সংগ্রহশালা
সম্পর্কের বন্ধন ও প্রতিশ্রুতি রক্ষায় মুমিনের সচেতনতা
অনুবাদ: আর তাদের কর্মপদ্ধতি এমন হয় যে, তারা আল্লাহকে প্রদত্ত নিজেদের অঙ্গীকার পালন করে এবং তাকে প্রদানকৃত প্রতিশ্রুতি মজবুত করে বাঁধার পর ভেঙে ফেলে না। তাদের নীতি হয়, আল্লাহ যেসব সম্পর্ক ও বন্ধন অক্ষুন্ন রাখার হুকুম দিয়েছেন সেগুলো তারা অক্ষুন্ন রাখে, নিজেদের রবকে ভয় করে এবং তাদের থেকে কড়া হিসাব না নেওয়া হয় এই ভয়ে সন্ত্রস্ত থাকে। তাদের অবস্থা হয় এই যে, নিজেদের রবের সন্তুষ্টির জন্য তারা সবর করে, নামাজ কায়েম করে, আমার দেওয়া রিজিক থেকে প্রকাশ্যে ও গোপনে খরচ করে এবং ভালো দিয়ে মন্দ দূরীভূত করে। আখেরাতের গৃহ হচ্ছে তাদের জন্যই। অর্থাৎ এমন সব বাগান যা হবে তাদের চিরস্থায়ী আবাস। (সূরা রাদ : ২০-২২)
"শিরকের ভয়াবহ পরিণতি এবং শয়তানের ষড়যন্ত্র"
১১৬. যারা আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করে, নিশ্চয়ই তিনি তাদেরকে ক্ষমা করবেন না। তবে এ ছাড়া যাকে চান ক্ষমা করেন। আর যে আল্লাহর সাথে শরিক করে নিঃসন্দেহে সে গভীর পথভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত হয়েছে। ১১৭. আল্লাহ ছাড়া তারা শুধু নারীমূর্তি এবং অবাধ্য শয়তানকে ডাকে (উপাসনা করে)। ১১৮. আল্লাহ তাকে (শয়তানকে) লানত করেছেন আর সে বলেছে, আমি অবশ্যই আপনার বান্দাদের এক নির্দিষ্ট অংশকে অনুসারী হিসেবে গ্রহণ করব। (সূরা নিসা : ১১৬-১১৮)
মহান রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণায় আমাদের তৎপরতা (সূরা আল-মুদ্দাস্সির : ১-৭)
১. হে কম্বল মুড়ি দিয়ে শায়িত ব্যক্তি ২. উঠুন এবং সতর্ক করুন ৩. এবং আপনার রবের শ্রেষ্ঠত্ব বা মহত্ত্ব ঘোষণা করুন ৪. আর আপনার পোশাক পবিত্র রাখুন ৫. প্রতিমা থেকে দূরে থাকুন ৬. অধিক প্রাপ্তির আশায় কারো প্রতি অনুগ্রহ করবেন না ৭. এবং আপনার রবের জন্য ধৈর্য অবলম্বন করুন। (সূরা আল-মুদ্দাস্সির : ১-৭)
দ্বীন কায়েমের আন্দোলন থেমে যাওয়ার নয়
সরল অনুবাদ : “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের মধ্য থেকে কেউ যদি দ্বীন থেকে ফিরে যায় (তাহলে ফিরে যাক, আল্লাহ এমনিতর বহু লোক সৃষ্টি করে দেবেন, যাদেরকে আল্লাহ ভালোবাসেন এবং তারা আল্লাহকে ভালোবাসবে, যারা মুমিনদের ব্যাপারে কোমল ও কাফেরদের ব্যাপারে কঠোর হবে, যারা আল্লাহর পথে প্রচেষ্টা ও সাধনা করে যাবে এবং কোনো নিন্দুকের নিন্দার ভয় করবে না। এটি আল্লাহর অনুগ্রহ, যাকে চান তাকে দান করেন। আল্লাহ ব্যাপক উপায় উপকরণের অধিকারী এবং তিনি সবকিছু জানেন। আসলে তোমাদের বন্ধু হচ্ছেন একমাত্র আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং সেই ঈমানদাররা, যারা নামাজ কায়েম করে, জাকাত দেয় অথচ তারা রুকু অবস্থায় থাকে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে, তাঁর রাসূলকে ও মুমিনদেরকে নিজের বন্ধুরূপে গ্রহণ করে তার জেনে রাখা দরকার, আল্লাহর দলই বিজয়ী হবে।” (সূরা মায়েদাহ, আয়াত : ৫৪-৫৬)
তওবা : মহান আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার অনন্য সোপান
