শহীদ মাহফুজুর রহমান

০৯ ডিসেম্বর ১৯৯৮ - ০৪ মার্চ ২০১৩ | ১৬৫

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

শাহাদাতের ঘটনা

“শহীদ মো: মাহফুজুর রহমান আল্লামা সাঈদী সাহেবের ক্যাসেট খুবই আগ্রহের সাথে শুনতো। রায়ের আগের দিন ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ বুধবার সে তার পিঠাপিঠি বড় বোন মুরশিদা খাতুন যার সাথে ছিল তার খুবই সখ্য তাকে বলেছিল, ‘আল্লামা সাঈদীর রায়ে যদি ফাঁসি হয়, আমারও দেখ ২-৩ দিনের ভেতর মৃত্যু হয়ে যাবে। তার স্বজনরা আজ শোকে পাথর, সত্যি আল্লাহ তার বান্দার কথাকে কিভাবে কাঁটায় কাঁটায় কবুল করেছেন।”

শহীদের পরিচিতি
শহীদ মো: মাহফুজুর রহমান সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার ফলিয়া পশ্চিম পাড়া) গ্রামে ১৯৯৬ ইং সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন পিতা আজিজুল হক প্রামাণিক ও মাতা ময়না খাতুনের তিন সন্তানের মধ্যে সবার ছোট। দরিদ্র পিতামাতা আর্থিক অভাব অনটনের কারণে সন্তানদের মুখে দু’মুঠো ভাতের যোগান দিতে ব্যস্ত ছিলেন। পারেননি তাদের পড়ালেখার ভাল কোন অবস্থা করতে। শহীদ মো: মাহফুজুর রহমান অনেক কষ্টে দশম শ্রেণী পর্যন্ত যেতে সক্ষম হয়েছিলেন। বর্তমানে তার পিতা খুবই অসুস্থ, টিউমার হয়েছে। অপারেশন করতে হবে। তাইতো পড়ালেখার পাশাপাাশি দরিদ্র পিতার সাথে হাল ধরতে হয়েছে সংসারেরও। একমাত্র বড় ভাই তাঁত ও কৃষি কাজ করেন এবং একমাত্র বোন বিবাহিতা। এত অভাব অনটন সত্ত্বেও শহীদ মো: মাহফুজুর রহমান ছিলেন নম্র, ভদ্র, সৎ ও উত্তম চরিত্রের অধিকারী। তাইতো আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে অন্যায় রায়ের পর তিনি আর ঘরে বসে থাকতে পারেননি। প্রতিবাদ করতে নেমে এসেছেন রাজপথে।

যেভাবে তিনি আল্লাহর ডাকে চলে গেলেন
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে ঘোষিত ফাঁসির রায়ের প্রতিবাদে ৪ মার্চ ২০১৩ তারিখে জামায়াতের ডাকে দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছিল। সকাল ৬টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে তিনি প্রতিবাদ মিছিল ও পিকেটিংয়ে অংশগ্রহণ করেন। শান্তিপূর্ণ পিকেটিংয়ের ওপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি করলে তিনি পূর্ব দেলুয়া নামক জায়গায় সকাল সাড়ে ৭টায় ডান ঊরুতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত অবস্থায় গ্রেফতার হন। পুলিশ তাকে চিকিৎসা না দিয়ে থানায় নিয়ে ফেলে রাখলে এক পর্যায়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শাহাদাত বরণ করেন। তার জানাযার নামাজে ইমামতি করেন জনাব মো: শামসুল আলম। জানাযার নামাজে প্রায় ১৫ হাজার লোক অংশগ্রহণ করেন।

সাঈদীর ফাঁসি হলে আমারও মৃত্যু হয়ে যাবে
শহীদ মো: মাহফুজুর রহমান আল্লামা সাঈদী সাহেবের ক্যাসেট খুবই আগ্রহের সাথে শুনতো। রায়ের আগের দিন ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বুধবার সে তার পিঠাপিঠি বড় বোন মুরশিদা খাতুন যার সাথে ছিল তার খুবই সখ্য তাকে বলেছিল, ‘আল্লামা সাঈদীর রায়ে যদি ফাঁসি হয়, আমারও দেখ ২-৩ দিনের ভেতর মৃত্যু হয়ে যাবে। তার স্বজনেরা আজ শোকে পাথর। সত্যি আল্লাহ তার বান্দার কথাকে কিভাবে কাঁটায় কাঁটায় কবুল করেছেন।

ব্যক্তিগত প্রোফাইল
নাম : শহীদ মো: মাহফুজুর রহমান

ফলিয়া মাধ্যমিক উচ্চবিদ্যালয়ে দশম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ছিলেন
সাংগঠনিক মান : ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মী
জন্মতারিখ ও বয়স :১২.০৫.১৯৯৬, ১৮ বছর
আহত হওয়ার তারিখ : ৪ মার্চ ২০১৩। ডান পায়ের ঊরুতে গুলি করে পুলিশ
শাহাদাতের তারিখ : ৪ মার্চ ২০১৩, সকাল সাড়ে ৯টায় শাহাদাত বরণ করেন
স্থান : উল্লাপাড়া। দাফন করা : বাড়ির পাশে
স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম : ফলিয়া পশ্চিম পাড়া, ডাকঘর : পূর্ণিমাগাঁতি, ইউনিয়ন : পূর্ণিমাগাঁতি, উপজেলা : উল্লাপাড়া, জেলা : সিরাজগঞ্জ
পিতা : মো: আজিজুল হক প্রামাণিক, বয়স প্রায় ৬৪ বছর, কৃষি
মাতা : মোসা: ময়না খাতুন, বয়স প্রায় ৪৬ বছর, গৃহিণী, অধিকাংশ সময় রোগে ভোগেন
ভাইবোনের বিবরণ : মো: আব্দুল মতিন, বয়স ২৭, মোসা: মুরশিদা খাতুন, বয়স ১৯, বিবাহিতা, গ"হিণী, শহীদ মো: মাহফুজুর রহমান

এক নজরে

পুরোনাম

শহীদ মাহফুজুর রহমান

পিতা

মো: আজিজুল হক

মাতা

ময়না খাতুন

জন্ম তারিখ

ডিসেম্বর ৯, ১৯৯৮

ভাই বোন

২ ছেলে ১ মেয়ের মধ্যে ছোট

স্থায়ী ঠিকানা

সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার ফলিয়া গ্রামে।

সাংগঠনিক মান

কর্মী

সর্বশেষ পড়ালেখা

ফলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র।

শাহাদাতের স্থান

আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়ের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হরতাল পালনে পুলিশের গুলিতে শাহাদাত বরণ করেন