বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্রসংঘর্ষের ঘটনায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের উদ্বেগ প্রকাশ
বিগত কয়েকদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম এক যৌথ বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানান। এ সময় শিক্ষার্থীদেরকে তৃতীয় কোনো পক্ষের ইন্ধন ও উসকানির ফাঁদে পা দিয়ে ষড়যন্ত্রের শিকার না হওয়ার জন্য আহ্বান জানান।
সম্প্রতি ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঐ কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথে সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এতে যোগ দেয় অন্তত ২০টির অধিক কলেজের শিক্ষার্থী। সর্বশেষ গত রবিবার সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও সোমবার ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এ ঘটনায় অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হয়। এদিকে সোমবার বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ অবস্থায় বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সকল পক্ষকে সংঘর্ষ পরিহার করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, “সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে যে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চলছে। ঢাকার বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ এরই অংশ, যা পতিত স্বৈরাচারের হাতকেই শক্তিশালী করছে বলে আমরা মনে করি।”
বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে নেতৃবৃন্দ বলেন, “শান্তিপূর্ণ শিক্ষাঙ্গনকে কারা পরিকল্পিতভাবে অস্থিতিশীল করে তুলছে, কাদের ইন্ধন ও ক্ষমতার আকাঙ্ক্ষায় নির্মম বলি হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ, তা দ্রুত খুঁজে বের করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা আমরা প্রত্যাশা করছি। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনার বিচার দাবি করছি। সেই সাথে দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং জাতীয় স্বার্থে শিক্ষার্থীদের অবদান ইতিহাসে চিরস্মরণীয়। ২৪-এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানসহ দেশের প্রতিটি সংকটময় মুহূর্তে শিক্ষার্থীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। ফলে দেশ গঠনে শিক্ষার্থীদের প্রতি গণআকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে তৃতীয় কোনো পক্ষ শিক্ষার্থীদের ঐক্য ও সম্প্রীতি বিনষ্ট করার গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিশেষ উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
নেতৃবৃন্দ সকল প্রকার দ্বন্দ্ব ও সংঘাত পরিহার করে আলোচনার মাধ্যমে মতানৈক্যের সমাধান করে জুলাই বিপ্লবের চেতনায় নতুন বাংলাদেশ গঠনে শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।