এক নজরে
শহীদ মনোয়ার জাওয়াত সিয়াম
মজিবুর রহমান
ফারজানা আক্তার
অক্টোবর ২৮, ১৯৯৮
চার ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয়
চাঁদপুর জেলার সদর থানার পৌরসভার ১১নং ওয়ার্ডের ট্রাক রোড
কর্মী
আল-আমিন মডেল মাদ্র্রাসার জেডিসি ফলপ্রার্থী ছিলেন
চাঁদপুর সদর হাসপাতাল
শহীদের পরিচিতি
পিতা-মাতার ৪ (চার) সন্তানের মধ্যে ২য় সন্তান শহীদ মুনাওয়ার যাওয়াত (সিয়াম) । ৪ ভাই এর মধ্যে তিনি দ্বিতীয় ছিলেন। তিনি ১৯৯৮ সালের ২৮ ইং অক্টোবর নিজ বাড়ীতে জন্ম গ্রহণ করেন। তার শাহাদাতের সময় বয়স ছিল ১৪ বছর। তিনি জেডিসি-২০১৩ এর ফলপ্রার্থী।
যেভাবে তিনি আল্লাহর ডাকে চলে গেলেন
ঘটনাস্থল শহীদদের নিজ বাড়ী থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার। মিছিলের খবর পেয়ে শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে শত শত লোক দলবেধে শতস্ফুর্ত ভাবে ঘটানাস্থলে উপস্থিত হয়। তেমনি খবর পেয়ে শহীদ সিয়াম ভাই এবং বন্ধু ফয়সাল বাইসাইকেলে করে সকাল ৭.৩০ মিঃ জেলা বিএনপি অফিস জি.এম সেনগুপ্ত রোডে যায়। সেখানে অবরোধ কর্মসূচির মিছিলে অংশ গ্রহন করে। ৩রা ডিসেম্বর‘১৩ সকাল ১০.৩৫ মিনিটে গুলিবিদ্ধ হবার পর শহীদের সাথীরা ভ্যানে করে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা শহীদ সিয়াম ভাইকে মৃত ঘোষনা করে। সিয়াম ভাইয়ের শাহাদাতের খবর এলাকাবাসী বিভিন্ন লোকজন তাৎক্ষনিক কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। ৩রা ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিটে সিয়াম ভাই যে মাদরাসায় পড়তেন অথাৎ আল আমিন মডেল মাদরাসায় হাজারো কান্নারত মানুষের সামনে শহীদ ভাইয়ের জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। মাদরাসার সিয়াম ভাইয়ের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
শাহাদাতের পূর্বের বিভিন্ন ঘটনা
একজন মাদ্রাসা পড়-য়া ছাত্র। সবেমাত্র জেডিসি-২০১৩ইং পরীক্ষা শেষ হলো। পিতামাতসহ পরিবারের সবাই ফলাফলের জন্য অপােরত। যেদিন সিয়াম ভাই ঘটনাস্থলে যাবেন সেদিন সকালে তার ছোট ভাইকে আদর করে মা উদ্দেশ্য করে বলেন, মা আমি কিন্তু ছোট ভাই (আঃ মুহাইমিন) কে মাদরাসায় পড়াবো। আসলে শাহাদাতের অমিয় সুধা তারাই পান করে যাদের থাকে অনড় মনোবল আর ঈমানের দ্বীপ্তময় প্রান। তার মাঝে ছিলনা মোটও ঘাটতি। পরীক্ষা শেষ হয়েছে স্বাভাবিক ভাবে সবারই বেড়াতে যাওয়ার কথা। আর সকলেই চলে গেল কিন্তু রয়ে এক ফুটন্ত গোলাপ সিয়াম। তার কথা ছিল যদি আমি চলে যাই তবে এ আন্দোলনে মাঠে থাকবে কে ? ঐদিন সিয়াম ভাই এবং তার বন্ধু ঘটনাস্থলে যাচ্ছিল। সিয়াম ভাই ফয়সাল কে উদ্দেশ্য করে বলে পুলিশ আমাদের শ্লোগান দিতে দেয় না তবে কেউ যদি অন্য কোন শ্লোগান ধরে আমি সে শ্লোগান ধরবো না আমি শুধু নারায়ে তাকবীরের শ্লোগানই ধরবো।
এ হলো সেই আলোকিত বালক সিয়াম শহীদ হওয়ার কিছু সময় আগেকার কথা। খেলা দুলায় খুব পারদর্শী হওয়া সত্ত্বেও কখনো খেলা রেখেই দ্বীনের কাজে যেতো সে। মাদরাসার শিকদের সাথেও ছিল তার গভীর সম্পর্ক এবং শিক্ষদের যে কোন কাজে সাহায্য সহোযগিতায় সিয়াম ভাইয়ের অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য। যার পরিনতি হয়েছিল এই যে, সিয়ামের মৃত্যুর সংবাদ শুনে তার সহপাঠির চেয়ে শিকরা বেশি মর্মাহত ও ব্যথিত হয়েছেন।
সামগ্রীক ঘটনার বিবরণ
৩রা ডিসেম্বর‘২০১৩ ইং বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের অবরোধ কর্মসূচিতে তিনি ও তার বন্ধু ফয়সাল সকাল ৭.৩০ মিঃ বাইসাইকেল যোগে ১৮ দলের মিছিল পূর্বে সমাবেশে যোগ দেন। পরে কয়েক ঘন্টাপর নেতৃবৃন্দ মিছিল শুরু করে। কিছুদূর গিয়ে মিছিলটি আবার পুনরায় নির্দিষ্ট স্থানে আসার জন্য সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। কোন কারন ছাড়াই আওয়ামী পুলিশলীগ পেছন দিক দিয়ে বেপরোয়া ভাবে গুলি চালাতে শুরু করে। মনে হচ্ছে যেন সন্ত্রাসের সাথে সংঘর্ষ হচ্ছে। হঠাৎ করেই ঝরে পড়ে একটি ফুল যার নাম সিয়াম
শহীদের আপন জনদের কথা
শহীদের মা যিনি নিজকে একজন গর্বিত শহীদের মা হিসেবে মনে করেন। তিনি আল্লাহর কাছে তার সন্তানের বিচার কামনা করেন এবং জান্নাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা কামনা করেন। শহীদের গর্বিত মা তার কলিজার টুকরাকে হারিয়ে মর্মাহত। তিনি বলেন আর কেউ হয়তো আমাকে মধুর কন্ঠে বলবে না মা উঠ নামাজের সময় হয়েছে। শহীদের পিতা তার পুত্রকে হারিয়ে প্রায় অজ্ঞান হয়ে যান। তার আত্বচিৎকার আর কান্নায় আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠে। তিনি বলেন, আমার মতো যেন আর কাউকে সন্তান হারা না হয় সে জন্য আল্লাহর নিকট দোয় করি। তিনি বলেন, পিতা হয়ে সন্তানের কফিন কাদে নেয়া অনেক কষ্টের।
শহীদ মনোয়ার জাওয়াত সিয়াম
মজিবুর রহমান
ফারজানা আক্তার
অক্টোবর ২৮, ১৯৯৮
চার ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয়
চাঁদপুর জেলার সদর থানার পৌরসভার ১১নং ওয়ার্ডের ট্রাক রোড
কর্মী
আল-আমিন মডেল মাদ্র্রাসার জেডিসি ফলপ্রার্থী ছিলেন
চাঁদপুর সদর হাসপাতাল