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহর কাছে তওবা করো, প্রকৃত তওবা। আশা করা যায়, আল্লাহ তোমাদের দোষত্রুটিসমূহ দূর করে দিবেন এবং এমন জান্নাতে প্রবেশ করবেন যারা পাদদেশ দিয়ে ঝরনাসমূহ প্রবাহিত৷ সেদিন আল্লাহ নবী এবং নবীর সঙ্গী ঈমানদারদের লাঞ্ছিত করবেন না৷ তাদের ‘নূর’ তাদের সামনে ও ডান দিকে দ্রুত অগ্রসর হতে থাকবে এবং তারা বলতে থাকবে, হে আমাদের রব, আমাদের জন্য আমাদের ‘নূর’ পূর্ণাঙ্গ করে দাও ও আমাদেরকে ক্ষমা করে দাও৷ নিশ্চয় তুমি সব কিছুর ওপর সর্বশক্তিমান ৷ (সূরা আত-তাহরিম : ৮)
রিজিকের ফয়সালা একমাত্র আল্লাহর হাতেই সীমাবদ্ধ
“দুনিয়ায় বিচরণকারী এমন কোনো প্রাণী নেই, যার রিজিকের দায়িত্ব আল্লাহর ওপর নেই। তাদের স্থায়ী এবং অস্থায়ী অবস্থানস্থল সম্পর্কে তিনি অবহিত। সবকিছুই একটি সুস্পষ্ট কিতাবে লেখা আছে।” (সূরা হুদ : ৬)
সিয়াম সাধনা তাকওয়ার প্রশিক্ষণ
“হে মুমিনগণ! তোমাদের ওপর সিয়ামের ফরমান অবতীর্ণ হয়েছে যা তোমাদের পূর্ববর্তী জাতির ওপরও নাজিল হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়ার গুণাবলি অর্জন করতে পার।
অগ্নি পরীক্ষার পরেই আসে আল্লাহর পুরষ্কার
১৫৩. ‘ওহে তোমরা যারা ঈমান এনেছো, সবর ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবর অবলম্বনকারীদের সঙ্গে আছেন। ১৫৪. আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়, তাদেরকে তোমরা ‘মৃত’ বলো না। তারা তো আসলে জীবিত। কিন্তু তোমরা তা অনুধাবন করতে পার না। ১৫৫. এবং আমি অবশ্যই তোমাদেরকে ভীতিপ্রদ পরিস্থিতি, ক্ষুধা-অনাহার এবং অর্থ-সম্পদ, জান ও আয়-উপার্জনের লোকসান ঘটিয়ে পরীক্ষা করবো। এমতাবস্থায় যারা সবর অবলম্বন করবে, তাদেরকে সুসংবাদ দাও।’
আল্লাহ অবশ্যই অফুরন্ত পুরস্কার দিবেন
১৬০) যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে হাজির হবে সৎকাজ নিয়ে তার জন্য রয়েছে দশগুণ প্রতিফল আর যে ব্যক্তি অসৎকাজ নিয়ে আসবে সে ততটুকু প্রতিফল পাবে যতটুকু অপরাধ সে করেছে এবং কারো প্রতি জুলুম করা হবে না৷ ১৬১) হে মুহাম্মাদ! বলো, আমার রব নিশ্চিতভাবেই আমাকে সোজা পথ দেখিয়ে দিয়েছেন৷ একদম সঠিক নির্ভুল দীন, যার মধ্যে কোনো বক্রতা নেই, ইবরাহিমের পদ্ধতি, যাকে সে একাগ্রচিত্তে একমুখী হয়ে গ্রহণ করেছিল এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না৷ ১৬২) বলো, আমার নামাজ, আমার ইবাদাতের সমস্ত অনুষ্ঠান, আমার জীবন ও মৃত্যু সবকিছু আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের জন্য। - সূরা আন'আম
জান্নাতে যাওয়ার সোজা পথঃ আল্লাহর রাহে জীবন দান
অনুবাদ ৭৪. পরকালের বিনিময়ে যেসব লোক দুনিয়ার জীবনকে বিক্রি করে দিয়েছে তাদের উচিত আল্লাহর পথে লড়াই করা। কারণ যে আল্লাহর পথে লড়াই করবে এবং জীবন বিলিয়ে দেবে (মারা যাবে) অথবা বিজয়ী হবে তাকে অচিরেই আমি বিরাট পুরস্কার দেবো। ৭৫. তোমাদের কী হয়েছে যে তোমরা আল্লাহর পথে অসহায় নর-নারী ও শিশুদের জন্য লড়বে না যারা দুর্বলতার কারণে নির্যাতিত হচ্ছে এবং ফরিয়াদ করছে, হে আমাদের রব! আমাদেরকে এই জালিমের জনপদ থেকে বের করে নাও এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য কোনো অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাঠিয়ে দাও। ৭৬. যারা ঈমানের পথ অবলম্বন করেছে তারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে আর যারা কুফরির পথ অবলম্বন করে তারা তাগুতের পথে লড়াই করে কাজেই তোমরা শয়তানের চেলা-চামুণ্ডাদের সাথে লড়াই কর। নিশ্চয় শয়তানের কৌশল খুবই দুর্বল।