বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০১৭

জামায়াতে ইসলামীর আমির ও সেক্রেটারি জেনারেলসহ শীর্ষ ৯ নেতাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ

অন্যায় ভাবে জামায়াতে ইসলামীর আমির মকবুল আহমদ, নায়েবে আমীর অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার, সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানসহ ৯ শীর্ষ নেতাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ ও অবিলম্বে তাদের মুক্তির দাবী জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত ও সেক্রেটারি জেনারেল মোবারক হোসাইন বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার হীন উদ্দেশ্যেই বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর আমীর মকবুল আহমদসহ জামায়াত ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করছে সরকার। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে অবৈধ সরকারের জুলুম নিপীড়ন অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। শেষ পর্যন্ত ঘরোয়া পরিবেশ থেকেও দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকেও গ্রেপ্তার করতে কুণ্ঠাবোধ করছে না। যার সর্বশেষ নজীর দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ পর্যায়ের ৯ নেতাকে গ্রেপ্তার করা। গ্রেপ্তারের পর প্রশাসন আজ তাদের নামে দুটি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এই মিথ্যা মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মোট ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। বয়োবৃদ্ধ প্রবীন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এই মিথ্যা মামলা ও রিমান্ড এদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অপরাজনীতির উদাহরণ হয়ে থাকবে। এই অমানবিক ও ফ্যাসিবাদী আচরণ করে অবৈধ সরকার বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহমর্মিতার সব পথকে রুদ্ধ করে রাজনৈতিক দেওলিয়াত্বের বহি:প্রকাশ ঘটিয়েছে।

গণতন্ত্রের লেবাসদারী সরকার আদর্শিকভাবে পরাজিত হয়ে অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই জামায়াত ইসলামীকে নেতৃত্ব শূণ্য করতে চায়। সরকার একদিকে আইনের শাসনের কথা বলছে অন্যদিকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে গ্রেফতার, হামলা-আক্রমন ও নির্যাতন-নিপীড়নের মাধ্যমে দমন করার কৌশল গ্রহণ করেছে। এই নীল নকশা বাস্তাবয়ন করতে সারাদেশে জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা কর্মীদেরকে গ্রেফতার, গুম ও নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। দেশে মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নেই, জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই, নেই সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাও। সরকার ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী ও পাকাপোক্ত করতে বিরোধী দল-মত সহ্য করতে পারছে না। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের দমন-নিপীড়নের মাধ্যমে কোণঠাসা করে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকার একের পর এক অগণতান্ত্রিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, সাধারণ মানুষ আজ সরকার দলীয় লোক ও পুলিশ বাহীনি থেকে রেহাই পাচ্ছেনা। দুর্নীতি, ধর্ষণ,টেন্ডারবাজী,চাঁদাবাজি নিত্য-নৈমিত্তিক কাজে পরিণত হয়েছে। সরকার আজ সকল ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে সাধারণ জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ধাবিত করতে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের উপর বাকশালী কায়দায় দমন নিপিড়ণ চালিয়ে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদী সরকারের ইসলামী আন্দোলন নির্মূল করার এই ঘৃন্য ষড়যন্ত্র কখনোই সফল হবে না।

নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারের মনে রাখা উচিৎ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি নিয়মতান্ত্রিক ও আইনানুগ রাজনৈতিক দল। জামায়াতে ইসলামী তার দলীয় কর্মসূচী পরিচালনায় দেশের আইন, সংবিধান ও প্রচলিত নিয়ম অনুসরণ করে চলে। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক দলের প্রথম সারির নেতা। যারা নিরপরাধ ও দেশের পরিচ্ছন্ন জনপ্রিয় নেতৃত্বের প্রতিক। তাদেরকে গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলা ও রিমান্ডে দিয়ে সরকার চরম অন্যায় করেছে। আমরা আশা করি সরকারের বোধদয় হবে এবং অবিলম্বে নেতৃবৃন্দকে নি:শর্ত মুক্তি দিয়ে দেশের গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে সহিষ্ণুতা বজায় রাখবে।

নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।

সংশ্লিষ্ট