বুধবার, ৩০ আগস্ট ২০১৭

বন্যাদূর্গত এলাকায় শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, ভয়াবহ বন্যায় সব হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত লাখো মানুষ এখন দিশেহারা। দেশের বন্যাকবলিত অনেক এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিধ্বস্ত হয়ে আছে। এখন পর্যন্ত বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষদেরকে সহায়তা ও শিক্ষার পরিবেশ দিতে সরকার কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি। ফলে বন্যার্তদের সহায়তায় সরকারের ব্যর্থতা উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সন্তানদের মাঝে নগদ অর্থ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সেক্রেটারি জেনারেল মোবারক হোসাইনের পরিচালনায় এসময় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শিবির সভাপতি বলেন, দীর্ঘ দিন পেরিয়ে গেলেও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার অবস্থার উন্নতি হয়নি। বরং পর্যাপ্ত সহায়তা না পাওয়ায় বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ ও উদ্বেগজনক। ত্রাণের অপ্রতুলতার সাথে সাথে পানিবাহিত নানা রুগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা গুলো প্রধানত কৃষি নির্ভর। বন্যায় এই বিশাল অঞ্চলের ফসল নষ্ট হয়েছে। গাছ পালা, রাস্তা ঘাট, বসতবাড়ী অবকাঠামো বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। কিছু এলাকায় বন্যার পানি কমলেও সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনে বিধ্বস্ত অবস্থা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের বই খাতা নষ্ট হয়ে গেছে। অথচ সেখানে লোক দেখানো কিছু ত্রাণ বিতরণ ছাড়া সরকারের সার্বিক সহায়তার কোন লক্ষণই চোখে পড়ছে না। কিন্তু সরকারের এই অমানবিক দায়িত্বহীনতায় বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। যা নিয়ে জাতি উদ্বিগ্ন। তাই বন্যার্তদের কষ্ট লাঘব ও বিপর্যয় রোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা সরকার ও সমাজের বিত্তবানসহ সকলকে যার যার সাধ্যমত এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি। একই সাথে যত দ্রুত সম্ভব ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিধ্বস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংস্কার, শিক্ষার্থীদের হাতে বই খাতাসহ শিক্ষা উপকরণ তুলে দিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। প্রয়োজনে সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কর্মসূচি ঘোষনা করতে হবে।

তিনি বলেন, ছাত্রশিবির প্রথম থেকেই সাধ্য অনুযায়ী বন্যার্তদের সহযোগিতায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। এ কাজে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় ত্রাণকমিটি তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও দুর্গত এলাকার জনশক্তিরা ত্রাণ তৎপরতায় অংশ নিচ্ছে। বাড়ীঘর মেরামত, রাস্তাঘাট সংস্কার, মেডিকেল টিম গঠন করে বিনা মূল্য চিকিৎসা সেবা প্রদান অব্যাহত আছে। আজকের কর্মসূচি বন্যার্তদের সহায়তায় ছাত্রশিবিরের ধারাবাহিক কর্মকান্ডেরই অংশ। আমাদের এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। পবিত্র ঈদ সমাগত। লাখো মানুষকে দূর্দশায় রেখে ঈদ আনন্দ পূর্ণতা পাবে না। আমরা আশা করি দল মত নির্বিশেষে সকলে কুরবানীর শিক্ষা বাস্তবায়নে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়ে, তাদের ঈদ আনন্দে সম্পৃক্ত করে ত্যাগ ও ভ্রাতৃত্ববোধের নজির স্থাপন করবেন।

সংশ্লিষ্ট