শহীদ আলী হোসেন

৩০ নভেম্বর -০০০১ - ২৯ অক্টোবর ১৯৮৯ | ৩৬

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

শাহাদাতের ঘটনা

শহীদ আলী হোসেনের মৃত্যুর সংবাদ বাকরুদ্ধ করে দিল বালিয়াপাড়া গ্রামবাসীদের। এভাবে তাঁর চলে যাওয়ায় গ্রামবাসীদের হতবাক হওয়া ছাড়া আর কিছু করার ছিল না। সহজ-সরল, অনুপম চরিত্রের অধিকারী আলী হোসেনকে অল্প বয়সে পৃথিবী থেকে বিদায় করে দিল বাকশালী ছাত্রলীগ।

শাহাদাতের প্রেক্ষাপট
স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে সম্মুখে নেতৃত্ব দেয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ১৫ আগস্ট ১৯৮৯ দোহাজারিতে জামায়াতে ইসলামী গণজাগরণ দিবস উপলক্ষে মিছিলের আয়োজন করে। মুয়াজ-মায়াজের উত্তরসূরি আল্লাহর দ্বীনের অকুতোভয় সৈনিক আলী হোসেন সে মিছিলে যোগ দেন। বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে আওয়ামী-বাকশালীচক্র ব্যাপক বোমা হামলা ও গুলি চালায়। এর সাথে যোগ হয় পুলিশি হামলা। পুলিশ শান্তিপূর্ণ মিছিলে অন্যায়ভাবে হামলাকারীদের বিরুদ্ধ কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বিপরীতে মারাত্মকভাবে আহত আলী হোসেনসহ জামায়াত-শিবির কর্মীদের গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। কারাগারে আলী হোসেনের সুষ্ঠু চিকিৎসা করা হয়নি। শিবির নেতৃবৃন্দের জোরালো দাবি সত্ত্বেও তাঁকে কারাগার থেকে হাসপাতালে পাঠানো হয়নি। পরবর্তীতে অবস্থা মারাত্মক আকার ধারণ করলে চট্টগ্রাম সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে তাকে স্থানান্তর করা হয়।

শাহাদাত
হাসপাতালের ডাক্তাররা আলী হোসেনকে বাঁচানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁর জখম ছিল অত্যন্ত গুরুতর। তাছাড়া চিকিৎসা করাতে বেশ বিলম্বও করা হয় পুলিশ প্রশাসনের একগুঁয়েমির কারণে। ক্রমশ মৃত্যুর পথের দিকে অগ্রসর হন আলী হোসেন। কয়েক দিন মৃত্যু যন্ত্রণায় কষ্ট পাওয়ার পর ২৯ অক্টোবর ১৯৮৯ সালে বিকেল ৪টায় সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে মহান আল্লাহর দরবারে হাজির হন তিনি।

জানাজা ও দাফন
আলী হোসেনের শাহাদাতের সংবাদে সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে আসে। পরদিন ৩০ অক্টোবর বিকেলে লালদীঘি ময়দানে তাঁর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে শহীদের লাশ চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পশ্চিম জলদিস্থ বালিয়াপাড়া গ্রামে পাঠানো হয়। লাশ গ্রামে পৌঁছলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। সেখানে পুনরায় নামাজে জানাজার পর আলী হোসেনকে দাফন করা হয়।
আলী হোসেন আর কখনো আমাদের মাঝে আসবেন না। কেবল তাঁর আত্মত্যাগের কথাই বেঁচে থাকবে। সে প্রেরণার সফল বাস্তবায়নে আলী হোসেনের দেখিয়ে যাওয়া পথে সংগ্রাম করা উচিত সকলকে।

একনজরে শহীদ আলী হোসেন
নাম : আলী হোসেন
সাংগঠনিক মান : সাথী
ভাই-বোন : ৬ ভাই, ৩ বোন
স্থায়ী ঠিকানা : বালিয়াপাড়া, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম
আহত হওয়ার স্থান : দোহাজারী
আহত হওয়ার তারিখ : ১৪ আগস্ট, ১৯৮৯
যাদের আঘাতে শহীদ : ছাত্রলীগ
শহীদ হওয়ার তারিখ : ২৯ অক্টোবর, ১৯৮৯

এক নজরে

পুরোনাম

শহীদ আলী হোসেন

জন্ম তারিখ

নভেম্বর ৩০, -০০০১

ভাই বোন

৬ ভাই ৩ বোন

স্থায়ী ঠিকানা

বালিয়াপাড়া, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম

সাংগঠনিক মান

সাথী

সর্বশেষ পড়ালেখা

আলিম ২য় বর্ষ, কেরানীহাট মাদরাসা

শাহাদাতের স্থান

দোহাজারী