শহীদ জহির উদ্দিন মুহাম্মদ লিটন

৩০ নভেম্বর -০০০১ - ১৭ অক্টোবর ১৯৮৯ | ৩৪

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

শাহাদাতের ঘটনা

জহির উদ্দিন মুহাম্মদ লিটন। কত সুন্দর এক নাম! নামের মতোই তেমনি সুন্দর ছিলেন তিনি। মায়াবী চেহারার লিটনকে একবার কেউ দেখলে তার চোখ আর সহজে নামত না। এমন মায়াবী চেহারার লিটনকে পৃথিবীর বুক থেকে সরিয়ে দিল সন্ত্রাসী আওয়ামী বাকশালীরা।

শাহাদাতের ঘটনা
১৫ অক্টোবর ১৯৮৯ ছিল জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত ‘গণজাগরণ’ দিবস। দিবসকে সফল করে তুলতে জামায়াতে ইসলামী দোহাজারিতে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলে অংশ নেয় ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরাও। কিন্তু বরাবরের ন্যায় ইসলামপ্রিয় ছাত্র-জনতার এমন মিছিল বাতিলের তাঁবেদার আওয়ামী-বাকশালীদের পছন্দ হয়নি। মিছিলটি বাজার প্রদক্ষিণ করার এক পর্যায়ে আওয়ামী-বাকশালী ও তথাকথিত ছাত্রসেনার দুষ্কৃতকারীরা হঠাৎ করে মিছিলের ওপর বোমা ও গুলি বর্ষণ শুরু করে।

মুহুর্মুহু গুলি আর বোমার আঘাতে জহির উদ্দিন মুহাম্মদ লিটন, নূরুল ইসলাম, নাসির উদ্দিন, মোহাম্মদ হোসাইন, মুহাম্মদ মহসীন, সুলতান আহমদ, মফিজসহ ৪০ জন আহত হন। ঘটনার আকস্মিকতায় হতবাক হয়ে পড়ে জনতা। আহতদের আর্তচিৎকার আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করে তুলেছিল। শান্তির জনপদে যেন হঠাৎ করেই ছোবল দেয় বিষাক্ত কালনাগিনীরা। গুরুতর আহত ও গুলিবিদ্ধ ৭ ভাইকে তৎক্ষণাৎ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহতদের মধ্যে পথচারী নূরুল ইসলাম ১৬ অক্টোবর দুপুরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আর চিকিৎসাধীন শিবিরকর্মী জহির উদ্দিন মুহাম্মদ লিটন ওইদিন মধ্যরাতে পৃথিবীর মায়া ছিন্ন করে চলে যান পরম প্রিয় প্রভুর সান্নিধ্যে। বোয়ালখালীর খোরশেদ হত্যার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে লিটনও খোরশেদের পথ অনুসরণ করেন।

জানাজা ও দাফন
লিটনের শাহাদাতের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে পুরো চট্টগ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার পরদিন ১৮ অক্টোবর ১৯৮৯ বিকেলে লালদিঘী ময়দানে দুই শহীদের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার পর শহীদের লাশ দাফনের জন্য নিজ বাড়িতে পাঠানো হয়। পথিমধ্যে কেরানীহাট ও সাতকানিয়া হাইস্কুল মাঠেও লিটনের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাঁকে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার উত্তর ডেমসাস্থ পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। শহীদ জহির উদ্দিন মুহাম্মদ লিটন তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন। শাহাদাতের সময় তিনি নাজিরহাট কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

একনজরে শহীদ জহির উদ্দিন মুহাম্মদ লিটন
নাম : জহির উদ্দিন মুহাম্মদ লিটন
মাতার নাম :
পিতার নাম :
স্থায়ী ঠিকানা : ডেমসা, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম
সাংগঠনিক মান : সাথী
সাংগঠনিক শাখা : চট্টগ্রাম জেলা দক্ষিণ
পরিবারের মোট সদস্য : ৭ জন
ভাই-বোন : ৪ ভাই ও ১ বোন
সর্বশেষ পড়াশোনা : এইচএসসি (দ্বিতীয় বর্ষ)
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান : নাজিরহাট কলেজ
আঘাতের ধরন : বোমা ও গুলি
শাহাদাতের তারিখ : ১৭ অক্টোবর, ১৯৮৯
শাহাদাতের স্থান : দোহাজারী স্টেশন
যাদের আঘাতে শহীদ : আওয়ামী লীগ, ছাত্রসেনা

এক নজরে

পুরোনাম

শহীদ জহির উদ্দিন মুহাম্মদ লিটন

জন্ম তারিখ

নভেম্বর ৩০, -০০০১

ভাই বোন

৪ ভাই ১ বোন

স্থায়ী ঠিকানা

ডেমসা, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম

সাংগঠনিক মান

সাথী

সর্বশেষ পড়ালেখা

নাজিরহাট কলেজ

শাহাদাতের স্থান

দোহাজারী স্টেশন