এখনো দেশবাসী ভুলে যায়নি। বর্তমানে সরকারী মদদ ও বাংলানিউজের মত সত্য আড়ালকারী গণমাধ্যমের কল্যাণে ছাত্রলীগ প্রতিটি ক্যাম্পাসকে অবৈধ অস্ত্রের মিনি ক্যান্টনমেন্ট, মাদকের হাট ও সন্ত্রাসীদের অভয়ারন্যে পরিণত করেছে।

একই ভাবে ‘চট্টগ্রামে আনসারউল্লাহর নেপথ্য শিবির নেতা শামীম মেহেদী’ শীর্ষক প্রতিবেদনটিতেও সত্যতার লেশমাত্র নেই। এই প্রতিবেদনটি হীন উদ্দেশ্যে পুলিশ ও প্রতিবেদক যৌথ প্রযোজনায় করা হয়েছে। পুরো প্রতিবেদটি ভিত্তিহীন। পুলিশের মিথ্যাচার ও প্রতিবেদকের কল্পনা যোগ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা শামিম রেজা ও চট্টগ্রামের নেতা মেহেদি আনসারউল্লাহ এর নেপথ্য আছে। তাদের পদ পদবি অনুসন্ধানের চেষ্টা করছে পুলিশ। অথচ শামিম রেজা নামে ছাত্রশিবিরের কোন কেন্দ্রীয় নেতাই নেই। মেহেদি নামে যাকে প্রচার করা হচ্ছে সেও ছাত্রশিবিরের কেউ নয়। অন্যদিকে পুলিশ বলেছে তাদের পদ পদবি অনুসন্ধানের চেষ্টা করছে। আমাদের প্রশ্ন, পদ পদবি না জেনেই শামিম রেজা যে শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা তা পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে কি ভাবে? মূলত আদর্শিক ভাবে পরাজিত হয়ে ইসলাম বিদ্বেষী শক্তি এক তরফা ভাবে তথ্য সন্ত্রাস চালাচ্ছে। এক্ষেত্রে বাংলানিউজের মত কিছু গণমাধ্যম সরকারকে অন্ধভাবে সমর্থন করতে গিয়ে বার বার বিভ্রান্তিকর ও অসত্যের আশ্রয় নিচ্ছে। যখন জঙ্গিদের সাথে আ.লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সন্তান, স্বজনসহ নেতাকর্মীরা জড়িত তার বহু প্রমাণ দেশবাসী দেখেছে। তখন এক তরফাভাবে জঙ্গিবাদের সাথে ছাত্রশিবিরকে জড়ানোর প্রচেষ্টা দুঃখজনক।

নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার ও তাদের সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের খুন, গুম, নির্যাতন, হামলা, মামলা এবং বাংলানিউজের মত কিছু গণমাধ্যমের বিরতিহীন একপেশে অপপ্রচারের পরও ছাত্রশিবির এগিয়ে চলেছে। কোন অস্ত্র বা উগ্রপন্থার জোরে নয় বরং গঠনমূলক কর্মকান্ড, শান্তিপূর্ণ অবস্থান ও মানুষের ভালবাসার কারণেই শিবিরের আজকের এই অবস্থান। সুতরাং কোন গণমাধ্যমে একপেশে ও পরিকল্পিত কুৎসা রটনা করে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। বাংলানিউজের বোঝা উচিৎ, গণমাধ্যম থেকে মানুষ সত্য তথ্য আশা করে কোন প্রতিহিংসামূলক বানোয়াট রটনা নয়। সাংবাদিকতার মহান পেশার লেভেল লাগিয়ে মিথ্যাচার করা জাতির সাথে প্রতারণার শামিল। আমরা আশা করি ভবিষ্যতে কোন নিউজ প্রচারের ক্ষেত্রে যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে সঠিক সংবাদ প্রকাশে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিবে বাংলানিউজ।

নেতৃবৃন্দ এ ধরণের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রতিবেদন প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক ও গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানান।