মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫

ইসলামী ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা

ইসলামী ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা

দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর অবারিত আনন্দের বার্তা নিয়ে আমাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এই ঈদকে আরও উৎসবমুখর ও অর্থবহ উপায়ে পালন করার আহ্বান জানিয়ে দেশে ও প্রবাসে অবস্থানরত সবাইকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম আজ (৩০ মার্চ) এক শুভেচ্ছা বার্তায় বলেন, “আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়ার অফুরন্ত কল্যাণ বিলিয়ে, পবিত্রতার বন্ধনে অবারিত খুশির বার্তা নিয়ে সমাগত হয়েছে ঈদ। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে জানাই ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা—ঈদ মোবারক।”

নেতৃবৃন্দ বলেন, "আমরা এ বছর মিশ্র অনুভূতি নিয়ে ঈদ উদ্‌যাপন করতে যাচ্ছি। প্রায় দেড়যুগ ধরে আমাদের বুকের ওপর চেপে বসা জগদ্দল পাথর সরিয়ে আজ আমরা স্বাধীনভাবে ঈদ পালন করতে পারছি। যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা নাগরিক অধিকার ফিরে পেয়েছি, নির্ভয়ে আমদের মতামত প্রকাশ করতে পারছি, সেই জুলাই শহীদ ও গাজীদের জন্য মহান আল্লাহর কাছে উত্তম প্রতিদান কামনা করছি। আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের দ্রুত আরোগ্য লাভের দোয়া করছি।

আজ মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। যেই মুহূর্তে আমরা ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, ঠিক সেই সময় বিশ্বের নানা প্রান্তে আমাদের মুসলিম ভাই-বোনদের ওপর চলছে নির্মম হত্যাযজ্ঞ, দুঃসহ নির্যাতন আর অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টের অধ্যায়।
বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ গণহত্যার শিকার হচ্ছে ফিলিস্তিনের গাজার নিরীহ মুসলিম জনগণ। বাদ যাচ্ছে না নিষ্পাপ শিশুরাও। যুদ্ধ বিরতি লঙ্ঘন করে আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের তোয়াক্কা না করে উদ্বাস্তু অবস্থায় থাকা গাজাবাসীদের ওপর বর্বর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে আধিপত্যবাদী অবৈধ দখলদার সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইল। শুধু ফিলিস্তিনেই নয়, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের নির্ভিঘ্নে ঈদ উদ্‌যাপনে শঙ্কার সৃষ্টি  হয়েছে। আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করি, তিনি যেন জালিমদের হাত দুর্বল এবং মজলুমদের হাত শক্তিশালী করে দেন।”

নেতৃবৃন্দ সংগঠনের সকল স্তরের জনশক্তিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আমরা জুলাইয়ে স্বৈরাচারের কবল থেকে মুক্তি লাভ করেছি, তবে এই পথ রচিত হয়েছে অসংখ্য ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে। স্বাধীন বাংলাদেশ ফিরে পাওয়ার সংগ্রামে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন, সেই গৌরবময় জুলাই শহীদদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। ঈদের এই আনন্দঘন মুহূর্তে শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানো, তাদের দুঃখ-বেদনা ভাগাভাগি করে নেওয়া আমাদের কর্তব্য। এ ছাড়াও, আমাদের নিজেদের বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের প্রতিও দায়িত্ব রয়েছে। ঈদের আনন্দ তাদের সঙ্গে ভাগাভাগি করার মাধ্যমে আমরা তাদের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে পারি। এই জন্য কেন্দ্র থেকে শুরু করে সকল স্তরের জনশক্তিকে নিজ নিজ এলাকায় পরিবার-পরিজন, শহীদ পরিবার ও আহত গাজীদের সাথে ঈদ উদ্‌যাপনের আহ্বান জানাচ্ছি।"

নেতৃবৃন্দ বলেন, “ঈদ ধনী-গরিব, উঁচু-নিচু নির্বিশেষে সকলের মাঝে সমতার বার্তা নিয়ে আসে। এ আনন্দ ও ভ্রাতৃত্বের আবেদন সমাজের প্রতিটি মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। ঈদ কেবল আনন্দের নয়, এটি ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করার এক অনন্য সুযোগ। আমরা যদি সব বিভেদ ভুলে গিয়ে মানুষে মানুষের মধ্যে সাম্য, ভালোবাসা ও সৌহার্দ্যের সেতুবন্ধন গড়ে তুলি, তবেই ঈদের প্রকৃত উদ্দেশ্য সফল হবে।"

পরিশেষে, পতিত স্বৈরাচার যেন আমাদের ঈদের আনন্দকে বেদনায় পরিণত করতে না পারে, সেজন্য দেশবাসীকে সকল প্রকার ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সজাগ ও সতর্ক থাকার জন্য নেতৃবৃন্দ সবার প্রতি বিশেষভাবে আহ্বান জানিয়েছেন।