বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি ২০১৮

ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, একের পর এক নজিরবিহীন অপকর্মের ঘৃন্য উদাহরণ সৃষ্টি করে চলেছে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা। তাদের ঘৃন্য কর্মকান্ডের মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে গেছে। যার সর্বশেষ উদাহরণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ সেক্রেটারির নেতৃত্বে আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীদের উপর বর্বর হামলা ও যৌন নির্যাতন। সন্ত্রাসীদের কাছে শিক্ষার্থীরা জিম্মি হয়ে পড়েছে। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে।

তিনি আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী উত্তর শাখার থানা দায়িত্বশীল শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। মহানগরী সভাপতি জামিল মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আজিজুল ইসলাম সজিবের পরিচালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক মাহফুজুল হক, মহানগরী অফিস সম্পাদক মাহমুদ মুরাদ, বায়তুলমাল সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমানসহ মহানগরী নেতৃবৃন্দ।

শিবির সভাপতি বলেন, ছাত্রলীগ ছাত্রদের অধিকার আদায়ের পরিবর্তে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের ঘৃন্য হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোত খুন, হত্যা, টেন্ডারবাজি, ভর্তিবাণিজ্য আর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ণে এখন এক ত্রাসের নাম ছাত্রলীগ। যার সর্বশেষ সংযোগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারীদের উপর বর্বর হামলা নির্যাতন। শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের নিপীড়নসহ তিন দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিনা উস্কানিতে ছাত্রলীগ সেক্রেটারির নেতৃত্বে জঘন্যতম হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা। রড ও লাটিসোটা নিয়ে নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের উপর হায়েনার মত ঝাপিয়ে পড়ে তারা। এসময় নির্বিচারে ছাত্রীদের গায়ে হাত দিয়ে তাদের কাপড় ছিঁড়ে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। হামলায় আহত হয়েছে ৪০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী যাদের অনেকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত চিহ্নিত হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়নি উল্টো লজ্জাজনক ভাবে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরাও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের পক্ষে সাফাই গেয়ে যাচ্ছে। সরকারের মদদপুষ্ট ও পুলিশের বলয়ে থাকা এই গুটি কয়েক ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে রেখেছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বেপরোয়া ছাত্রলীগ পুলিশ ও প্রশাসনের অনৈতিক সহযোগিতায় ক্যাম্পাসে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে ভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের খুন, হামলা, নির্যাতন করে যাচ্ছে। বহু ছাত্রনেতা ও সাধারণ ছাত্রকে নির্যাতন করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা। হল গুলোতে নির্বিচারে লুটপাট করছে ছাত্রদের ল্যাপটপ, কম্পিউটার, নগদ অর্থসহ মূল্যবান জিনিসপত্র। তারা ঐতিহ্যবাহী সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাস পুড়িয়ে দিয়ে উল্লাস করেছিল। মারধর ও অপদস্ত করেছে সম্মানিত শিক্ষকদের। এসব ঘটনায় ছাত্রলীগের তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় নেতারা পর্যন্ত জড়িত। কিন্তুু এখন পর্যন্ত এসব অপকর্মের কোন বিচার হয়নি। আর কত নৃশংস ও ঘৃন্য লোমহর্ষক কর্মকান্ডের অবতারণা করলে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দেয়া হবে জাতি তা জানতে চায়।

তিনি আরো বলেন, ছাত্রলীগের সন্ত্রাস ও মদদ দাতাদের সব কর্মকান্ডই ছাত্রজনতা দেখছে। কোন ভাবেই এসব কর্মকান্ড কোন ছাত্রসংগঠনের হতে পারে না বরং এগুলো চোর ডাকাত ও দাগি সন্ত্রাসীদের কাজের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। শিক্ষা প্রতিটি শিক্ষার্থীর অধিকার এবং সেই অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। কিন্তু উভয় পক্ষই এখানে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের কাছে নতি স্বীকার করে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ছাত্রসমাজ কোন ভাবেই এই অপতৎপরতা মেনে নেবে না। অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি শিক্ষার্থীর নিরাপত্তায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ক্যাম্পাসে সবার সহবস্থান ও শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তি প্রতিষ্ঠান গুলোর সৃষ্ট জটিলতা নিরসন করে শিক্ষার্থীদের পরিক্ষা গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট