শহীদ হাফেজ যোবায়ের হোসেন

৩০ নভেম্বর -০০০১ - ১৩ ডিসেম্বর ২০১৩ | ১৮৯

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

শাহাদাতের ঘটনা

শহীদের পরিচিতি

পিতা-মাতার ৪ সন্তানের মধ্যে ১ম সন্তান হাফেজ জোবায়ের। তিনি ১৯৯২ সালে জন্মগ্রহন করেন। ২ভাই ২ বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি। পরিবারের বড় সন্তান হওয়ার কারণে তাকে ঘিরে পরিবারের সব স্বপ্ন ছিল। পিতা জহিরুল ইসলাম দুবাই প্রবাসী হওয়ায় পরিবারের দেখা-শুনা করতেন তিনি। তার পাশাপাশি দ্বীনি আন্দোলনের কাজে ব্যাকুল থাকতেন। আমিশাপাড়া হাফেজীয়া মাদ্রাসা থেকে হেফজ শেষ করে আমিশাপাড়া খলিলুর রহমান কামিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল, আলিম পাশ করে ফাযিল ১ম বর্ষে অধ্যয়নরত ছিলেন। তিনি সর্বদা হাসি মুখে সবাইকে জড়িয়ে ধরে মানুষের মন কেড়ে নিতেন।

যেভাবে তিনি আল্লাহর ডাকে চলে গেলেন:
১২ডিসেম্বর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী আব্দুল কাদের মোল্লা সাহেবের বিচার বিভাগীয় কিলিংয়ের মাধ্যমে ফাঁসি দিয়ে হত্যার পরের দিন ১৩ ডিসেম্বর কেন্দ্র ঘোষিত গায়েবানা জানাযায় যাওয়ার পথে সোনাপুর বাজারে শিবিরের ২জন কর্মীর হাত-পায়ের রগ কেট দেয় ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা। এর প্রতিবাদে বিকালে সোনাপুর বাজারে মিছিলের দ্ধান্ত নেই স্থানীয় সংগঠন। মিছিলের শুরুতেই ওৎপেতে থাকা আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত আওয়ামী সন্ত্রাসী রা গুলি ছুঁড়তে থাকে। এক নিমিষে ঘটে গেল ঘটনা। ৮৪ টি গুলি বুকে নিয়ে সাথে সাথেই লুটিয়ে পড়েন হাফেজ জোবায়ের।

শাহাদাতের পূর্বের বিভিন্ন ঘটনা :
শাহাদাতের কিছু দিন পূর্বে শাখা দায়িত্বশীলদেরকে বলেছিলেন, ভাই সারা বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলনের জন্য অসংখ্য ভাইয়েরা জীবন দিয়েছেন কিন্তু আমাদের এই সোনাইমুড়ীর আমিশাপাড়া সাথী শাখা অনেক পুরাতন শাখা কিন্তু' এই ময়দানে একজন শহীদও নেই। মহান আল্লাহ যেন এই ময়দানের একজন শহীদ হিসেবে আমাকে কবুল করেন। তিনি তার মাকে বলতেন যে, কাদের মোল্লা সাহেবের কিছু হলে মা আপনি আর আমাকে পাবেন না। ১৩ডিসেম্বর সোনাইমুড়িতে গায়েবানা জানাযায় আসার সময় মাকে বিদায় জানিয়ে এসেছেন যে, মা আমি আর ঘরে ফিরব না।

সামগ্রীক ঘটনার বিবরণ:

