গঠনমূলক কাজের মাধ্যমে ছাত্রশিবির জাতির প্রত্যাশার প্রতীকে পরিণত হয়েছে
৪১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে সপ্তাহ ব্যাপী কর্মসূচি পালন করছে ছাত্রশিবির
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, সমৃদ্ধ জাতি গঠনে সৎ দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব তৈরীর লক্ষ্য নিয়ে ছাত্রশিবির যাত্রা শুরু করেছিল। এ পথচলা আজ বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এ অগ্রযাত্রাকে দমিয়ে দিতে নানা মহল থেকে সর্বোচ্চ ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। কিন্তু তাদের কোন চক্রান্তই সফল হয়নি। গঠনমূলক কাজের মাধ্যমে ছাত্রশিবির জাতির প্রত্যাশার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
তিনি আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবিরের মাসিক সেক্রেটারিয়েট বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সেক্রেটারি জেনারেল মোবারক হোসাইনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় দাওয়াহ সম্পাদক শাহ মো: মাহফুজুল হক, সাহিত্য সম্পাদক সালাউদ্দিন আইয়ুবী সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
শিবির সভাপতি বলেন, ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠা ছিল সময়ের এক অনিবার্য দাবি। দেশের আর্থ-সামাজিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিকসহ সামগ্রিক প্রেক্ষাপট এই সংগঠনের আত্মপ্রকাশকে অনিবার্য করে তোলে। নীতিহীন ছাত্ররাজনীতির করাল গ্রাসে যখন শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে, ছাত্রসমাজকে যখন পরিকল্পিত বিপথগামী করা হচ্ছিল, ইসলামী মূল্যবোধ উৎখাত করতে খোদাদ্রোহী শক্তি বিস্তার করছিল বিষাক্ত থাবা ঠিক তখনি ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কার্যক্রম শুরু করেছিল ছাত্রশিবিরের। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ছাত্রশিবির ছাত্ররাজনীতিতে এক নতুন ধারা সৃষ্টি করে। গতানুগতিক ছাত্ররাজনীতির বাইরে গিয়ে ছাত্রশিবির ছাত্রদের মেধা ও মননের বিকাশে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে এ কাফেলা। দেশ ও ইসলাম রক্ষায় অবিচলতা এবং গঠনমূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে জাতিকে আশান্বিত করতে পেরেছে এ সংগঠন। তবে ইসলাম ও দেশপ্রেমিক জনতার কাছে প্রত্যাশার প্রতিক হলেও আদর্শহীনদের কাছে ছাত্রশিবির চক্ষুশুল। একটি ছাত্রসংগঠন হিসেবে ছাত্রশিবিরের উপর যে সর্বগ্রাসী জুলুম নির্যাতন চালানো হয়েছে তা নজীর বিহীন। দীর্ঘ পথ চলার প্রতিটি বাকে বাকে আমরা খুন, গুম, নির্যাতন, ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার, তথ্য সন্ত্রাসের শিকার হয়ে চলেছি। রাষ্ট্রশক্তি এ সংগঠনকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য নির্মমতার সর্বোচ্চ নিকৃষ্ট নজির স্থাপন করেছে। কিন্তু সকল জুলুম ষড়যন্ত্রকে ছাত্রশিবির ধৈর্য্য, বিচক্ষণতা ও গঠনমূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে মোকাবেলা করে আসছে। বাতিলের অপকর্ম আমাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্যে থেকে চুল পরিমান বিচ্যুত করতে পারেনি। বরং পথ চলাকে আরও শানিত করেছে। ছাত্রশিবিরের গঠনমূলক কর্মকান্ডের প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী এদেশের ছাত্রজনতা। ফলে ইসলাম বিদ্ধেষী শক্তি রাষ্ট্র যন্ত্র ব্যবহার করে যতই আমাদের নিয়ে ষড়যন্ত্র করুক না কেন জনণের কাছে তা গ্রহণ যোগ্যতা পায়নি। বরং তাদের প্রতিটি আঘাত জনগণের কাছে ছাত্রশিবিরের গ্রহণযোগ্যতাকে বৃদ্ধি করেছে।
তিনি বলেন, গত ৪১ বছর সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের নজীর স্থাপন করেই ছাত্রশিবির তার লক্ষ্য পানে এগিয়ে চলেছে। ইসলামের সুমহান আদর্শের আলোকে নেতৃত্ব গঠনের মাধ্যমে সমৃদ্ধ জাতি গঠনে ছাত্রশিবিরের গঠনমূলক আদর্শীক পথচলা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। আমরা অন্যায় অবিচারের কাছে কখনোই মাথা করব না বরং প্রতিটি প্রতিকূলতাকে সর্বোচ্চ ধৈর্য্য ও সাহসীকতা দিয়ে মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
সপ্তাহ ব্যাপী কর্মসূচি পালন করছে ছাত্রশিবির
৪১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ই ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপি বর্ণাঢ্য কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ছাত্রশিবির। ইতিমধ্যে কর্মসূচি পালন শুরু হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, সারা দেশে শাখা ও থানা পর্যায়ে বর্ণাঢ্য র্যালী, আলোচনা সভা, সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান ও দেয়ালিকা প্রকাশ;রচনা, কুইজ, বিতর্ক ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা; মেধাবী ও গরীব অসহায় ছাত্রদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ; অনাথ ও দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ; কৃতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা বৃত্তি প্রদান, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও নববর্ষের প্রকাশনা উপহার, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান, ফ্রি চিকিৎসা ক্যাম্প, ব্লাড গ্রুপিং ও সেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি।
শিবির সভাপতি কর্মসূচি সফল করার জন্য সর্বস্তরের নেতা কর্মীর প্রতি আহবান জানিয়েছে
সংশ্লিষ্ট
- কারাগারে আল্লামা সাঈদীকে যেমন দেখেছি
- এ আকাশ মেঘে ঢাকা রবেনা
- মুমিনের কোনো দিন পরাজয় নেই
- চারিত্রিক দৃঢ়তা বয়ে আনে সফলতা
- পরিচ্ছন্ন থাকতে চাই শুধু সদিচ্ছা
- পরকালীন সফলতাই প্রকৃত সফলতা
- আল্লাহর প্রতিশ্রুতি পূরণে মুমিনের করণীয়
- রাষ্ট্র বা সমাজ পরিচালনায় প্রয়োজন নৈতিকতাসম্পন্ন, দক্ষ ও পেশাগত নেতৃত্ব
- চেতনায় ২৮ শে অক্টোবর
- আধুনিক ব্যবস্থাপনায় দাওয়াতি কাজের কৌশল