১২ডিসেম্বর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী আব্দুল কাদের মোল্লা সাহেবের বিচার বিভাগীয় কিলিংয়ের মাধ্যমে ফাঁসি দিয়ে হত্যার পরের দিন ১৩ ডিসেম্বর কেন্দ্র ঘোষিত গায়েবানা জানাযায় যাওয়ার পথে শহীদের নিজ ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন সোনাপুর ইউনিয়নের সোনাপুর বাজারে শিবিরের ২জন কর্মীর হাত-পায়ের রগ কেট দেয় ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা। এর প্রতিবাদে বিকালে সোনাপুর বাজারে মিছিলের সিদ্ধান্ত নেয় স্থানীয় সংগঠন। মিছিলের শুরুতেই ওৎপেতে থাকা আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত আওয়ামী সন্ত্রাসীরা গুলি ছুঁড়তে থাকে। এক নিমিষে ঘটে গেল ঘটনা। ৮৪ টি গুলি বুকে নিয়ে সাথে সাথেই লুটিয়ে পড়েন হাফেজ জোবায়ের। শাহাদাতের অমীয় সুধা পান করলেন শহীদ জোবায়ের। আহত হন আরো ১৫/২০জন।

মায়ের অনুভূতি: আমার ছেলে জোবায়ের শহীদ কাদের মোল্লা সাহেবের শাহাদাতের পর থেকে শুধু কান্না করতেছিল সকালে খাওয়ার সময়ে আমাকে বলে ’মা’ আমার খুব কষ্ট হচ্ছে মোল্লা সাহেবের মতো একজন নিরপরাধ মানুষকে এই জালিম সরকার হত্যা করল। আম্মা দোয়া করিও আল্লাহ্ যেন উনাকে জন্নাত নসিব করে এবং আমাদের ও শহীদ হওয়ার তৌফিক দান করেন।

বাবার অনুভুতি: আমার ছেলে শহীদ হয়েছে আমার কোন দুঃখ নাই বরং এটা আমাদের জন্য গর্ভের বিষয়, তবে দোয়া করি আল্লাহ্ যেন আমার ছেলের রক্তের বিনিময়ে বাংলার জমিন কে ইসলামের জন্য কবুল করে নেয়।

দায়িত্বশীলের অনুভুতি: জোবায়ের ভাই ১৩ ডিসেম্বর প্রতিবাদ সমাবেশে যাওয়ার আগে তার বোলেট প্রুব জেকেট এবং মাথার হেলমেট অন্য সাথী ভাই কে দিয়ে বলে আজ থেকে এগুলো আপনি ব্যবহার করবেন। মনে হচ্ছে আল্লাহর মেহমান হওয়ার প্রতি আগে থেকেই নিয়ে নিয়েছেন। সংঘঠনের পক্ষা থেকে কিছু অর্থিক সহযোগিতা তার মায়ের হাতে তুলে দিতে গেলে তিনি বলেন : এগুলোর কিসের টাকা! আমাদের ভাইয়েদের কষ্টের টাকা যদি হয় তাহলে আমাদের ছেড়ে কষ্টে যারা আছেন তাদের মাঝে এগুলো বিতরণ করে দেন। আমাদেরকে আল্লাহ্ ভাল রাখছেন আলহামদুলিল্লাহ্।

এক নজরে

পুরোনাম

শহীদ হাফেজ যোবায়ের হোসেন

পিতা

মাওলানা রবিউল ইসলাম

মাতা

মহিমা বেগম

জন্ম তারিখ

নভেম্বর ৩০, -০০০১

ভাই বোন

চার ভিাই-বোনের মধ্যে জ্যেষ্ঠ

স্থায়ী ঠিকানা

নোয়াখালী জেলার সুনাইমুড়ি উপজেলার আমিরশাহা পাড়ার সাতবাড়িয়া গ্রাম

সাংগঠনিক মান

সাথী

সর্বশেষ পড়ালেখা

আমিরশাহা পাড়া খলিলুর রহমান কামিল মাদ্রাসার ফাজিল ১ম বর্ষ

শাহাদাতের স্থান

নোয়াখালীর সোনাপুর বাজার


শহীদ হাফেজ যোবায়ের হোসেন

ছবি অ্যালবাম: শহীদ হাফেজ যোবায়ের হোসেন


শহীদ হাফেজ যোবায়ের হোসেন

ছবি অ্যালবাম: শহীদ হাফেজ যোবায়ের হোসেন